রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে
পৌষে কুশি মাঘে বোল ফাল্গুনে গুটি চৈত্রে আটি বৈশাখে কাটিকুটি জ্যৈষ্ঠে চাটিচুটি আষাঢ়ে ফেলাই আটি শ্রাবণে বাজাই বাশি। অর্থাৎ পৌষ মাসে আম গাছে কুসি হয়, মাঘ মাসে আমের মুকুল হয়, ফাল্গুন মাসে গুটি গুটি আম হয়, চৈত্র মাসে আমের আটি হয়, বৈশাখ মাসে আম কেটে মরিচ দিয়ে মাখায় খাই আর জ্যৈষ্ঠ মাসে আম পাকলে চেটে-চুটে খাই, আষাঢ় মাসে আমের আটি ফেলে দেই আর শ্রাবণ মাসে আমের আটি দিয়ে বাঁশি বাজাই। উক্ত কথাগুলো আমের জেলা সাতক্ষীরার একটি প্রবাদ। এসেছে ঋতুরাজ বসন্তকাল। ফাল্গুনের শুরুতেই আম গাছে মুকুল থাকবে না, ফুলের গন্ধ ছড়াবে না, মৌমাছির দল মধু আহরণে বের হবে না এমনতো হতে পারে না। এখন সাতক্ষীরার সর্বত্র আম্রকাননে মুকুলের ফুটন্ত ডালপালা উঁকি মেরে বের হতে শুরু হয়েছে। আম গাছের মুকুলের সুঘ্রাণে উপচে যাচ্ছে জেলার আকাশ-বাতাস। শীতের সমাপ্তি লগ্নে সাতক্ষীরা জেলার গাছে গাছে ভরপুর হয়ে উঠতে শুরু করেছে আমের মুকুল। জেলায় এবার আমের আবাদ করা হয়েছে ৩৬২১ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বাগানের সংখ্যা ৪২৬৭টি। চাষির সংখ্যা ৯৭৬০ জন। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩৬ হাজার ২১ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৮৮ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে, তালা উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর জমিতে, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর জমিতে, আশাশুনি উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৪০ জমিতে আমের আবাদ করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত আম অনেক সুস্বাদু হওয়ায় আমের কদর রয়েছে পুরো দেশজুড়ে। এই সাতক্ষীরা অঞ্চলের আম দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়েছে অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের বাজারে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, লোকনা, মহনভোগ, ফজলি, আশ্বিনা, রূপালি, মল্লিকাসহ বিভিন্ন প্রকার আমের চাষ হয়। মৌসুমের শুরুতেই আম গাছের মুকুল টেকাতে পরিচর্যার পাশাপাশি ওষুধ স্প্রে করছে আম চাষিরা যাতে মুকুল ঝরে না পড়ে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এই মৌসুমে আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে তারা। এই আম চাষে সাধারণত ব্যক্তি মালিকানার পাশাপাশি লিজে আম গাছ নিয়ে আমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে। আম চাষি সদরের আমিনুর রহমান আলম জানান, এ ব্যাপারে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সচেতনামূলক প্রচারণা সরকারি বেসরকারিভাবে চালালে আম গাছ মহাউন্নয়ন সম্ভবনাময় চাষ হয়ে উঠবে সাতক্ষীরাবাসীর জন্য। তিনি দুই বিঘা জমিতে আমের আবাদ করেছেন। তিনি তার বাগানে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোপালভোগ রুপালি ও মল্লিকার আবাদ করছেন। এখনও তার বাগানে খুবই ভালোভাবে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে তার বাগানে প্রচুর পরিমাণ আম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান জানান, জেলায় এবার ৩৬২১ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আম চাষের ব্যাপারে প্রান্তিক পর্যায়ে তাদের কর্মকর্তারা এবং বেসরকারিভাবে কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আম চাষিদের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবারও স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের বাজারে আম রপ্তানি করা সম্ভব হবে এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।