Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ-পশ্চিমের মাঠ রাজনীতিতে বিরাজ করছে নির্বাচনী আবহ

| প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : দক্ষিণ-পশ্চিমের চারিদিকে জোরেশোরে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আলোচনা। গ্রামে মাঠে ঘাটে শহর বন্দর চায়ের আড্ডায় সমানতালে চলছে এবার কে কোন আসনে প্রার্থী হচ্ছেন, ভোট রাজনীতিতে কার কি অবস্থান, কোথায় কোথায় পুরাতন প্রার্থী থাকছে, কোথায় আসছে নতুন মুখ, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কি হবে, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কি পরিস্থিতি হবে, এতে বিরোধীদল নির্বাচনে যাবে কি যাবে না-এসব নিয়ে তুমুল আলোচনা. তর্কবিতর্ক চলছে। এতে বলা যায় মাঠ রাজনীতিতে বিরাজ করছে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আবহ।
যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও কুষ্টিয়াসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকল রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বর্তমানে আগের চেয়ে অতিমাত্রায় চাঙ্গা। সবার দলীয় কর্মকান্ডও ক্রমেই নির্বাচনকেন্দ্রিক হচ্ছে। আওয়ামী লীগ তৃণমূল নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের অতিমাত্রায় চাঙ্গা হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একইভাবে সামনের নির্বাচনী প্রস্ততি নিতে বলেছে। কেন্দ্র থেকে যশোরসহ বিভিন্নস্থানের এমপি দলের সভাপতি ও সেক্রেটারি ও দায়িত্বশীলদের ডেকে পাঠিয়ে কোন্দল না মিটালে দল কঠোর থেকে কঠোরতর হবে বলেও হুশিয়ার করে দিয়েছে। তারপরেও সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। দীর্ঘদিন সরকারী দল আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালন ও টুকটাক সভা-সমাবেশ করেছে এই অঞ্চলের বিভিন্নস্থানে। অন্যান্য দলের কর্মসূচীও চলেছে ঢিলেঢালা। বিশেষ করে প্রধান বিরোধীদল বিএনপির রাজনীতিতে কার্যত অনির্দ্দিষ্টকালের ছুটি পালিত হয়েছে। দলীয় সুত্রমতে, নানা কারণে দলীয় নেতা কর্মীদের অধিকাংশই কাটিয়েছেন অলস সময়। হামলা, মামলা, প্রশাসনিক হয়রানি ও জেল জুলুম হুলিয়ার কারণে চুপচাপ থেকেছেন। তবে এখন নেতা ও কর্মীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। যশোর, খুলনা ও ঝিনাইদহে বিএনপি প্রতিনিধি সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে গোটা এলাকায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্ততি চলছে। কেন্দ্র থেকে একটা ম্যাসেজ পৌছে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের কাছে যে, ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, হাত গুটিয়ে বসে থাকলে আরো বিপদ হবে। কোঁমর বেধে মাঠে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। সামনে নির্বাচন বসে থাকার সময় শেষ। যারা শক্ত হয়ে নামবেন তারাই কেবল দলে থাকবেন, বাকিরা যাবেন স্থায়ী ছুটিতে।’ এতে নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা নড়েচড়ে বসেছেন। দলীয় সুত্র জানায়, প্রতিনিথি সম্মেলনের পর ছিনাইদহ ও খুলনায় নতুন করে বেশ কয়েকজনের নামে মামলা দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষক মহলের বক্তব্য, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মোট ৩৭টি আসনে আগামী নির্বাচনী জরিপ শুরু করেছে প্রধান দু’টি দল। এখনই সার্বিক বিষয়ে কথা বলার মতো সময় আসেনি। তীক্ষè দৃষ্টি রাখছি রাজনীতির গতি-প্রকৃতির দিকে। তবে যতটুকু জানা যায়, বর্তমান অবস্থায় বেশীরভাগ রাজনৈতিক নেতা রাজনীতির নানা হিসাব-নিকাশ কষছেন। রাজনীতি সচেতন মানুষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছেন।
মাঠপর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের কথা, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সবখানেই তুমুল তর্কবিতর্ক চলছে। রাজনীতির ঘোরপ্যাচ বোঝেন না গ্রাম শহরের সহজ সরল শান্তিপ্রিয় মানুষের কথা, ‘আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের স্বার্থে আসলে রাজনীতি হয় না। যারাই এমপি হন, এলকার স্বার্থের চেয়ে নিজের আখের গোছানোর দিকেই নজর থাকে বেশী। জনকল্যাণের রাজনীতি আসলে নেই বললেই চলে। ভোট রাজনীতি নিয়ে মোড়ে মোড়ে পক্ষ বিপক্ষে ঝড় উঠছে চায়ের কাপে ও আলোচনার টেবিলে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ অকপটে বলেছেন, আমরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে, সাধারণ মানুষের কল্যাণের রাজনীতি দেখতে চাই। এমনও অনেকে বলেছেন, সেদিন বেশী দুরে নয়, যেদিন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে একদিন রাজনীতিবিদদেরই জবাব দিতে হবে। খুলনার কলেজ শিক্ষক আমিরুল ইসলাম যশোরের ব্যবসায়ী অসিত কুমার বললেন, রাজনীতি নিয়ে মতামত দেয়া কঠিন। তবে বলা যায়, সবখানেই জোরেশোরে চলছে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানামুখী হিসাব নিকাশ ও আলোচনা। যশোরের সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের বেলেরমাঠ গ্রামের ফয়েজ গাজী আক্ষেপ করে বললেন, ‘রাজনীতি আমাদের কিছু দেয় না। নিজেরা নিজেদের কামকাজ করে খাই, একদিন রিকসা না চললে ছেলেপুলে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হয়, নির্বাচনের আগের এক চেহারা আর পরের আরেক দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজনীতি

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ