পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : মৌলভীবাজার ও কুমিল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পৃথক তিন বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। এর মধ্যে মৌলভীবাজার সদরে দুটি এবং কুমিল্লায় একটি বাড়ি রয়েছে। এদিকে গতকাল সন্ধ্যার পর মৌলভীবাজারের একটি সন্দেহভাজন আস্তানায় অভিযান শুরু করেছে পুলিশের সোয়াত টিমের সদস্যরা।
সোয়াতের অভিযান শুরু
মৌলভীবাজার জেলা ও শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দুটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান শুরু করেছেন আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে পুলিশ ওই বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। গতকাল ভোররাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট এলাকায় ও সদর উপজেলার ফতেপুর এলাকায় ঘেরাও করে রাখা দুটি বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী সাইফুর রহমান।
ফতেহপুর এলাকার জঙ্গি আস্তানার পাশে ভোর রাতে পুলিশ অবস্থান নেয়। সকাল ৭টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশকে লক্ষ করে বোমা ছুড়ে মারা হয়। পুলিশ পিছনে এসে গুলি ছোড়ে। এরপর থেকে ভেতর থেকে কয়েক দফা গুলি ও বোমা ছোড়া হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই দিক থেকে থেমে থেমে গুলি হচ্ছে।
এদিকে বড়হাটে সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নির্মাণাধীন তিন তলা ভবন পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। এই এলাকা দিয়ে কাউকে যাতায়াত করতে দেয়া হচ্ছে না। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে পুলিশ না জঙ্গিরা গুলি করেছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। বড়হাটের জঙ্গি আস্তানা থেকে ফতেপুরের বাড়িটি প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
উপস্থিত লোকজন জানান, মৌলভীবাজার-সিলেট সড়ক থেকে বাসাটির অবস্থান দেড়শ’ গজ ভেতরে। সরু গলি হওয়ায় সেখানে পুলিশ, র্যাব ও বিশেষ বাহিনীর লোকজন ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বাইরে থেকে মানুষ ভেতরে গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
সারা জেলার পুলিশ ছাড়াও র্যাব পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ডিজিএফআই পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। এদিকে মৌলভীবাজার শহরের প্রতিটি প্রবেশ মুখে পুলিশের চৌকি বসানো হয়েছে। শহরে প্রবেশমুখী যানবাহনে তাল্লাশি করা হচ্ছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।
পুরো শহর জুড়ে শুরু হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি নজরদারি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও প্রবেশ দ্বারগুলোতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও র্যাব। সন্দেহ হলে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। শহরের ঢাকা সিলেট সড়কের দু’পাশের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। মাইকে ঘোষণা হচ্ছে বাসার লোকজন যেন নিরাপদে ভেতরে অবস্থান করেন এবং ছাদে না উঠেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ড ও কুসুমবাগ এলাকা থেকে উপজেলা পরিষদের সম্মুখ পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের উভয় পাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এছাড়া ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানার বাড়ির ২ কিলোমিটার জুড়েও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সকাল থেকে থেমে থেমে বোমা ও গুলির শব্দ শহরের বড়হাট ও সদর উপজলার খলিলপুর ইউনিয়নের ফতেপুরে জঙ্গি আস্তানায় শোনা গেলেও দুপুর ২টার পর এ ধরনের শব্দ শোনা যায়নি।
এদিকে ফতেপুরের জঙ্গি আস্তানার বাড়ি ঢাকা থেকে আসা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও সোয়াটের একটি টিম সন্ধ্যার পর অভিযান শুরু করে।
কুমিল্লায় ভোটকেন্দ্রের কাছাকাছি জঙ্গি আস্তানা
কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার সদর দক্ষিণের কোটবাড়ির গন্ধামতির দক্ষিণ বাগমারা গ্রামের আরমানী নামের একটি তিনতলা ভবনে জঙ্গির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশের কাউন্টার টেরিজম ইউনিটের সদস্যসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। গতকাল (বুধবার) দুপুরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য ওই বাড়িটির আশপাশে অবস্থান নেয়। রাত আটটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেনের ভাই সাদ্দাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে। এদিকে সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের ১৮ঘন্টা আগে নির্বাচনী এলাকায় এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন ভোট শেষ হওয়ার আগে ওই এলাকায় কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে না। কিন্তু ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত জায়গাটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা কর্ডন করে রাখা হবে।
সউদি প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের আরমানি নামের তিনতলা বাড়িটি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে। বাড়িটির কাছাকাছি গন্ধামতি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে আজ অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনের ৯৩নং ভোটকেন্দ্র। বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা ধারণা করছি ওই বাড়িতে কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে এবং তাদের কাছে বোমা, বিষ্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছে। অভিযান চালানোর ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এদিকে গন্ধামতির এ খবরে ওই এলাকার ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশপাশের বাড়িঘরের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।