Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক সময়ের উত্তাল ধরলার বুকে এখন ধূ ধূ বালুচর

| প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা এক সময়ের উত্তাল ধরলা এখন ধু ধু বালুচর। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ধরলার বুকচিড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। হারিয়ে গেছে কয়েক প্রজাতির মাছ। ধরলার সুস্বাদু কর্তী, বরালি, আইড়, বাইন, চিলকি, বাঘাআইড়, কনে, পাপদা আর আগের মতো জেলেদের জালে ধরা পড়ে না। মাছ না পাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার জেলে পরিবার। ঋণের জালে জড়িয়ে পৈতৃক ব্যবসা ছেড়ে কাজের সন্ধানে কেউ পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। কেউ অটোরিকশা চালান, কেউ বা চালানি মাছের ব্যবসা করেন, কেউ হয়েছেন দিনমজুর। খাদ্য আর বাসস্থানের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে কয়েক প্রজাতির পাখি। বাপ-দাদার কাছে শোনা, বিখ্যাত গায়ক আব্বাস উদ্দিন ফুলবাড়ীতে এক অনুষ্ঠানে গান গাইতে আসার সময়, ধরলা নদীর দুইপাশের বাঁশঝাড়, বড় বড় গাছে অসংখ্য বক পাখি আর শিকাড়ীদের পুঁটি মাছ দিয়ে ফাঁদ দিয়ে বক ধরার দৃশ্য দেখে পথে গরুর গাড়ীতে বসে, ফান্দে পড়িয়া বকা কাঁন্দেরে ...ধরলা নদীর পাড়ে। গানটি গরুর গাড়ীতে বসে লিখে, সুর করে অনুষ্ঠানে গেয়েছিলেন। বিখ্যাত সেই গান দেশ-বিদেশের মানুষের মুখে মুখে ফিরলেও ধরলা পাড়ের সেই বক আর নেই। বাঁশঝাড়ও উধাও হয়ে গেছে। পানি কমে যাওয়ায় ধরলা নদী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ডাবকি, হাড়গিলা, শল্লী, কোড়া, শামকুড়া, চখা-চখী, পানকৈৗড়ী, দলপিঁপি ইত্যাদি পাখি। এক সময় নদীর চরে দাপিয়ে বেড়াতো গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া প্রভৃতি গৃহ পালিত প্রাণী। গৃহস্থদের যার পালে যত বেশি গরু, মহিষ থাকতো তার সামাজিক মর্যাদা ততো বেশি হত। নদীর পানি কমে যাওয়া, ঘনঘন নদীর গতি পরির্বতন, নদীর চরে কৃষি কাজ শুরু হওয়ায় গরু, মহিষের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এখন চরে রাখালের বাঁশির সুর আর শোনা যায় না। সারাদিন চলে কৃষকের খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে চর থেকে উধাও হয়ে গেছে কাশবন, ঝাউবন, ও কাটাবন। পানির অভাবে সকলের জীবন আজ বিপন্ন। অথচ একদিন ধরলার রূপ, লাবণ্য, ঐতিহ্য সবই ছিল। ৫০ বছর আগেও ধরলা ছিল ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম মাধ্যম। লালমনিরহাট, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম এবং চিলমারীর বন্দর হয়ে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে পণ্য আনা-নেয়া হত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এক

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ