টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্বপাড়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পাথাইলকান্দি এলাকায় লালমনি এক্সপ্রেসের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
রাত থেকে ট্রেন বন্ধ থাকায় ঢাকাগামী ৮টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা। এতে প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য ৩ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে বিভাগ। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন এসে ইঞ্জিনসহ ৩টি বগি উদ্ধার কাজ শুরু করে। এতে প্রায় তিনঘণ্টা চেষ্টার পর দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি উদ্ধার কাজ শেষ হয়। কি কারণে ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে সেটি উদ্ঘাটনের জন্য ৩ সদস্যের একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান পশ্চিম অঞ্চল রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) খায়রুল আলম।
অপর দিকে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমে ধূমকেতু এক্সপ্রেস, জামতৈল স্টেশনে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, উল্লাপাড়া স্টেশনে একতা, সিরাজগঞ্জ বাজারে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস, ভাঙ্গুড়া স্টেশনে নীল সাগর, চাটমোহর স্টেশনে সিল্কসিটি ও সরৎনগর স্টেশনে ঈশ্বরদী লোকালসহ মোট ৮টি যাত্রীবাহী ট্রেন আটকা পড়েছে। রাত থেকে প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা আটকে থাকায় এসব ট্রেনের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে।
সুন্দরবন ও ধূমকেতু ট্রেনের যাত্রী অনিক আহম্মেদ, ফজলে হোসেন মিয়া, খালেদা বেগম, আমির হামজা, হাসিনা খাতুন ও রওশনা আক্তার জানান, লালমনি ট্রেনটি বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্বপাড়ে লাইচ্যুতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপশ্চিম পাড়ে আটকা পড়েছি। আমরা শুনেছি লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি এমনিতেই প্রায় অকেজো। অন্যান্য রোডে আধুনিক ট্রেন থাকলেও লালমনি এক্সপ্রেসটি পুরাতন বগি নিয়ে যাতায়াত করছে। যে কারণে এই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে। ট্রেনটির বগিগুলো আধুনিকায়ন না হলে প্রায়ই ঘটবে এমন লাইনচ্যুতের ঘটনা।
পশ্চিম অঞ্চল রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) খায়রুল আলম জানান, লাইনচ্যুত হওয়া লালমনি এক্সপ্রেসের দুটি বগিসহ মূল ইঞ্জিনটি দুপুর ১২টার পর উদ্ধার করা হলে ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য ঢাকার দিকে যাওয়া প্রায় ৮টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে।
বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আছাবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার (বুকিং) রেজাউল করিম জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এরপর থেকে উত্তরবঙ্গের হয়ে ঢাকার চলাচলকারী সব ধরনের ট্রেন বন্ধ হয়ে পড়ে। দুপুর ১২টার পর দুর্ঘটনায় কবলিত ট্রেনটি উদ্ধার করার পর যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।