Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিরিয়ায় গ্যাস হামলা : সব হারানো পিতার আহাজারি

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের হামলার পর স্ত্রী ও যমজ শিশুদের বাড়িতে সুস্থ দেখে প্রতিবেশীদের সাহায্য করতে যাওয়া এক পিতা তাদেরসহ পরিবারের ২৫ সদস্যকে হারিয়েছেন। কান্না জড়ানো কণ্ঠে আব্দুলহামিদ আলইউসুফের প্রশ্ন কি দোষ ছিল তার ১০ মাস বয়সী দুই শিশুসন্তান আয়া ও আহমেদের। ইদলিব প্রদেশে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত খান শেইখৌন শহরে মঙ্গলবার সকালে বিমান হামলার পর বাসিন্দাদের প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং মুখ দিয়ে ফেনা উঠতে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সেখানে রাসায়নিক গ্যাস (সারিন গ্যাস) হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’। নিহতদের মধ্যে ২০টি শিশু রয়েছে। ঘটনার বর্ণনায় বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার সকালে খান শেইখৌন শহরে তিনবার বিমান হামলা চালানো হয়। প্রথমবার বিমান হামলার পর স্ত্রী দালাল ও নয় মাস বয়সী যমজ সন্তান আয়া ও আহমেদকে বাড়িতে রেখে পাশেই বাস করা আত্মীয়দের সাহায্য করতে যান আলইউসুফ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে শোনা যায়, আমি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আয়া ও আহমেদকে সুস্থই দেখেছিলাম। কেন এটা হলো? আমি ভেবেছিলাম তারা বাড়িতে ঠিক আছে। এখন তারা আর নেই। দ্বিতীয়বার হামলার সময় আলইউসুফের বাড়িতে নার্ভ এজেন্ট ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে বিবিসি। আলইউসুফ বলেন, প্রথমবার বিস্ফোরণের পর প্রতিবেশীদের সাহায্য করতে তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের বাড়িতে রেখে বাইরে যান। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমি দেখলাম গ্যাস তার কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে। প্রচন্ড শ্বাসকষ্টে লোকজন মারা যাচ্ছে। আমি তাদের সাহায্যে এগিয়ে গেলাম। আমি অসুস্থ মানুষদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করলাম। আমি তাদের রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। রাস্তায় লোকজনকে সাহায্য করতে গিয়ে আমি আর বাড়ি ফিরে যেতে পারিনি। পরে নিজের বাবা-মার বাড়িতে গিয়ে ভাই ইয়াসের এবং তার সন্তানকে মৃত দেখতে পান আলইউসুফ। সে (ইয়াসের) সম্ভবত তার ছেলেকে সাহায্য করার চো করেছিল। তাদের মৃতদেহ একে অন্যের উপর পড়েছিল। আমি তাদের মুখে ফেনা দেখেছি, তাদের শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। এ হামলায় স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা, ভাই এবং ভাইয়ের সন্তানদেরসহ পরিবারের মোট ২২ জন সদস্যকে হারিয়েছেন আলইউসুফ। বিবিসি জানায়, নিজের একজন আত্মীয়কে সাহায্য করার সময় আলইউসুফের শরীরে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব শুরু হয়। শ্বাসকরে এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্ঞান ফেরার পর তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের কথা জানতে চান। প্রথম সবাই বলেছে, তারা জীবিত আছে। পরে তাদের মৃতদেহ আমাকে দেখানো হয়। আমি তাদের বাড়িতে রেখে গিয়েছিলাম এবং তারা ঠিকই ছিল। অথচ তাদের মৃতদেহ আমার কাছে আনা হলো। তারা দমবন্ধ হয়ে মারা গেছে। কেন তাদের হত্যা করা হলো? কেন গ্যাস দিয়ে? আয়া ও আহমেদের কি দোষ ছিল? বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ