পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : লাকী আখন্দের জন্মস্থান পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় গতকাল সকাল ১০টায় প্রথম জানাজা শেষে বেলা ১১টায় তার লাশ নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। বেলা সোয়া তিনটায় তৃতীয় জানাজা শেষে সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হয়। লাকী আখন্দকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামন নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, টিভি ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, ফরিদুর রেজা সাগর, সংগীতশিল্পী নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, তিমির নন্দী, ফোয়াদ নাসের বাবু, কাজী হাবলু, নকীব খান, খুরশীদ আলম, ফকির আলমগীর, শুভ্রদেব, লাবু রহমান, ওয়ারফেইজের টিপু, মাইলসের মানাম আহমেদ, বিজন মিস্ত্রী, তানভীর আলম সজীব, তরুণ, শাহেদ, বেলাল খান, অদিত, গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, আসিফ ইকবাল, কবির বকুল, অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ, শংকর সাঁওজাল, নাদের চৌধুরী প্রমুখ। লাকী আখন্দের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) বাদ জোহর আরমানিটোলার বাসায় মরহুমের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
আধুনিক বাংলা সংগীতের খ্যাতিমান শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক লাকী আখন্দর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। শৈশব কেটেছে ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার পাতলা খান লেনে। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানে সুরকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সুরকার হিসেবে আরো কাজ করেছেন এইচএমভি ভারত এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও।
স্বাধীনতার পর পর নতুন উদ্যমে বাংলা গান নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার নিজের সুর করা গানের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। শিল্পীর সহোদর ক্ষণজন্মা হ্যাপী আখন্দের সাথে ছিলো তার আত্মার সম্পর্ক। ভাইয়ের মৃত্যুর পর দীর্ঘকাল তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। দু’জনের যৌথ প্রয়াসে সূচিত হয়েছিলো বাংলা গানের এক নতুন ধারা। ‘আগে যদি জানতাম’, ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘কে বাঁশি বাজায়রে’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘লিখতে পারি না কোনও গান’, ‘বিতৃঞ্চা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের নির্মাতা লাকী আখন্দ অনেক দিন ধরেই মরণব্যাধী ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর তার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) টানা আড়াই মাস চিকিৎসার পর গত সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরেছিলেন লাকি আখন্দ। শুক্রবার দুপুর নাগাদ তার শরীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। যে কারণে তাকে আবারও হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ঐদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার দিকে এই সঙ্গীতব্যক্তিত্ব ইন্তেকাল করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।