মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে আফ্রিকার তিন দেশ দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও নাইজেরিয়া। একই পরিস্থিতি যুদ্ধপীড়িত ইয়েমেনেরও। জাতিসংঘের সবশেষ তথ্য বলছে, ওই চার দেশের তিন কোটি মানুষ রয়েছেন ভয়াবহ খাদ্য সংকটে। দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন এক কোটি মানুষ। বিশ্বজুড়ে এই খাদ্য সংকটের কারণ প্রাকৃতিক নয়, মানুষের সৃষ্টি। একদিকে গৃহযুদ্ধের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট। আরেকদিকে মার্কিন আগ্রাসন। দুইয়ে মিলে এই সংকট তৈরি করেছে। আফ্রিকার সোমালিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেনে চলছে মার্কিন আগ্রাসন। নাইজেরিয়া আর দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধের ভয়াবহতা ও মার্কিন আগ্রাসন। এর বাইরে রয়েছে খরার প্রকোপ। দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে খরা আর এল নিনোকেও দায়ী করা হচ্ছে। তবে এই কথিত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর নেপথ্যেও রয়েছে মানুষের ভূমিকা, শিল্পোন্নত দুনিয়ার কার্বন পোড়ানোর মুনাফাবাজি। মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেনে দুই বছরের চলমান গৃহযুদ্ধ থামছে না কোনোভাবেই। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সৌদি জোটের বিমান হামলাও অব্যাহত। জাতিসংঘের মতে, দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দেশটি। দুর্ভিক্ষের হুমকিতে রয়েছে দেশটির অন্তত ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ। ২১ লাখ শিশুসহ অন্তত ৩৩ লাখ মানুষ ভুগছেন অপুষ্টিতে। ৫ বছরের নিচের ৪ লাখ ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। মোট নাগরিকের ৫৫ শতাংশই ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। যত দিন যাচ্ছে, অবস্থা ততই শোচনীয় হয়ে পড়ছে। ইয়েমেন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে ১ কোটি ৯০ লাখ নাগরিকের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। যা দেশটির মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি। অর্ধেকেরও বেশি মানুষের চিকিৎসা সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। দক্ষিণ সুদানের ইউনিটি স্টেটের ২টি কাউন্টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির সরকার ও জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা মিলিতভাবে এ ঘোষণা দেয়। গত ৬ বছরের মধ্যে এটাই বিশ্বের কোথাও দুর্ভিক্ষ ঘোষণার প্রথম ঘটনা। জাতিসংঘ বলছে, দক্ষিণ সুদানে এক লাখ মানুষ খাদ্যাভাবের মধ্যে রয়েছেন। আরো এক লাখ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। জাতিসংঘের মতে, দেশটির ৪০ লাখ লোকের জরুরি খাদ্য, কৃষি ও পুষ্টি সহায়তা প্রয়োজন। যা দেশটির জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি মানবিক বিপর্যয়ে রয়েছে। হাজারো মানুষ সেখানে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে রয়েছেন। তাদেরও জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ডিসেম্বর মাসে ৭৫ হাজার শিশু খাদ্যাভাবজনিত মৃত্যুঝুঁকিতে ছিল। নাইজেরিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আরো ৭০ লাখ মানুষ খাদ্য অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, সমগ্র শাদ হ্রদ অঞ্চলকে সংকট থেকে উদ্ধার করতে অন্তত ১৫০ কোটি ডলার প্রয়োজন। যার অর্ধেকের বেশিই প্রয়োজন ধুঁকতে থাকা নাইজেরিয়ার জন্য। নয়তো গ্রেফ খাদ্যাভাবে মারা যাবেন কয়েক লাখ মানুষ। আর সোমালিয়া গত ২৫ বছরের মধ্যে টানা তৃতীয়বারের মতো দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ল। সবশেষ ছয় বছর আগে ২০১১ সালের দুর্ভিক্ষে দেশটিতে অন্তত ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ মারা যায়। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির হিসেব বলছে, সোমালিয়ার ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি। পানি সংকটে আছেন প্রায় ৬২ লাখ মানুষ। দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির কারণে আফ্রিকার ওই তিনটি দেশ ও ইয়েমেনে প্রায় দুই কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ওব্রেইন। স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। ফেব্রæয়ারির শেষের দিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান ও ইয়েমেনে ক্ষুধা বিপর্যয় এড়াতে মার্চের শেষ নাগাদ কমপক্ষে ৪.৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এএফপি ও রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।