নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : ডাম্বুলায় ওডিআই ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরির দিনটি লংকান অধিনায়ক থেরাঙ্গার এক দিবসীয় ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরির ম্যাচও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিশততম ম্যাচে থেরাঙ্গা উদযাপন করেছেন ফিফটি (৬৫)। মাইলস্টোন ভেন্যুতে বাইন্ডার দিয়ে হাঁটু বেঁধে বোলিং করে সাকিবকে টপকে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে উইকেট শিকারে সবার উপরে উঠে ম্যাজিক ফিগারে (২২২) মাশরাফি। যে ভেন্যুতে আগের ৪৮ ম্যচে ৩’শ প্লাস দেখেছে বিশ্ব মাত্র ২টি ইনিংস। সেই ভেন্যুতে উপর্যুপরি ২ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করে তিন’শ প্লাসে দর্শকদের পয়সা উসুল হয়েছে। ডাম্বুলায় ওয়ানডে ম্যাচের সুবর্ণ জয়ন্তীতে এক দিবসীয় ক্রিকেটে অভিষেক সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন শ্রীলংকা টপ অর্ডার কুশল মেন্ডিজ (১০২)। তবে এই ভেন্যুটিকে অনেক বেশি স্মরণীয় করে রেখেছেন বাংলাদেশ পেস বোলার তাসকিন। ডাম্বুলায় শ্রীলংকার কেউ পারেনি যা, তা পেরেছেন তাসকিন। এই ভেন্যুর প্রথম হ্যাটট্রিকে রচনা করেছেন ইতিহাস। ইনিংসের শেষ ওভারে পর পর ৩ বলে (৩য়,৪র্থ,৫ম) গুনারতেœ, লাকমাল, নুয়ান প্রদীপকে ফিরিয়ে দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে ৪১তম এবং বাংলাদেশের ৫ম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন তাসকিন।
শ্রীলংকার মাটিতে ৩০০ চেজ করে জেতার অতীত নেই কারো। জিততে হলে করতে হবে রেকর্ড। এমন এক ম্যাচে শ্রীলংকার ৩১১ চেজ করে নতুন ইতিহাস রচনার স্বপ্ন বাংলাদেশকে দেখিয়েছে উইকেট, আউটফিল্ড। তবে এই ভেন্যুতে সব আলোচনা ছাপিয়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হয়ে গেছে বেরসিক বৃষ্টি! মুষলধারে বৃষ্টি বাংলাদেশকে দিতে দেয়নি জবাব। স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছে ম্যাচটি। ফলে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের। সিরিজ হারের শঙ্কা এখন আর নেই, তবে শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ সমতার সুযোগ আছে শ্রীলংকার।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে সিরিজে ফিরতে এই ম্যাচে বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও হতে চেয়েছে লংকান ব্যাটসম্যানরা। ২য় উইকেট জুটির ১১১, তৃতীয় জুটির ৮৩ এবং ৫ম জুটির ৫৫ রানে বাংলাদেশ বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছে শ্রীলংকা। বাংলাদেশ বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে’র ৩০ ওভারে ১৮৭ রানে বড় ধরনের শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল স্বাগতিকরা। কুশল মেন্ডিজের নেতৃত্ব দেয়া এই পর্বে মুস্তাফিজ এক ওভারে খরচা করেছেন ২০ রান। তাকে পর পর ২ বলে সুইপ শটে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা এবং কভার দিয়ে বাউন্ডারি মেরেছেন কুশল মেন্ডিজ। গল টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে (১৯৪) বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলা ২২ বছর বয়সী এই তরুণ গতকাল ওয়ানডে ক্যারিয়ারে উদযাপন করেছেন প্রথম সেঞ্চুারি (১০২)। তার চওড়া ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার স্বপ্ন অবশ্য পূরণ হয়নি শ্রীলংকার। শেষ পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ৭৬ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা ৬ উইকেট।
নিজের বলে ফলো থ্রুতে নেয়া কাকতালীয় ক্যাচে তাসকিন ফিরিয়েছেন ম্যাচে বাংলাদেশকে। ইনিংসের মাঝপথে বোলিংয়ের দায়িত্ব পেয়ে প্রথম স্পেলে (৭-০-৩৩-১) দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। সেঞ্চুরিয়ান কুশল মেন্ডিজকে (১০২) ফিরিয়ে দিয়ে সøগে শ্রীলংকাকে ভয়ঙ্কর হতে দেননি তাসকিন। তাসকিনের শেষ স্পেলটাই (১.৫-০-১৪-৪) রান পাহাড়ে চাপ পড়ার শঙ্কা থেকে বাঁচিয়েছে বাংলাদেশকে। ৫০তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি অধিনায়কের হাততালি পায়নি। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে ফুলটস ডেলিভারিতে গুনারতেœর হাতে ফাইন লেগে বাউন্ডারি দেখে মাশরাফি একটু বিরক্তই হয়েছিলেন। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শেষ ৪ ডেলিভারিতে তার করণীয় কি। অধিনায়কের টিপস পেয়ে পরের তিন ডেলিভারিতে হয়ে গেলেন তাসকিন ইতিহাস। ওভারের তৃতীয় বলে মিড অফে ঠিক বৃত্তের উপরে সৌম্যের হাতে সঁপে দিলেন গুনারতেœ ( ৩৯)। পরের বলটি ফুলটস ডেলিভারি দিয়েই সফল তাসকিন, মিড উইকেটে মুস্তাফিজুরের হাতে বন্দি লাকমাল (০)। হ্যাটট্রিক ডেলিভারিটিতে কাউকে অবদান রাখার সুযোগ দেননি। অসাধারণ ইয়র্কারে নুয়ান প্রদীপকে বোল্ড আউটের সঙ্গে সঙ্গে হ্যাটট্রিক আনন্দে ডাম্বুলায় মেতেছেন তাসকিন।
তাসকিনের ইতিহাসময় দিনে মুস্তাফিজুরের ‘নো’ বলে শর্ট ফাইন লেগ থেকে বোলারস এন্ডের স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে মাহামুদুল্লাহ’র সরাসরি থ্রোতে থেরাঙ্গাকে রান আউটে ফিরিয়ে দেয়া, কুশল পেরেরা এবং তিসারা পেরেরাকে রান আউটে মুশফিক কেটে দিয়ে কিংবা উইকেট কিপিং পজিশন থেকে স্কোয়ার লেগ পজিশন দৌড়ে যেয়ে গুনাতিলাকার ক্যাচটি নিয়ে অন্য এক বাংলাদেশ হাজির এদিন ডাম্বুলায়। তবে বিচ্ছিন্ন এসব পারফরম্যান্স ছাপিয়ে তাসকিনের হ্যাটট্রিক, বিদেশের মাটিতে সেরা বোলিং (৪/৪৭) সব আলোচনার ঊর্ধ্বে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।