Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোরিয়া সীমান্তে দশ লক্ষাধিক মাইন পোঁতা

| প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মাঝেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় উত্তর কোরিয়া ১০ লাখেরও বেশি স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা ঠেকাতেই এসব মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়। ডিএমজেড এলাকায় এসব মাইন পুঁতে রেখেছে পিয়ংইয়ং। গত বুধবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান বলেছে, উত্তর কোরিয়ার তথাকথিত অসামরিকীকৃত অঞ্চলে (ডিমিলিটারাইজড জোন-ডিএমজেড) মার্কিন হামলা প্রতিরোধ করাই মাইন পুঁতে রাখার উদ্দেশ্য। কোরীয় উপদ্বীপকে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত করেছে এই ডিএমজেড এলাকা। ১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধের সময় উত্তর কোরিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর ডিএমজেড এলাকা তৈরি করা হয়। ১৬০ মাইল দৈর্ঘ্য ও আড়াই মাইল প্রশস্ত এ এলাকা। বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সীমান্তগুলোর একটি উত্তর কোরিয়া সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় স্থলমাইন ও তারকাঁটা বসানো হয়েছে। দুই কোরিয়ার চুক্তি অনুযায়ী, সীমান্ত এলাকার মধ্যে অথবা আশপাশে যেকোনো ধরনের উসকানিমূলক কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ডিএমজেড এলাকার ভেতরে এখনও দুপক্ষের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, বন্দুকসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনের অভিযোগ রয়েছে। দ্য সান আরো জানায়, ডিএমজেড এলাকায় ১০ লাখের বেশি মাইন পুঁতে রেখেছে পিয়ংইয়ং। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের সীমান্তবর্তী বেসামরিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত পানমুনজম গ্রামেও মাইন স্থাপন করেছে পিয়ংইয়ং। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র এই পানমুনজম গ্রামের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোরীয় ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য এই পানমুনজম। সোমবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ওই এলাকা সফরে গিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কৌশলগত ধৈর্যের সময় ফুরিয়ে গেছে।
অপর খবরে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে আগে জানানো হয়েছিল যে দেশটিতে অন্তত ৩০টি পরমাণু বোমা রয়েছে। এ ছাড়া, তিন বছরে এ সংখ্যা দ্বিগুণ করার মতো বোমা তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানও দেশটির কাছে আছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এসব তথ্য দিয়েছে। আর এতে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু বোমার সংখ্যা নিয়ে আগে যে ধারণা করা হতো তা পুরোপুরি বদলে গেছে। দেশটি নতুন পরমাণু শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। এ ছাড়া, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পরমাণু বোমা দিয়ে হামলার সক্ষমতা এখনই দেশটির আছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে দেয়া হিসাবে আমেরিকা মনে করতো পিয়ংইয়ংয়ের হাতে একটি বড়জোর দু’টি পরমাণু বোমা রয়েছে।
২০২০ সালের মধ্যে দেশটির পরমাণু বোমার সংখ্যা বেড়ে ১০টি হতে পারে বলেও সে সময় ধারণা ব্যক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড অলব্রাইট আরো বলেন, প্লুটোনিয়াম এবং ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়ানোর কারণে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু বোমার সংখ্যা বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, কাগজ কলমের হিসাবের ভিত্তিতে বলা যায় যে, উপগ্রহ পাঠাতে যে রকেট ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে আমেরিকায় পরমাণু হামলা চালাতে পারবে উত্তর কোরিয়া। অবশ্য এ জাতীয় হামলার কোনো কার্যকারিতা থাকবে না বলেও ধারণা ব্যক্ত করেন তিনি। অবশ্য তিনি বলেন, আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা আইসিবিএমের জন্য কার্যকর পরমাণু ওয়ারহেড উত্তর কোরিয়া তৈরি করতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু নোডোং ক্ষেপণাস্ত্রে বসানোর উপযুক্ত ক্ষুদ্র পরমাণু ওয়ারহেড উত্তর কোরিয়া তৈরি করেছে বলে জানান তিনি। এ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালানো সম্ভব বলে মনে করেন। দ্য সান, পার্সটুডে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ