পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ বাপের বেটাই বটে! তিনি বাপ-দাদার ভিটেমাটি দেখতে ৫ দিনের সফরে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার দিনহাটায়।
সেখানে সাংবাদিকরা জানতে চান, তিস্তার পানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে কথা বলবেন কি না? প্রশ্নের জবাবে স্পষ্ট ভাষায় এরশাদ জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নয়, তিস্তার পানি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজীর সঙ্গেই কথা বলব। মমতা তো পানি দেয়ার কেউ না’। এরশাদের এ স্পষ্ট বক্তব্যে বিস্মিত হন স্থানীয় সাংবাদিকরা। যেখানে তিস্তার পানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা প্রটোকল ভুলে গিয়ে মমতার অনুকম্পার প্রত্যাশা করছেন। দেন-দরবার করছেন। এখনো মমতাকে তোয়াজ করতে ব্যস্ত; তখন এরশাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। এরশাদের বক্তব্য হলো তিস্তার পানির ব্যাপারে রাষ্ট্র টু রাষ্ট্রের আলোচনা হবে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ফ্যাক্টর হতে পারে না। এরশাদের এই আচরণে রংপুরের অনেককেই বলতে শোনা যায় ‘বাপের বেটা এরশাদ’। উল্লেখ্য, এরশাদের বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন স্পষ্টভাষী মানুষ ছিলেন। তারই ভিটেমাটি কুচবিহারের দিনহাটা সফরে যান এরশাদ।
২৩ এপ্রিল এরশাদ সড়কপথে কুচবিহারের দিনহাটায় যান ৫ দিনের সফরে। সেখানে অবস্থানের সময় ওই এলাকা সফর করে জনসভায় মমতা ব্যানার্জী তিস্তার পানি প্রসঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় মমতা উল্টো বাংলাদেশ আত্রাই নদীর বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রেখে পশ্চিমবঙ্গকে পানি থেকে বঞ্চিত করেছে অভিযোগ তোলেন। মমতা বলেন, আত্রাইয়ে বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশ পানি আটকে রেখে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলার কৃষককে পানি থেকে বঞ্চিত করছে। অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারকরা যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে তোয়াজ করতে অভ্যস্ত; প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ হয়তো তেমিন মমতার সঙ্গে দেখা করে তিস্তার পানির ব্যাপারে কথা বলবেন। কিন্তু এরশাদ ‘মমতার আত্রাই নদীর পানি আটকে রাখা বক্তব্যে’ কিছুটা ক্ষুব্ধ হন। মিডিয়ার খবরে জানা যায়, গত বুধবার তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে পাশে বসিয়ে ডুয়ার্সের মেটেলির রাজবাড়িতে জামাই রেজাউল বাকির বাড়িতে ‘মমতা নয় মোদির সঙ্গে তিস্তা নিয়ে কথা হবে’ বলে জানান এইচ এম এরশাদ। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ এরশাদ তার জামাই তথা মমতা ব্যানার্জীর দল তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি রেজাউল বাকির বাড়িতে যান। সেখানে তাকে রাজকীয় সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় এরশাদের পাশে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম। তার আগের দিন বণিক সমিতি এরশাদকে সংবর্ধনা দেন। সে সময়েই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিস্তার পানি নিয়ে একবার নয়, এক হাজারবার কথা বলব। তিস্তার পানি আমাদের চাই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গোজলডোবায় তিস্তা নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের নদীতে এক ফোঁটাও পানি নেই। আমাদের দেশের লাখ লাখ কৃষক পানির জন্য হাহাকার করছেন। তিস্তার পানি নিয়ে মমতার সঙ্গে কোনো কথাই বলব না। আমাদের মোদিজীর ওপর ভরসা আছে। এই চুক্তি নিয়ে তাই আমরা মোদিজীর সঙ্গেই কথা বলব। আমরা চাই তিস্তা চুক্তি হোক। অন্য কোনো নদীর নয়, তিস্তার পানিই প্রয়োজন বাংলাদেশের। মমতাকে গুরুত্ব না দেয়ায় এরশাদকে ‘বাপ কা বেটা’ হিসেবে অবিহিত করেছেন স্থানীয়রা। তবে এরশাদের ভাতিজী জামাই রেজাউল তৃণমূলের নেতা হওয়ায় তিনি কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছেন বলে পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়াগুলোতে খবর বের হয়েছে। পত্রিকায় লিখেছে, জামাই বাড়িতে এসে বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ মোদি বন্দনা করে গেলেন। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো গুরুত্বই দিলেন না; বরং তার প্রতি উগড়ে দিলেন তীব্র ক্ষোভ।
উল্লেখ্য, এরশাদের জন্ম ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটায়। দেশভাগের সময় তার বাবা মকবুল হোসেন পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে এসে রংপুর শহরে বসতি স্থাপন করেন। প্রেসিডেন্ট থাকার সময়েও এরশাদ ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবই দেখিয়েছেন। কিন্তু সা¤প্রতিক তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁকে বসায় তাকে গুরুত্বই দিতে রাজি নন এইচ এম এরশাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।