Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সুন্দরবনের কাঁকড়া যাচ্ছে বিশ্ব বাজারে

| প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে : সুন্দরবনের কাঁকড়া এখন যাচ্ছে বিশ্ব বাজারে। আর্ন্তজাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কাঁকড়া চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন সাতক্ষীরাসহ সুন্দরবনের আশপাশের চাষিরা। চাষিরা তাদের পুকুর, ডোবা ও খালে ব্যাপক হারে কাঁকড়া চাষ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কাঁকড়া চাষে ব্যাপক সফলতাও পেয়েছেন তারা। সুন্দরবনের  বন কর্মকর্তা ও কাঁকড়া চাষিদের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি বছর আর্ন্তজাতিক বাজারে কাঁকড়ার চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি দামও বাড়ছে। মূলতঃ আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত কাঁকড়ার মৌসুম। এসময় সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার সহস্রাধিক জেলে বনবিভাগ থেকে নির্র্দিষ্ট রাজস্বের বিনিময়ে পারমিট সংগ্রহ করে সুন্দরবনে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে যান। গহীন সুন্দরবনসহ সাগর মোহনা থেকে জেলেরা কাঁকড়া সংগ্রহ করেন। এছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও উপকূলীয় মংলা, খুলনা, বাগেরহাটের দেড় লক্ষাধিক হেক্টর চিংড়ি ঘেরে প্রাকৃতিকভাবেই কাঁকড়া উৎপন্ন হয়। সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের এক বন কর্মকর্তা বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন উপক‚লীয় এলাকায় ১১ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাইলা, হাব্বা, সিলা ও সেটরা কাঁকড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে বলে জানা গেছে।’ সাতক্ষীরার শ্যামগরের এক কাঁকড়া ব্যবসায়ী বলেন, ‘রফতানিতে চীন, মায়ানমার, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, মালেয়শিয়া, শ্রীলংকা, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকংসহ বিভিন্ন দেশে সুন্দরবনের কাঁকড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’ এছাড়া, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও কাঁকড়ার চাহিদা রয়েছে। তাছাড়াও, এ অঞ্চলে ১২ মাস কাঁকড়ার চাহিদা রয়েছে।  কাঁকড়া চাষি আরো জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন সাগর ও নদীগুলোতে যে পরিমাণ কাঁকড়া ধরা পড়ে তা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া রেনু পোনা থেকে অনেক বেশি। চিংড়ি চাষের জন্য প্রচুর জমি ও অর্থের প্রয়োজন হলেও কাঁকড়া চাষের জন্য জমি ও অর্থ দু’টিই কম লাগে। ফলে অনেকেই কাঁকড়া চাষে ঝুঁকছেন। তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতা পেলে চাষীরা আরো বেশি কাঁকড়া চাষে আগ্রহ দেখাবে। তাতে করে রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭-৭৮ অর্থ বছরে বিদেশে প্রথম কাঁকড়া রফতানি শুরু হয়। এরপর প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৮২-৮৩ অর্থ বছরে আবারো বিদেশে কাঁকড়া রফতানি শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিশ্ব বাজারে এর চাহিদা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি বাড়তে থাকে এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রার আয়। সূত্র মতে, ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে কাকড়া রফতানি হয় ১২৫ কোটি ২২ লাখ ৩৯ হাজার টাকার। ১৯৯৯-২০০০ অর্থ বছরে রফতানি করা হয় ১৪১ কোটি ৬৬ লাখ ৬ হাজার টাকার। ২০০১-০২ অর্থ বছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৫৩০ কোটি টাকা। ২০০২-০৩ অর্থ বছরে কাঁকড়া রফতানি হয়েছে ২ দশমিক ৫২ মিলিয়ন ডলারের ৬৩০ মেট্রিক টন, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে আয় গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৬ মিলিয়ন ডলারে। এভাবে পর্যায়ক্রমে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে এর আয় পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেড়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবন

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ