পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সমবায়ের নামে সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। আইনি দুর্বলতা, নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও নজরদারিহীনতার সুযোগ নিয়ে তারা বছরের পর বছর অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছে। ব্যাংকের আড়ালে তাদের অনেকে অর্থ পাচারও করছে। কিছু সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ আরো গুরুতর। রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতা চালানোর আর্থিক সহায়তার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটি সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভভুক্ত যেসব সমিতির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেইস করার পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) মামলা রুজু করার সুপারিশ করেছে।
কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্র সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী, রাজি উদ্দীন আহমেদ, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এবং ফজলে হোসেন বাদশা। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সংসদীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সমবায় সমিতিগুলোর আর্থিক অনিয়ম নিয়ে আলোচনাকালে সদস্যরা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দিন দিন সমিতিগুলোর সংখ্যা কমে যাওয়ায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন। সূত্র জানায়, সমবায় অধিদফতরের পক্ষ থেকে কমিটির নবম বৈঠকে দেশে সমবায় সমিতির সংখ্যা এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৬টি বলে জানানো হয়েছে। মাত্র চারটি বৈঠক পর কমিটির ১৩তম বৈঠকে এক লাখ ৭৮ হাজার ৯৫৬টি বলে জানানো হয়। অর্থাৎ চার মাসে প্রায় ১০ হাজার সমিতি কমে গেছে। সমবায়ের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে সভাপতি জানতে চাইলেও সংশ্লিষ্টরা সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে বৈঠকে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে আলোচনাকালে বেশ কয়েকজন সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সমবায় সমিতি (সংশোধন) আইন ২০১৩ অনুযায়ী সমবায়ী প্রতিষ্ঠান সদস্যদের আমানত শুধু বিভিন্ন ধরনের লাভজনক খাতে পরিচালনা করতে পারবে। কিন্তু বহু সমিতি সদস্যের বাইরে থেকেও ঋণ দেয়া-নেয়া, এফডিআর সংগ্রহ ও উচ্চহারের সুদে দাদন ব্যবসার মতো অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একাধিক শাখা খোলার বিধান না থাকলেও তারা মানছে না। প্রকাশ্যেই এসব অনিয়ম চললেও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান সমবায় অধিদপ্তরের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তারা বলেন, সঞ্চয়ের বিপরীতে আকর্ষণীয় লাভ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অনেক সমবায় সমিতি পুঁজি সংগ্রহ করে। সরকারি তহবিলে কয়েক শত টাকা জমা দিয়ে বহুমুখী (মাল্টিপারপাস) সমবায় সমিতি চালুর সনদ পাওয়া যায়। সনদ দেয়া হলেও তাদের কার্যক্রমে নজরদারি রাখা হয় না। ফলে বহু মানুষ সমিতির সনদ নিয়ে আর্থিক ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। সমবায় সমিতির নামের সঙ্গে ‘ব্যাংক’ শব্দটি অবৈধভাবে যুক্ত করেও প্রকাশ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে অন্তত আধাডজন প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিদেশে অর্থপাচারেরও অভিযোগ।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ ও আইডিয়াল এই তিনটি সমিতির বিরুদ্ধে দুই হাজার চার কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার ৪১০ টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরো ১০৫টি সমবায় প্রতিষ্ঠান আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও কি পরিমাণ অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে সে হিসাব পাওয়া যায়নি। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লিমিটেড, উত্তরা ইনভেস্টমেন্ট, সিটি ইনভেস্টমেন্ট, অবিস্মরণীয় ইনভেস্টমেন্ট, ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট, জয়েন্ট ইসলামী ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স, রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, অগ্রণী কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি অন্যতম। কমিটি এসব প্রতিষ্ঠান কত টাকা আত্মসাৎ করেছে আগামী বৈঠকে তা উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে।
সংসদ সচিবালয় জানায়, বৈঠকে রাজশাহী ওয়াসার ‘কনস্ট্রাকচার অব সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট প্রজেক্টের কার্যক্রম দ্রæত শুরু করে রাজশাহীর জনগণের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সোনা দিঘি উদ্ধার করে আগের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে আনা এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের অসন্তোষ দ্রæত সমাধানের ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।