পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা : আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কখনও জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। জঙ্গিরা ইসলামকে হেয় করছে। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মান-সম্মান নষ্ট করছে। এ ব্যাপারে ইমাম, ধর্মীয় পণ্ডিতসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল বিকালে ফরিদপুরের জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে।
দেশে সংঘটিত জঙ্গিবাদী কর্মকান্ডের বিষয়কে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসলাম আত্মহননের পথ বেছে নেয়া কখনো সমর্থন করে না। এই জঙ্গিবাদ ইসলামকে বিশ্বব্যাপী হেয় করছে। মুসলমানদের মান-সম্মান নষ্ট করছে। এ ব্যাপারে প্রত্যেককে সোচ্চার হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সে ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখবেন। আপনাদের সন্তানদেরকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের পথ থেকে রক্ষা করবেন।’ এ সময় তিনি স্কুল-কলেজে কোন কোন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকছে সে ব্যাপারে শিক্ষকদের সতর্ক থাকতে বলেন।
ফরিদপুরবাসীর উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের জন্য আজ অনেক উপহার নিয়ে এসেছি। এই এলাকা সব সময় অবহেলিত ছিল। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ফরিদপুরে কোনো সরকার উন্নয়ন করেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে এখানে সব ধরনের উন্নয়ন বন্ধ ছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে ফরিদপুরের সব উন্নয়ন করেছি।’
ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ঢাকাকে ভেঙে ময়মনসিংহ বিভাগ করেছি। ঢাকাকে ভেঙে নতুন আরেকটি বিভাগ হবে। ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর নিয়ে বিভাগ করা হবে। এ ব্যাপারে আমাদের পরিকল্পনা আছে।’ তবে কি নামে বিভাগে হবে সেটি তিনি সুস্পষ্ট কোনো নাম প্রকাশ করেননি ।
প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনেও ফরিদপুরের চারটি আসন আওয়ামী লীগকে উপহার দিতে আহŸান জানান। এ সময় তিনি উপস্থিত জনতাকে হাত তুলে নৌকায় ভোট দেয়ার অঙ্গীকার নেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষ কিছু পায়। এদেশের যত অর্জন সব আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে।’ এ সময় তিনি বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা উল্লেখ করেন। বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ফরিদপুরবাসী জানেন ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর চালিয়েছিল হত্যা-নির্যাতন। সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল।’ এ সময় তিনি বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের খুন হওয়া নেতাকর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তারা একদিকে ধর্মের কথা বলে, অন্যদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারে, পবিত্র কোরআন পোড়ায়। হরতাল-অবরোধের নামে দেশবাসীকে জিম্মি করে।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি এয়ার কন্ডিশন রুমে বসে হুকুম দেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে নাকে খত দিয়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়।’
বিএনপির আমলের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মুরুব্বি আছে তাদের মনে থাকার কথা, জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর ৪০ দিন পর্যন্তু টিভিতে শুধু দেখানো হয়েছে ভাঙা সুটকেস। পরে সেই ভাঙা সুটকেস জাদুর বাক্সে পরিণত হয়। মানুষের টাকা লুট করে খালেদা ও তার ছেলেরা বিশাল সম্পদের মালিক হন।’ প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নিজের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরেন। পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র পাল্টে যাবে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, এলজিআরডিমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. দীপু মনি, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাড. মোল্লা আব্দুর কাউছার, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়রাম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার আগে রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রংয়ের সাজে সেজে তাদের প্রিয় নেত্রীকে দেখতে আসে। বঙ্গবন্ধু কন্যার ভাষণের শেষদিকে প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হলেও নেতাকর্মীরা তার বক্তব্য ধৈর্য ধরে শুনতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে এসেই ২০ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং ১১টি প্রকল্প ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।