দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
মাওলানা মুফতী মোহাম্মদ তাহির মাসউদ
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত মদীনায় লুটতরাজ চালাবে। অতঃপর মক্কাভিমুখে রওয়ানা করবে। তারা যখন ‘বাইদা’ নামক স্থানে পৌঁছবে আল্লাহপাক ফেরেস্তা জিব্রাইলকে প্রেরণ করে বলবেন হে জিব্রাইল! তুমি যাও আর তাদের কাজ শুরু করে। ফেরেস্তা জিব্রাইল তাদের উপর এমন পদাঘাত করবেন যে, আল্লাহ তার মাধ্যমে তাদেরকে ভ‚মিতে ধসে দিবেন। তাদের মধ্যে মাত্র দু ব্যক্তি ব্যতীত কেউ বাঁচবে না। একজন বাশীর অন্যজন নাযীর। (সুনানু দারুকুতনী বাহাওয়ালায়ে তাযকিরাতিল কুরতুবি-৫০৮) ইমাম মাহদীর ব্যাপারে অনেক বেশী রেওয়ায়তেও বর্ণনা এসেছে। উলামায়ে কেরাম বলেছেন, ইমাম মাহদীর প্রথম প্রকাশ হবে যৌবনকালে। অতঃপর তিনি অন্যের হাতে নিহত হওয়ার শংকায় গোপনে মক্কায় চলে যাবেন। অতঃপর বিভিন্ন স্থানে থাকার পর মক্কায় ফিরে আসবেন। লোকেরা তাকে হাজরে আসওয়াদের কাছে মাতাফে দেখতে পাবে ও চিনে ফেলবে এবং খেলাফত ইমামতের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করবে। অতঃপর তিনি মদীনাভিমুখে রওয়ানা হবেন, তার সাথে মুমিনদের একটি দল থাকবে। তারপর তারা কুফার পথে ভ্রমণ করবেন। সিফয়ানী বাহিনীর কাছে পর্যুদস্ত হয়ে ফিরে আসবেন। আল্লাহ প্রাচ্যবাসীর মধ্য হতে মাহদীর উজিরকে সিফয়ানীর বিরুদ্ধে পাঠাবেন। সিফয়ানী পরাজিত হয়ে শামের দিকে চলে যাবে। ইমাম মাহদী আবার তাকে ধাওয়া করে বাইতুল মুকাদ্দাসের পাশে হত্যা করবেন। (শরহে আকীদায়ে সিফারিনিয়্যাহ-২/৮১-৮২) কুস্তুনতুনিয়া বিজয়ের পর ইমাম মাহদী শামের দিকে রওয়ানা করবেন। শাম পৌঁছার অল্প কিছু দিন পরেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। শাম ও ইরাকের মধ্যখান হতে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করে ঘুরতে ঘুরতে দামেশকের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। আসরের নামাযের প্রস্তুতিতে লোকজন ব্যস্ত থাকবে। এমন সময় অকস্মাত হযরত ঈসা (আ:) দু’জন ফেরেস্তার উপর ভর করে আসমান হতে অবতরণ করত দৃষ্টিগোচর হবেন। ঈসা (আ:) কে দেখে দাজ্জাল পলায়ন করবে। পরিশেষে “বাবে লুদ” নামক স্থানে পৌঁছে ঈসা (আ:) দাজ্জালের জীবনাবসান ঘটাবেন। সে সময় ভ‚পৃষ্ঠে কোন কাফির অবশিষ্ট থাকবে না। বরং সকলেই মুসলমান হয়ে যাবে। ইমাম মাহদীর বয়স ৪৫, ৪৮ বা ৪৯ বছর হওয়ার পর তার ইন্তিকাল হয়ে যাবে। হযরত ঈসা (আ:) তাঁর জানাযার নামাজ পড়াবেন। ইমাম মাহদী বাইতুল মুকাদ্দাসের পাশে ইন্তিকাল করবেন ও সেখানেই তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।
(ক) আবু উমামাতুল বাহিলী কর্র্তৃক বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসে দাজ্জালের আলোচনা বিদ্যমান। সে হাদীসে একপর্যায়ে উম্মে শারীক বিনতে উবাই বলেন : ঈয়া রাসূলুল্লাহ! সে সময় আরবগণ কোথায় থাকবে? তিনি উত্তরে বললেন, আরবগণ তখন সংখ্যায় খুব স্বল্প হবে। তাদের আশ্রয় হবে বাইতুল মুকাদ্দাস। তাদের ইমাম (খলিফা) হবেন একজন সৎ লোক। একদা তাদের ইমাম (মাহদী নামাজ পড়ানোর জন্য অগ্রসর হবেন। এমন সময় ঈসা ইবনে মারইয়াম তাদের মাঝে অবতরণ করবেন। ইমাম কয়েক কদম পিছে হটে আসবেন। ঈসা (আ:) তার কাঁধে হাত রেখে বলবেন : আপনি আগে বেড়ে নামাজ পড়ান। কেননা এ পদ এখন আপনার জন্যই। ইকামাত হবে। তাদের ইমাম নামাজ পড়াবেন। নামাজ শেষ হলে ঈসা (আ:) বলবেন : তোমরা দরজা খোল। দরজা খোলা হবে। তার পিছনেই দেখা যাবে দাজ্জাল। দাজ্জাল প্রাণপণে পালানোর চেষ্টা করবে। ঈসা (আ:) বলবেন : তোমার উপর আমার একটি আঘাত নির্ধারিত হয়ে আছে। তুমি আমার ঐ আঘাত থেকে বাঁচবে ন। অনন্তর তিনি “বাবুল লুদ” এ তাকে ধরে হত্যা করে দিবেন। আল্লাহ তা’য়ালা ইয়াহুদিদের পরাজিত-পর্যুদস্ত করে দিবেন। (সুনানু আবু দাউদ-২/১৩৫) অতঃপর হযরত ঈসা বিন মারইয়াম (আ:)-এর হাতে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পিত হবে। ইমাম মাহদী ঈসা (আ:)কে নিয়ে নামাজ পড়াবেন। অতঃপর ঈসা (আ:)-এর পিছনে ইমাম মাহদী নামাজ পড়বেন। তার নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। তারপর ইমাম মাহদীর তিরোধান ঘটবে। ঈসা (আ:) তার জানাযার নামাজ পড়াবেন। তাকে বাইতুল মুকাদ্দাসে সমাধিস্থ করা হবে। (শরহে আকীদায়ে সিফারিনিয়্যাহ-২/৮৫) ঈসা (আ:) তার পর পাঁচ বা সাত বা নয় বছর জীবিত থাকবেন। (আল ইয়াওয়াকিতু ওয়াল জাওয়াহিরু-২/১৪৩)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।