পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে সবচেয়ে বড় বাধা ২০ দলীয় জোট। গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘জঙ্গিবাদ নির্মূল আমাদের করণীয়’ সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
ড. হাছান তার বক্তৃতায় দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ভারতে জঙ্গি হামলা হলে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল সেটিকে জাতীয় দুর্যোগ মনে করে তা মোকাবিলার জন্য সরকারের পাশে দাঁড়ায়, আর আমাদের দেশে আমরা দেখি, জঙ্গিদেরকে একটি বড় রাজনৈতিক দল থেকে তোষণ ও পোষণ করে রাজনৈতিক মিত্র এবং সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং তাদেরকে জঙ্গি তৎপরতার জন্য সাহায্য করা হয়, যা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। এমনকি ২০ দলীয় ঐক্যজোটে সম্পৃক্ত এমন নেতাও রয়েছেন যারা জঙ্গিবাদের ওপর আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং তাদের স্লোগান- আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা যে হাওয়া ভবন, তারেক রহমান এবং তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছিল, তা আজ আদালতে প্রমাণিত। মর্মান্তিক বিষয় যে, ২১আগস্টে গ্রেনেড হামলা নিয়ে তৎকালীন সংসদে হাস্যরসও করা হয়েছে। বাংলা ভাই’কেও তারা ‘বাংলা ভাই’ হয়ে ওঠার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বিএনপি।
মন্ত্রী বলেন, ঠিক এইভাবে ২০ দলীয় ঐক্যজোট ক্রমাগতভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য জঙ্গিবাদীদের ব্যবহার করেছে এবং যখনই জনগণের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত আওয়ামী লীগ সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তখনই তারা এর বিরোধিতা করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ৭৬ কেজি বোমা পুঁতেও হত্যার চেষ্টা হয়েছে। সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, শামীম ওসমানসহ আওয়ামী লীগের বহু নেতাসহ আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ওপর জঙ্গি হামলা করা হয়েছে। ২০০৫ সালের ১২ আগস্ট বাংলাদেশের ৬৩টি জেলায় একসাথে বোমা হামলা করা হয়েছে। এ সমস্ত কিছু মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে শান্তি ও উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।
জঙ্গিবাদকে বিশ্বব্যাপী সমস্যা বলে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,নিউজিল্যান্ডের মতো শান্তিপূর্ণ দেশে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় মানুষের ওপরে হামলা করে নির্বিচারে হত্যা ও তার সরাসরি ভিডিও স¤প্রচার,শ্রীলঙ্কায় হোটেল এবং গীর্জায় নৃশংস বোমা হামলা, যেখানে আমাদের শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ানের মতো শিশুও নিহত হয়েছে, এমন জঙ্গিবাদী ঘটনা আমাদের মর্মাহত করে। কিন্তু একথা সত্য যে, বিশ্বের উন্নত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশি সফল হয়েছেন। তার নেতৃত্বে আমরা জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদকে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।
মন্ত্রী ড. হাছান তার নিজের জীবনের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ছাত্র শিবির আমাকে দু’বার ধরে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। একবার রটেই যায়, আমি নিহত হয়েছি। আর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার চল্লিশটি স্পিন্টার এখনো আমার শরীরে। আরো হাজারো স্পিন্টার শরীরের বহন করে ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছেন আরো অনেকেই, মহিলা আওয়ামী লীগের অনেক এমন সদস্যও রয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী এসময় জঙ্গিবাদ নির্মূলে সমাজ ও সংস্কৃতির ভূমিকাকে প্রধান্য দিয়ে বলেন, ‘শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল সম্ভব নয়। পারিবারিক শিক্ষা ও বন্ধনকে দৃঢ়তর করা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে শিশু কিশোরদের অধিক সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূণ।
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিকী, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত প্রধান আলোচক এবং অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা ওয়াহিদ ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে জঙ্গিবাদ নির্মূল আমাদের করণীয় শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিলা আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।