Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চিলাহাটি-হলদীবাড়ি রেললিঙ্ক চালু হচ্ছে ৫২ বছর পর

| প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ডোমার (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো সীমান্ত রেলওয়ে সংযোগ পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এপারে উত্তরাঞ্চলের চিলাহাটি এবং ওপারে ভারতের হলদীবাড়ির মধ্যে রেলের ইন্টারচেঞ্জ লিংক চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইতোমধ্যে উভয়প্রান্তে পরিত্যক্ত হয়ে থাকা ব্রডগ্রেজ রেললাইন পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫২ বছর ধরে এই সীমান্ত রেলওয়ের ইন্টারচেঞ্জ লিংক বন্ধ ছিল। দুদেশের মধ্যে রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে একটি সীমান্ত রেলওয়ে সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এ পারে যশোরের বেনাপোল ও ওপারে ভারতে পেট্রাপোলের মধ্যে রেল সংযোগ আছে। দিনাজপুরের বিরল সীমান্ত রেলপথে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। চিলাহাটি রেলপথটিও আগামী দুই বছরের মধ্যে চালুর লক্ষ্যে রেললাইন বসানোসহ অবকাঠামো স্থাপনার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। চিলাহাটি রেলস্টেশন নীলফামারী জেলার সীমান্ত এলাকা। ওপারে ভারতের কোচবিহারের হলদীবাড়ি রেলস্টেশন।
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে দুই দেশের মধ্যে এই ইন্টারচেঞ্জ চালু ছিল। প্রতিদিন সকাল ১০টায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ও প্রান্তের হলদীবাড়ি পৌঁছে ভারত গমনের যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বিকেল ৩টায় ফিরতি ট্রেনে এই দেশে আগমনের যাত্রীদের নিয়ে আসত। যাওয়া-আসার সময় চিলাহাটিতে ইমিগ্রেশমন ও কাস্টমস চেকিং হতো।
‘৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধকালে সেপ্টেম্বর সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে ইন্টারলিংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আর চালু হয়নি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে চিলাহাটি-হলদীবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ লিংক চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এই রেলপথ চালু হলে ইন্টারচেঞ্জ ব্যবস্থায় রেল যোগাযোগে ঢাকা থেকে কোচবিহার শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে।
চিলাহাটি অংশে ৭ কিলোমিটার ও ভারতের হলদীবাড়ি অংশে ৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হবে। এই রেলপথ ব্রডগেজের। হলদীবাড়িতে ভারতীয় অংশের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। চিলাহাটি অংশের রেললাইন বসানোর কাজ ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে।
আরেকটি সূত্র জানায়, উপ-আঞ্চলিক রেল সংযোগের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সব পুরাতন রেল সংযোগ চালু করার লক্ষ্যে বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের সঙ্গে চতুর্দেশীয় বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। এতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। এই চার দেশের মধ্যে পর্যটন শিল্পেরও উন্নয়ন হবে। বাংলাদেশে পর্যটক আগমনের সংখ্যা বাড়বে। বাংলাদেশের পর্যটক বর্তমানে স্থলপথের হিলি কিংবা বুড়িমাড়ি দিয়ে ভারত-নেপাল-ভুটানে যায়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিসি) ভারতের কলকাতা ও আগরতলা পর্যন্ত স্থলপথে সরাসরি সংযোগ চালু করেছে। আকাশপথে ভারতের কলকাতা মুম্বাই-চেন্নাই-ব্যাঙ্গালুরে ফ্লাইট চালু আছে। রেলপথে ঢাকা থেকে কলকাতার সরাসরি সংযোগ আছে যশোরের বেনাপোল-বনগাঁর পেট্রাপোল চেক পয়েন্ট হয়ে।
চিলাহাটি-হলদীবাড়ি ইন্টারেচঞ্জ লিংক চালু হলে বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের দুয়ার খুলে যাবে। এতে লাভবান হবে উভয় দেশ। প্রজন্মের মধ্যে স¤প্রীতির মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ