নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
৭ বলে ৬৯, ৪ বলে ৯২রান ষ ২ বোলার ১০ বছর নিষিদ্ধ ষ কোচ অধিনায়ক ম্যানেজার ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ষ ২ আম্পয়ার ৬ মাস নিষিদ্ধ
শামীম চৌধুরী : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে ম্যাচ বর্জন করেনি ফেয়ার ফাইটার্স কিংবা লালমাটিয়া ক্লাব। আম্পায়ারের উপর আক্রমনও করেনি। মাঠে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটায়নি ক্লাব ২টি। তবে গত ১০ ও ১১ এপ্রিল দ্বিতীয় বিভাগ সুপার লীগে ফেয়ার ফাইটার্স-ইন্দিরা রোড এবং এক্সিউম-লালমাটিয়া ম্যাচে দুই আম্পায়ার সামছুর রহমান জ্যাকি এবং আজিজুল বারী বাবু’র ম্যাচে নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়ে আন্তর্জাতিক নিউজের শিরোনাম হয়েছেন ফেয়ারফাইটার্স বোলার তাসনিম ও এক্সিউম বোলার সুজন মাহামুদ। দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেট লীগের খবর কালে-ভদ্রে প্রকাশ,প্রচার হয়, সেখানে ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ফেয়ার ফাইটার্স বোলার তাসনিমের ৭ বলে ৮ ওয়াইড,৬ নো ডেলিভারীতে ৬৯ রান খরচা এবং এক্সিউমের বিপক্ষে লালমাটিয়া বোলার সুজন মাহামুদের ৪ বলে ১৩ ওয়াইড,৮ নো ডেলিভারীতে ৯২ রান খরচার সংবাদ পেয়েছে মিডিয়ায় গুরুত্ব।
অভিনব এই প্রতিবাদের সংবাদ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বিসিবি’র এন্টি করাপশন ইউনিট এবং বিসিবি পৃথক ভাবে তদন্ত করে প্রতিবাদকারী ২ বোলার তাসনিম এবং সুজন মাহামুদ ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ক্লাব কর্মকতারা মাঠে না থেকে, এমন প্রতিবাদের ইন্ধন না জুগিয়েও ৪০ বছরের পুরোনো ক্লাব লালমাটিয়া এবং ৮ বছর ধরে সিসিডিএম’র তালিকাভুক্ত ক্লাব ফেয়ারফাইটার্স আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছে। শুধু তাই নয়, দুই দলের ম্যানেজার, অধিনায়ক ( ফেয়ার ফাইটার্স অধিনায়ক তন্ময় ঘোষ ও লালমাটিয়া অধিনায়ক ফয়সাল আহমেদ) ও ২ কোচকে ( ফেয়ারফাইটার্স কোচ আনোয়ারুল মুস্তাকিম টরেও লালমাটিয়া কোচ আসাদুল্লাহ বিপ্লব) ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যাদের নির্লজ্জ পক্ষপাতীত্বে হয়েছে অভিনব প্রতিবাদ, সেই দুই আম্পায়ার আজিজুল বারী বাবু ও সামছুর রহমান জ্যাকিকে মাত্র ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে ! তদন্ত কমিটিতে বিসিবি’র দুই পরিচালক জালাল ইউনুস এবং আকরাম খানের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন কমিটির প্রধান শেখ সোহেল।
এই রায়ের কথা গতকাল মিডিয়াকে জানিয়েছেন শেখ সোহেলÑ‘ দু’জন বোলার (সুজন ও তাসনীম) ১০ বছরের জন্য সাসপেন্ড। ক্যাপ্টেন, ম্যানেজার ও কোচ টিমের ৫ বছরের জন্য সাসাপেন্ড। দু’টি টিম (লালমাটিয়া ও ফেয়ার ফাইটাস) আজীবনের জন্য সাসপেন্ড হয়েছে। আম্পায়াররা খেলা ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারেনি এবং খেলা থামাতে না পারায় ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছে। সবার সাথে সাক্ষাতকার নিয়ে বুঝতে পেরেছি ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে ক্রিকেটকে সম্মান ক্ষুন্ন করতে এই কাজটা করা হয়েছে। ম্যাচে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উপরে উঠবে, এমন কোনো ব্যাপার ছিল না। হেরে গেলে যে রেলিগেশনে চলে যাবে এমনও কোনো ব্যাপার ছিল না। এটা একটি মারাতœক ঘৃণ্য অপরাধ। এর চাইতেও বড় শাস্তি থাকলে আমরা তা দিতাম।’
গত ১০ এপ্রিল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ইন্দিরা রোড-ফেয়ারফাইটার্স ম্যাচে ফেয়ারফাইটার্স বোলার তাসনিমের ৭ বলে ৬৯ রান কিংবা ১১ এপ্রিল সিটি ক্লাব মাঠে এক্সিউম-লালমাটিয়ার ম্যাচে ৪ বলে সুজন মাহামুদের ইচ্ছে মতো নো ওয়াইডে ৯২ রান খরচায় ক্লাবের কোন ইন্ধন না থাকার পরও কেন তদন্ত কমিটির সুপারিশে ক্লাব ২টিকে আজীবন বহিস্কার করা হবে,তা মানতে পারছেন না লালমাটিয়া ক্লাবের সাধারন সম্পাদক আদনান রহমান দীপন এবং ফেয়ারফাইটার্স সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন হায়দার খোকন। বিসিবি’র সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ আদনান রহমান দীপন বলেছেন Ñ‘ টস দেখতে দেয়নি আম্পায়ার। বলেছে তোমরা ব্যাটিং করবে আগে ! আমার অধিনায়ক আকসুকে এ কথা বলেছে। ঘটনার দিন আমি মাঠে ছিলাম না। লালমাটিয়া ৪০ বছরের পুরোনো ক্লাব। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু,মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, এবং হাল আমলের ক্রিকেটার আল আমিন,তাসকিন এই ক্লাবেরই আবিস্কার। খেলায় আমরা কোন গন্ডগোল করিনি, ম্যাচ বর্জন করিনি, আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরনও আমাদের কেউ করেনি। তাহলে আমাদের ক্লাবকে কোন আইনে আজীবন নিষিদ্ধ করা হলো ? আর যাদের নির্লজ্জ আম্পায়ারিংয়ের জন্য এমন ঘটনার জন্ম হলো, সেই দুই আম্পায়ারকে ৬ মাসের জন্য বহিস্কৃত করে এক প্রকার আইওয়াশ করা হলো। কারন অফ সিজন থাকায় এই ৬ মাসে তাদের আম্পায়ারিংয়ের তেমন সুযোগ এমনিতেই ছিল না। ’
ফেয়ারফাইটার্স সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন হায়দার খোকন বলেছেনÑ‘ এখনো আমাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়নি কিছুই। মিডিয়ার মাধ্যমে খবরটি শুনলাম। খবরটি শুনে সিসিডিএম’র কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। তারা নাকি কিছুই জানে না । বিসিবি’র ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে আম্পায়ার। তারপরও তাদেরর প্রতি সদয় হলো বিসিবি। তদন্ত কমিটি যে রায়টি দিয়েছে,তা প্রভাবিত রায়। আমার অধিনায়ককে টস দেখতে না দিয়ে বলা হলো তোমরা আগে ব্যাটিং কর,১১টার মধ্যে ম্যাচ শেষ করতে হবে। যে দুই আম্পায়ার এমনটা করল, তাদের দৃস্টান্তমুলক বিচারই তো আগে হওয়া উচিত ছিল। সিসিডিএমকে বার বার বলেছি চিহ্নিত আম্পায়ারদের বাদ দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য। তারপরও জ্যাকিও কানা বাবু ( আজিজুল বারী বাবু) কে আমাদের ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের জন্য পাঠানো হলো। আমাদের ক্লাবের কারো কোন ইন্ধন না থেকেও ক্লাবকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হলো। ’
যে ২ আম্পায়ারের কারনে এমনটা ঘটেছে, সকাল ১১ টা ২৪ মিনিট এবং সকাল ১০ টা ৩৪ মিনিটে শেষ হয়েছে খেলা, সিসিডিএম থেকে যে ৯ আম্পায়ারকে ম্যাচ পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে আম্পায়ার্স কমিটিকে অনুরোধ করেছে সিসিডিএম, সিসিডিএম’র সেই অনুরোধ উপেক্ষিত হয়েছে। ওই তালিকার বিসিবি’র বেতনভুক্ত দুই আম্পায়ার সামছুর রহমান জ্যাকি এবং আজিজজুল বারী বাবু’ই ক্রিকেটকে করেছেন কলুষিত। তবে ফেয়ারফাইটার্স এবং লালমাটিয়া ক্লাবকে লঘু পাপে গুরুদন্ড দেয়ার পেছনে অন্য কারন খুঁজছেন ক্লাব সংশ্লিস্টরা। গাজী গ্রæপের অর্থয়নে পরিচালিত ক্লাব দু’টি দ্বিতীয় বিভাগের সুপার লীগে ওঠায় বিসিবি’র পরবর্তী নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ নিশ্চিত করেছে। গাজী গ্রæপের পরিচালনাধীন ক্লাবের সংখ্যা রীতিমতো বিসিবি’র প্রভাবশালীদের পরবর্তী নির্বাচনের জন্য হুমকির কারন হয়ে উঠতে পারে বলে একটা শিক্ষা দিতে এমন রায় দেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এখানেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন লালমাটিয়ার সাধারন সম্পাদক আদনান রহমান দীপনÑ‘ লালমাটিয়া ক্লাবটি মহল্লার। গাজী গ্রæপ ক্লাবকে অর্থায়ন করেছে। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের ক্লাবকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হবে। সিসিডিএম’র চেয়ারম্যান এবং সদস্য সচিব দু’জনই গাজী গ্রæপের সঙ্গে জড়িত। এখন দেখি তারা কি করে ? আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাবছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।