Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যমুনা চরে বাদাম চাষ ২৫ হাজার পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন

| প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : যমুনা নদী যেমন অভিশাপ তেমনি আশীর্বাদও বটে। যমুনা ভাঙনে মানুষ হয় রিক্ত নিঃস্ব, সর্বসান্ত যেমনি বন্যায় পলি পড়ে সোনার ফসল ফলে হয় আশীর্বাদ যমুনা নদী। নদীতে বিস্তীর্ণ চর। চরের জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ। চলতি মৌসুমে বৃহদাকারে হয়েছে বাদামের চাষ। নদী ভাঙা মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে বাদাম চাষ করে। সঞ্চয় হয়েছে অদম্য শক্তি ও সাহস। তারা মুক্তি পেয়েছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থেকে। সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বিস্তীর্ণ চরে বাদাম চাষ করে চলাঞ্চলের তিন সহস্রাধিক মানুষ সংসারে এনেছে সচ্ছলতা। নদীভাঙন এসব মানুষ অভাব-হতাশাকে পেছনে ফেলে নতুন করে ঘর তুলেছেন, নতুনভাবে অবতীর্ণ হয়েছেন জীবনযুদ্ধে। দারিদ্র্য জয়ী নদী তীরের মানুষেরা এ বছর বাদাম চাষ করে শতভাগ সাফল্য লাভ করেছেন। বাদামের বাম্পার ফলনে তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। নদীপাড়ের মানুষের আশীর্বাদও যমুনা। যমুনা যেমন প্রতি বছর ঘর-বাড়ি গ্রাস করছে তেমনি পলি জমে জেগে ওঠা চরে সোনার ফসল ফলাতেও সমান ভ‚মিকা রাখছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষে যমুনা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয় নদীপাড়ের মানুষের জীবনে। চরাঞ্চলের বালুকাময় বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। যমুনা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজের পর থেকে চরের পরিধি আরো বাড়ছে। শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে বিশাল আকারে চর জেগে উঠেছে। এছাড়া যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক হারে বাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং পুঁজি পেলে বাদাম চাষের পরিধি আরো বিস্তৃতি লাভ করবে বলে কৃষকদের দাবি। চলতি বছর নদীপাড়ের কৃষকরা নানা জাতের বাদাম চাষ করেছেন। এর মধ্যে বাসন্তি, ত্রিদানা, ঝিঙ্গা এবং মাইজচর অন্যতম। এছাড়া বেশ কয়েকজন উন্নত মানের হাইব্রিড জাতের বাদামও আবাদ করেছেন। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা লোকসান পোষাতে এই মৌসুমে আঁটঘাট বেঁধে চরের জমিতে নিরলসভাবে শ্রম ব্যয় করেন। কৃষকের ঘামে আর শ্রমে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এখন বাদাম ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকরা। কৃষকের ঘরে ঘরে পুরোদমে চলছে বাদাম বাজারজাতকরণের কাজ। বাদাম চাষে অভাবনীয় সাফল্যের কারণে খুশির ঝিলিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কৃষাণ-কৃষাণীর চোখেমুখে। যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার জিয়ামোড় এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত ৮ থেকে ১০ বছর আগে যমুনা নদী তার বাড়িঘর গ্রাস করেছে। নদী তাকে সর্বসান্ত করলেও গত ২ বছর ধরে ঐ স্থানে চর জেগে ওঠায় সেখানে তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে তিনি জানান। কৃষিবিদ আরশেদ আলী জানান, সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর চরেই সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষ হয়ে থাকে। এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। ২ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমিতে বাদামের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৩ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যমুনা

৯ মে, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ