Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪১ বছর পর নিজ গ্রামে পাকিস্তান ফেরত একলিমা বেগম

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

৪১ বছর আগে নিখোঁজ হওয়ার পর সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পাকিস্তানে সন্ধান মেলা একলিমা বেগম নিজ গ্রামে ফিরেছেন। তার আগমনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার তালার উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে পৌঁছান গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে একলিমা বেগম।
এ সময় পরিবারের সদস্যরাসহ গ্রামবাসী ফুল ছিটিয়ে বরণ করে নেন একলিমা বেগম ও তার বড় ছেলে আশরাফ খানকে। খুশিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন একলিমা বেগমসহ তার স্বজনরা।
এ দিকে, একলিমা বেগমের আগমন উপলক্ষে রঙিন কাগজ ও বেলুনে সেজেছে তাদের গঙ্গারামপুরের বাড়িটি। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা গ্রামবাসীর মাঝে। তার আগমনকে ঘিরে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে সবার। সেই সাথে তাকে একনজর দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমেছে বাড়িতে।
নিজ গ্রামে পৌঁছানোর পর একলিমা বেগম বলেন, এত বছর পর সবার কাছে এসে খুব ভালো লাগছে। এভাবে আবার সবার কাছে ফিরতে পারব কখনও ভাবিনি।
একলিমা বেগমের ভাইপো জাকারিয়া ইসলাম বলেন, বহু চেষ্টার পরে ফুপুকে দেশে আনতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। তারা ২৫ দিন এখানে থাকবেন। ইচ্ছা আছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা তাদের ঘুরিয়ে দেখাবো।
একলিমা বেগমের বড় ছেলে আশরাফ খান বলেন, আমাদের বাবা অনেক ছোট বেলায় মারা গেছে। মা অনেক কষ্ট করে আমাদের বড় করেছে। মায়ের এই ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে। এখন এখানকার সবাই আমাদের ওখানে যাবে, আমরা আসব, এভাবেই চলবে।
প্রসঙ্গত, স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন একলিমা বেগম। তিন ছেলে-মেয়ে রেখে ১৯৮১ সালের কোনো একদিন হারিয়ে যান তিনি। সে সময় পরিবারের সদস্যরা বহু খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি একলিমার।
দীর্ঘ ৪১ বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে খোঁজ মেলে একলিমা বেগমের। একলিমার বয়স এখন ৬৫ বছর। তার কেবল মনে ছিল বাবা-মা-ভাইদের নাম আর তালার গঙ্গারামপুর গ্রামের কথা।
পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালিতে পরিবারের সঙ্গে অবস্থানরত একলিমা মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজ মাতৃভ‚মিতে আসার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। তার এ আকুতির কথা ভিডিও করে সেখানকার পরিবারের সন্তানেরা ফেসবুকে যশোরের একটি গ্রæপে পোস্ট করেন।
তাদের করা ভিডিওটি চোখে পড়ে একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে মো. জাকিরায়া শেখের। ভিডিওতে একলিমার বলা নামগুলো তার দাদা-বাবা ও চাচাদের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করেন এবং ভিডিও দেখিয়ে নিশ্চিত হন যে ভিডিও’র একলিমা বেগমই তার হারিয়ে যাওয়া ফুপু। এরপর তারা পারিবারিকভাবেই ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন একলিমার সঙ্গে।
পরবর্তীতে যাবতীয় আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেন একলিমার পরিবার। যার সুবাদে নিজ গ্রামে ফিরতে পেরেছেন তিনি।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: একলিমা বেগম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ