Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিরাপত্তা বাহিনীতেও বিভক্তি

কাশ্মীরে অশান্তি নিরসনের রণকৌশল নির্ধারণে দিশা পাচ্ছে না দিল্লি

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দ্বিধাবিভক্ত নরেন্দ্র মোদি সরকার, দ্বিধাবিভক্ত নিরাপত্তা বাহিনীও। কাশ্মীরে অশান্তি সামলাতে কী রণকৌশল নেয়া হবে তার দিশা খুঁজে পাচ্ছে না নয়াদিল্লি সরকার। সেনাবাহিনী, আধাসেনা ও রাজ্য পুলিশেও সমন্বয়ে ফাটল ধরেছে। সেনার কম্যান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেখানেও কাশ্মীরের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীকে কীভাবে সংযত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের খবরে বলা হয়, কাশ্মীরে ছররা বন্দুকের বদলে প্লাস্টিক বুলেট ব্যবহার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ছররা বন্দুক ব্যবহার হবে দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে। এই প্লাস্টিক বুলেট ইনস্যাস রাইফেল থেকে ছোড়া যায়। কাশ্মীর উপত্যকার কোনো স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করা যায় কিনা তা নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালসহ শীর্ষ কর্তারা আলোচনা করেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, সেনারা যদি কাশ্মীরি যুবককে জিপের সামনে বেঁধে ঘোরানোর পরেও দুঃখ প্রকাশ না করে তাহলে পুলিশ বা সিআরপি সংযত হলেও কোনো লাভ হবে না। কাশ্মীরি যুবককে জিপের সামনে বেঁধে ঘোরানোর ঘটনায় সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী যে এক সুরে কথা বলছে না তা-ও স্পষ্ট। গণমাধ্যমে বলা হয়, জেনারেল বিপিন রাওয়তের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী এখনো এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছে। সেনাপ্রধান রাওয়ত সোমবার কম্যান্ডারদের বৈঠকে বলেন, সেনাবাহিনীর যে দৃঢ় ভাবমূর্তি ও সুনাম রয়েছে তা আরো জোরদার করতে হবে। ওই ঘটনায় রাজ্য পুলিশ এফআইআর করলেও, সেনাবাহিনী কোনো ‘কোর্ট অফ এনকোয়ারি’র নির্দেশ দেয়নি। শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণভাবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারিভাবে এখনো মোদি সরকার সেনাবাহিনীর পাশেই রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগিও একে সমর্থন জানিয়েছেন। কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় মোদি সরকারের একেক মন্ত্রী একেক সুরে কথা বলছেন। এক মন্ত্রীর যুক্তি, ওই ঘটনায় তরুণ সেনা অফিসার ঠিক কাজই করেছেন। কারণ তিনি ১৫ জনের দল নিয়ে ৯ জন সরকারি ভোট কর্মী, ১২ জন ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের ২ কর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। তাদের উদ্ধার করতে যারা পাথর ছুড়ছিল তাদের মধ্যেই একজনকে জিপের সামনে বেঁধে নিয়ে আসেন। না হলে অনেক রক্ত ঝরত। পাথর ছোড়ার মুখে গুলি চালানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। আর এক মন্ত্রীর যুক্তি, আবেগের সঙ্গে আইনের কোনো সম্পর্ক নেই। কোনোভাবেই সেনা নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না। তার যুক্তি, ফারুক দার নামে ওই যুবক জানিয়েছেন তিনি ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। এই ঘটনার পরে কাশ্মীরের যুবকরা ভোটবিমুখ হয়ে পড়বেন।
আধাসেনা ও রাজ্য পুলিশের কর্তাদের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তাদের যুক্তি, উপত্যকার গলিতে গলিতে পুলিশ-আধাসেনারই সদস্য মোতায়েন থাকেন। সেনা মাঠে নামে জঙ্গি দমন অভিযানে। তাই কাশ্মীরি যুবককে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করার মতো ‘অমানবিক’ আচরণের মূল্য পুলিশ-আধাসেনাকেই হিসেব দিতে হবে। এবিপি, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ