Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলমান নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের

| প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : চলমান বিরোধের জেরে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে চলমান নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। পাশাপাশি বিরোধ নিরসনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসে ১০০ জন সিনেটরের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প প্রশাসনের এ নীতি ঘোষণা করা হয়। আর এর মধ্য দিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে যুদ্ধের নীতি থেকে কার্যত সরে আসলেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গত বুধবার পুরো সিনেটের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ট্রাম্প। চলমান কোনো বিরোধপূর্ণ ইস্যুতে পুরো সিনেটকে একসঙ্গে ডাকার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বেশ বিরল। মনে করা হয়েছিল, এ বৈঠকেই উত্তর কোরিয়ায় আগাম হামলার বিষয়ে সিনেটের অনুমতি চাইবেন ট্রাম্প। বেশ কিছুদিন থেকেই তিনি দেশটিতে হামলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু যুদ্ধাবস্থা থেকে সরে এসে কূটনৈতিক উপায়ে বিরোধ নিরসনে জোর দিয়েছেন সিনেটররা। বৈঠক শেষে এ যৌথ বিবৃতিতে মার্কিন প্রশাসনের এ নীতির কথা জানানো হয়। বলা হয়, বিরোধ নিরসন ও জাতীয় স্বার্থের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত। তবে নিজেদের ও মিত্রদের রক্ষার জন্যও প্রস্তুতি রয়েছে। কূটনৈতিক উপায়ে বিরোধ নিরসনে রাজি হলেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে ছাড় দিতে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) লক্ষ্য বিতর্কিত পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এ জন্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কঠোর করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে কূটনৈতিক উপায় অবলম্বন করা হবে। উত্তর কোরিয়াকে সন্ত্রাসীদের মদদদাতা রাষ্ট্র হিসেবে তালিকাভুক্তির বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস এবং ইউএস ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ড্যান কোটস। এদিকে ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর ক্রিস্টোফার কোনস জানান, উত্তর কোরিয়ায় সামরিক হামলার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ সিনেটর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। কূটনৈতিক উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, চলমান যুদ্ধাবস্থার জেরে কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছে পারমাণবিক অস্ত্রবাহী মার্কিন সাবমেরিন ইউএসএস মিশিগান। কোরীয় উপদ্বীপের পথে রয়েছে বিমানবাহী মার্কিন নৌবহর কার্ল ভিনসন। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীও। দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাড। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে নিয়েই ট্রাম্পের যত আপত্তি। মার্কিন প্রশাসন মনে করছে, পিয়ংইয়ং যুক্তরাষ্ট্রের ভূখÐে হামলা চালাতেই আন্তর্জাতিক আইন ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শপথের পর থেকে উত্তর কোরিয়াও একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে এ দাবির পক্ষে রসদ জুগিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা ও যুদ্ধাবস্থা দেখা দিয়েছে। চীন তার অন্যতম মিত্র উত্তর কোরিয়াকে দমনে সহায়তা না করলে প্রয়োজনে একাই সামরিক হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। পিয়ংইয়ং পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। মার্কিন নৌবহরকে ডুবিয়ে দিতে দেশটির সেনারা প্রস্তুত রয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কায় দুপক্ষকেই সতর্ক করেছে চীন ও রাশিয়া। দু’পক্ষকেই সংযত আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছে। যুদ্ধের আশঙ্কায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর চাপ সামলাতে উত্তর কোরিয়া সংলগ্ন নিজ নিজ দেশের সীমান্তে বাড়তি সেনা ও যুদ্ধযান মোতায়েন করেছে মস্কো ও বেইজিং। চীন নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি বিমানবাহী রণতরী পানিতে ভাসিয়েছে। বিবিসি, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ