পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সিনিয়র সিটিজেনদের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক রেহমান সোবহান। প্রখ্যাত এবং প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ তৈরি পোশাক শিল্প গার্মেন্টসের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে তিনি বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের ঘামে নির্মিত তৈরি পোশাকের ‘লাভের গুড় পিঁপড়ায়’ খাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, কোনো মালিকের একার পক্ষে গ্রার্মেন্টসে টেকসই শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা অসম্ভব। কারণ বাংলাদেশে তৈরি একটি পোশাক ৫ ডলারে ক্রয় করে বিশ্বের দেশে দেশে ২৫ ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। গার্মেন্টস পণ্যের মাঝখানের এই ২০ ডলারে শ্রমিক-মালিক কারও সংশ্লেষ থাকছে না। প্রশ্ন হলো এই ২০ ডলার যায় কোথায়?
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৪ বছর পূর্তিতে গত রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সামাজিক সংলাপে তিনি এ প্রশ্ন উত্থাপন করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর উদ্যোগে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে অনুকরণীয়’ শীর্ষক এ সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম। সঞ্চালনা করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
সংলাপে রেহমান সোবহান বলেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনা জাতি হিসাবে আমাদের লজ্জার কারণ। তাই খতিয়ে দেখা দরকার- এই দুর্ঘটনার পর পোশাক খাতে কী পরিবর্তন এনেছে, শ্রমিকদের ভাগ্যের কতটা উন্নতি ঘটেছে। সেটি না হলে আমরা এর কলঙ্ক মোচন করতে পারব না।’ তিনি আরো ‘শঙ্কার কারণ হচ্ছে এই পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আমাদের রাজনীতিবিদ ও সরকারের মধ্যে আলাপ-আলোচনা কম। যারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন, তারা এ নিয়ে খুব একটা ভাবেন না।’ শ্রমিক অধিকারের টেকসই পরিবর্তন আনার জন্য বিশ্ববাজারে রফতানি হওয়া বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের মূল্যস্তরে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, শুধু মালিকের একার উদ্যোগে শ্রম অধিকার কখনোই টেকসই হবে না। এই শ্রমের সুফল ভোগকারী বিদেশি বায়ার এবং রিটেইলারদেরও পোশাকের দামের সঙ্গে আপস করতে হবে।
রেহমান সোবহানের এই প্রশ্ন প্রসঙ্গে ওই সংলাপে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন বলেন, ‘পোশাকের দাম বাড়ানোর বিষয়টি ইইউর পলিসিগত সিদ্ধান্তের আওতায় পড়ে না। এটি মালিক এবং ক্রেতার দর কষাকষির বিষয়।’ তিনি আরও বলেন, শ্রম অধিকার রক্ষা ছাড়া ইউরোপে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সামনেই ইইউ কমিশনের রিভিউ মিটিং রয়েছে। সেখানে সন্তোষজনক অবস্থান তুলে ধরতে ব্যর্থ হলে সাময়িক সময়ের জন্য ইইউ’র বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার হতে পারে। একই সুরে কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনেইত পিয়েরে লারামি বলেন, পোশাকের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বায়ারদের সঙ্গে দর কষাকষি করা যেতেই পারে। কিন্তু সেটি চাওয়ার আগে কারখানাটি কতটা কমপ্লায়েন্ট এবং সেখানে কতটা শ্রম অধিকার রক্ষা হচ্ছে, ট্রেড ইউনিয়ন আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। আইএলও প্রতিনিধি মাহেন্দ্র নাইডু বলেন, বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে, এটি এখনও চলছে। বায়ারদের উচিত শ্রমিকের স্বার্থে তাদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে পোশাকের দাম পুনর্বিবেচনা করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।