Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছুটির দিনে নিত্যপণ্যের দাম হয় লাগামহীন

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রাজধানীর নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারগুলোতে সপ্তাহের অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার সব ভোগ্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ায় ব্যবসায়ীরা। ছুটির দিনে বেশির ভাগ চাকুরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনীয় সব জিনিস কিনতে আসেন বাজারে। আর এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে দ্রব্যের দাম লাগামহীন করে দেয়। তবে ওই সব চক্রের লাগাম টেনে ধরার মতো কেউ নেই বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা।
ক্রেতারা বলছেন, ছুটির দিনে বাড়াতি দাম নেয়া ব্যবসায়ীদের রুটিনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তদারকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় ভোগ্যপণ্যের জন্য তারা বাড়তি দাম দিতে বাধ্য বলেও মন্তব্য করেছেন। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি দামের উপরই চলমান বাজারমূল্য নির্ভর করে। বাস্তবে দেখা গেছে, পাইকারি ও খুচরা বাজারে দ্রব্যের দামের কোনো মিল নেই। খুচরা বাজারে সব দ্রব্যের দাম লাগামহীন।
হাতিরপুল বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কেনাকাটা করতে এসেছে সরকারি চাকরিজীবী নিলয়। এ বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কিছুটা নিম্নমুখী থাকে। তবে শুক্রবার এলেই সব কিছুর দাম আবার বেড়ে যায়। তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিন আগেও আমি বাজারে এসেছিলাম; তখন আজকের দামের তুলনায় প্রায় সব সবজিতে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে কেনাকাটা করেছি।
ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনে কাঁচাবাজারসহ সব পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকে। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল, পলাশী বাজারসহ কয়েকটি বাজার পর্যবেক্ষণ করে ক্রেতাদের এই অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছিল ১৬৫ টাকায় আর লেয়ার মুরগির দাম রাখা হচ্ছিল ১৯০ টাকা দরে। তবে ছুটিরদিন বাদে অন্য দিন ওই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা দরে। এছাড়া অন্যান্য গোসতেও ছুটির দিনগুলোতে কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেশি রাখা হয়। আগের বাড়তি দামেই গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে অন্যান্য দিনের তুলনায় সবজির দামও কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা করে বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়। গকাল যে টমেটো কেজি প্রতি ৫০ টাকা নেয়া হয়েছে। অন্যান্য দিন ওই সবজি ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একই ভাবে গকাল চিচিঙ্গা ৬৫ টাকা, করলা ৭০ টাকা ও কাকরোল ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু অন্য দিন ওই সবজিই গুলো কেজিতে ৫-১০ টাকা কম ছিল।
এদিকে সবজির বাজারে সাদা বেগুন বিক্রি ৬০ টাকা, কালো বেগুন ৫০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, শশা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ২০ টাকা, চাল কুমড়া ২৫ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম রাখা হয় ৮০ টাকা। এছাড়া কেজি প্রতি আলু ২০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতিটি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ১৫ থেকে ২৫ টাকা। পালং শাক আঁটি প্রতি ১৫ টাকা, লালশাক ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে মুদিপণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা কমেছে। লিটার প্রতি ১ টাকা করে কমে আজকের বাজারে ৫ লিটারের বোতল ব্র্যান্ড ভেদে ৪৯৫ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি লিটার ভোজ্য তেল ১০০-১০৫ টাকায় দরে বিক্রি হয়। তবে অন্য সব মুদিপণ্য গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি মসুর ডাল ১৩০ টাকা ও ভারতীয় ১০০ টাকা, মুগ ডাল দেশি ১২০ টাকা ও ভারতীয় ১১০ টাকা, মাসকলাই ১৩৫ টাকা এবং ছোলার ডাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২৮ টাকা ও ভারতীয় ২২ টাকা, দেশি রসুন ৯০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৯০ টাকা ও চীনা রসুন ১৮০ টাকা, দেশি আদা ১৩০ টাকা, চীনের আদা ৭০ টাকা, ক্যারালার আদা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারেও তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। কেজি প্রতি স্বর্ণা চাল ৪০ টাকা, পারিজা চাল ৪০-৪১ টাকা, মিনিকেট ৫০-৫৩ টাকা, মিনিকেট নরমাল ৪৮ টাকা, বিআর২৮ ৪২-৪৪ টাকা, নাজিরশাইল ৪২-৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৪-৭৬ টাকা, হাস্কি নাজির চাল ৪০ টাকা এবং পোলাও চাল ১০০ (পুরাতন), নতুন ৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৩০-১৮০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ