Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আট সপ্তাহের মধ্যে পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের গণভোট নিয়ে মাথাব্যথা শুরু হয়েছে ইউরোপের। তারা এ বিষয়ে খুব শিগগির একটি রিপোর্ট প্রকাশ করার ঘোষণা দিয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের হাতে সর্বময় ক্ষমতা অর্পণের বিষয়ে আয়োজিত গণভোটের রায়কে পরিহাস হিসেবে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। এ গণভোটের ক্ষেত্র সব পক্ষের জন্য সমান ছিল না বলে মত ব্যক্ত করেছেন তারা। এদিকে গণভোটের রায় এরদোগানের পক্ষে যাওয়ায় ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্বনেতৃবৃন্দ। অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ ও কাউন্সিল ফর ইউরোপের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্যবেক্ষক দল আট সপ্তাহের মধ্যে গণভোট সম্পর্কে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। সংবাদ মাধ্যম জানায়, রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ক্ষমতার পরিসর বাড়ানোর বিষয়ে গত রোববার দেশটিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। তুরস্কের আনাদোলু নিউজ এজেন্সির তথ্যমতে, দেশটির মোট ৮৫ শতাংশ ভোটার গণভোটে অংশ নিয়েছেন। এতে এরদোগানের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়ে ৫১ দশমিক ৪১ শতাংশ। এক্ষেত্রে দেশটির প্রবাসী ভোটাররা বিশেষ ভ‚মিকা রেখেছেন। জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও ফ্রান্সÑ এসব দেশে থাকা তুর্কিদের অধিকাংশেরই ভোট এরদোগানের পক্ষে পড়েছে। কিন্তু দেশটির বড় তিন শহর ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা ও ইজমিরে বিজয়ী হয়েছে ‘না’ ভোট। কিন্তু দেশটির অন্য অনেক অঞ্চল এরদোগানের পক্ষে ভোট দেয়ায় সার্বিকভাবে রায় এরদোগানের পক্ষেই এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশটির কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে গণভোটে অল্প কিছু ব্যবধানে এরদোগান জয়ী হওয়ায় দেশটিতে অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে অসম পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে এ গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মত দিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। গণভোট পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত জোট বলছে, দেশটির সংবাদ মাধ্যমে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে জোর প্রচারণা চালানো হয়েছিল। ভোটারদের পক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া সহজ ছিল না। এক্ষেত্রে এমনকি প্রতিবন্ধকতাও তৈরি করা হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, একেবারে শেষ মুহূর্তে গণভোটের নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়। একটি গণতান্ত্রিক গণভোটের জন্য পরিস্থিতি কোনোভাবেই পর্যাপ্ত ছিল না। প্রসঙ্গত, শেষ মুহূর্তে নিরপেক্ষ অবস্থানকে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে মত হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ততক্ষণে প্রায় ১০ লাখ ভোটার কোনো পক্ষ না নিয়েই ব্যালট জমা দিয়েছেন।
ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার গণভোটের এ রায় মেনে নিলেও এর পরিণতি সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। অধিকাংশ দেশই ‘মৃত্যুদÐ’র বিধান ফিরিয়ে আনার পক্ষে এরদোগানের অবস্থান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে গণভোটের মধ্য দিয়ে দেশটিতে যে বিভাজনের রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তার সমাধানেও আহŸান জানিয়েছে সরকারগুলো। এ বিষয়ক এক প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, গণভোটে খুবই অল্প ব্যবধানে সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রায় এসেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান সংশোধন কার্যকরের আগে এ বিষয়ে আরো বৃহৎ পরিসরে জাতীয় জরিপ চালনার জন্য আমরা তুরস্কের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহŸান জানাই। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লদ ইয়ুঙ্কার, ইইউ পররাষ্ট্র-বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মঘেরিনি ও ইইউ এনলার্জমেন্ট কমিশনার জোহানেস হান যৌথভাবে এ বিবৃতি দেন। এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গণভোটের মধ্য দিয়ে তুরস্কের জনগণের মধ্যে বিভাজন সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ