Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ব্রেক্সিট আলোচনা

| প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ষাট বছরের মধ্যে প্রথম কোনো সদস্য রাষ্ট্রের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ
ইনকিলাব ডেস্ক : ইইউর ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সদস্য রাষ্ট্র জোট ত্যাগ করছে। ইইউকে পাঠানো চিঠিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ডের অবস্থান সম্পর্কে ব্রিটেনের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন টেরিসা মে। ঐতিহাসিক এ চিঠির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বিশেষ অংশীদারিত্ব। ব্রেক্সিটপন্থীদের কঠোর অবস্থান সত্তে¡ও ভবিষ্যতে ইইউর সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে চায় ব্রিটেন। চিঠিতে মে জানান, ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ইইউ-যুক্তরাজ্য বিশেষ অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় ব্রিটিশ সরকার। গোটা ইউরোপের সুরক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, স্নায়ুযুদ্ধের পর এ প্রথম অঞ্চলটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এ কারণে জোটের সঙ্গে অর্থনীতির পাশাপাশি নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে ব্রিটেন আগ্রহী। অপরদিকে রয়েছে ইইউ নাগরিকদের অবস্থানগত ইস্যু। গণভোটের পর থেকেই ব্রিটেনে বসবাসরত ৩০ লাখ ইইউ নাগরিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতিতে রয়েছেন ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশে বসবাসরত ১০ লাখ ব্রিটিশ। চিঠিতে মে বলেন, নাগরিকদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের বিষয়টি ব্রেক্সিট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই জোটের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছতে চায় ব্রিটেন। তাছাড়া রয়েছে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট প্রসঙ্গ। মন্দ চুক্তির চেয়ে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটই শ্রেয়। এত দিন এ কথা বললেও ব্যবসায়ী নেতারা চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করায় ব্রাসলসকে পাঠানো চিঠিতে সুর পাল্টেছেন মে। ইইউর সঙ্গে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ মানে সব পণ্য বাণিজ্যের ওপর চড়া শুল্কারোপ। মে বলেন, ইইউ ও ব্রিটেন উভয় পক্ষই চুক্তিবিহীন ভবিষ্যতের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। তবে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব কোনো পক্ষের জন্যই কাম্য নয়। তিনি আরো বলেন, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ইইউ-ব্রিটেনের একত্রে কাজ করার সুযোগও কমিয়ে দেবে। তাই এমন পরিস্থিতি এড়াতে ব্রিটেন সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে। ইইউর সদস্য রাষ্ট্র রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড ও গ্রেটব্রিটেনভুক্ত উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত দেয়ালের বিষয়ে চিঠিতে গুরুত্বারোপ করেন মে। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত কড়াকড়ি এড়াতে চান তিনি। ব্রিটেনের জোট ত্যাগের সিদ্ধান্ত রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডকে প্রভাবিত করবে না, তা নিশ্চিত করতে চান টেরিসা মে। তিনি বলেন, উত্তর আয়ারল্যান্ডের শান্তি প্রক্রিয়া অক্ষুণœ রাখা ব্রিটেনের দায়িত্ব। ব্রেক্সিট দ্বারা বেলফাস্ট চুক্তিকে প্রভাবিত করতে চায় না ব্রিটেন। স্কটল্যান্ডের ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট আলোচনা শুরুর মাত্র একদিন আগে স্বাধীনতা প্রশ্নে দ্বিতীয় দফা গণভোট আয়োজনের পক্ষে ভোট প্রদান করেছে স্কটিশ পার্লামেন্ট। এদিকে চিঠিতে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে স্কটল্যান্ডকে নতুন করে ক্ষমতা প্রদানের কথা জানান মে। স্কটল্যান্ডের পাশাপাশি উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলসকেও নীতিনির্ধারণী ক্ষমতা প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া ব্রেক্সিট আলোচনার সঙ্গে একই সময় জোট ও ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী ব্রিটেন। আগামী দুই বছর জোট ত্যাগের শর্তাবলি বিষয়ে আলোচনার সময় সমান্তরালে ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্বের বিষয়টিও চূড়ান্ত করা উচিত বলে মনে করেন মে। ইইউর লিসবন চুক্তির ৫০ ধারা অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু করেছে ব্রিটেন। আলোচনা সম্পন্ন করে জোট ত্যাগ করতে দুই বছর সময় লাগবে দেশটির। এ সময় ইইউ-ব্রিটেনের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নতুন চুক্তি করতে চান মে। এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ