পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ইনকিলাব ডেস্ক : পুঁজিবাজারে টানা পতনে বিনিয়োগকারীরা প্রায় একমাস ধরে প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় সময় পার করছিলেন। অনেকেই হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। যা পরপর তিন কার্যদিবসই বিদ্যমান ছিল। ফলে সপ্তাহজুড়ে সূচকের পাশাপাশি বেশিরভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। কিন্তু লেনদেনে কাক্সিক্ষত গতি ফেরেনি। তবে বাজার এখনই আগের মতো চাঙা হবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। কারণ সামনে আসছে বাজেট। বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কী ঘোষণা থাকবে তার ওপরই নির্ভর করবে বাজারের গতি। তবে সপ্তাহের শেষের দিকে সূচক বেড়েছে এটা অবশ্যই ইতিবাচক।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত তিন সপ্তাহ টানা বাজার পড়েছিল। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছেন। এখন আবার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবসে সূচক ১০০ পয়েন্টের কাছাকাছি বেড়েছে। যার ভোব পড়েছে শেয়ার দরে। শেষ দিনে সূচক বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৬৯৮ কোটি টাকা। ১৭৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এর আগের তিন দিন সূচক বাড়ায় বৃহস্পতিবার অনেকেই বাজার থেকে মুনাফা তুলে নিয়েছে। ফলে অনেক শেয়ারের দর কিছুটা সংশোধন হয়েছে।
সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ধোন মূল্য সূচক সামান্য বাড়লেও কমেছে লেনদেন। ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ বা ১২.৭৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই ৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৭৭ শতাংশ বা ১৫.৭২ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে দশমিক ১৩ শতাংশ বা ১.৭০ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩০টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৭২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। আর লেনদেন হয়নি তিনটি কোম্পানির শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে দুই হাজার ৮৮৩ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার। যা এর আগের সপ্তাহে ছিল তিন হাজার ৪৩২ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার। সেই হিসাবে আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৫৪৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা ১৬.০১ শতাংশ।
সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে দশমিক ৯৬ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে দশমিক ৩৭ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৭৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৮টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, সপ্তাহ শেষের কয়েক কার্যদিবস বাজারের গতি দেখে মনে হচ্ছে, সংশোধন শেষে বাজার আবার তার স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। বাজারের গতি ঠিক রাখার জন্য মাঝে মাঝে সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে তা যেন দীর্ঘ মেয়াদি না হয় সেদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
তাহলে বাজারের িেত আস্থা ফিরবে বিনিয়োগকারীদের। আর বিনিয়োগকারীরা থাকলে সম্ভাবনাময় পুঁজিবাজার তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাবে। তবে আমাদের পুঁজিবাজারে বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কম, রেগুলেটর দুর্বল, এখানে সবই সম্ভব। আর এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কিছু লোক রাতারাতি বিশাল অর্থের মালিক হচ্ছেন। আর বেশিরভাগ লোক পুঁজি হারিয়ে বাজার থেকে বিদায় নিচ্ছেন। এ কারণে বাজারের গভীরতা বাড়ছে না।
বিগত বছরের ইতিহাসে এপ্রিলে পুঁজিবাজার কিছুটা মন্দা থাকলেও শেষদিকে আবার ঘুরে দাঁড়ায়। বাজার যখন ঘুরে দাঁড়ায় কিছু কোম্পানির শেয়ার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় একটি চক্র। নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে তারা অত্যন্ত সুকৌশলে এ কাজটি করেন। তাই কোনো বিশেষ শেয়ার নিয়ে অতি আশাবাদী না হয়ে সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। -ওয়েবসাইট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।