পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের শিববাড়ির ‘আতিয়া মহল’ নামক পাঁচ তলা ভবনটিতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তৃতীয় দিনের মতো জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। গতকাল (সোমবার) সকাল থেকে সেখানে থেমে থেমে গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিগ্রেডিয়ার রোববার বিকেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানিয়েছেন, আতিয়া মহলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সফলতা না আসা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখবেন তারা। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভিতরে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকার দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারছেন না ওই ভবনের উদ্ধার পাওয়া (সেনাবাহিনীর তৎপরতায়) বাসিন্দাদের অনেকেই। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরও ওই ভবনে আর ফিরতে চান না অনেকেই। তাদের মধ্যে রয়েছেন আতিয়া মহলের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও শিরিন আক্তার দম্পতি। বিবিসি বাংলাকে তারা বলেছেন, ‘জঙ্গি-বিরোধী এই অভিযান এক সময় শেষ হবে, বাড়িটা থেকে জঙ্গি ও বিস্ফোরকও খালি করা হবে। সবই হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ঐ বাড়িতে আটকে থাকার সময়ে এত দুঃসহ স্মৃতি ও ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে, যে সেখানে আর বসবাস করা সম্ভব না।’
তারা জানিয়েছেন, গোলাগুলির শব্দে তারা ধরে নিয়েছিলেন যে, ভবনটি থেকে আর জীবিত বের হতে পারবেন না তারা। তারা মারা গেলে মৃতদেহের পরিচয় যেন নিশ্চিত হতে পারে সবাই, সেজন্য আটকে থাকা অবস্থায় নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়েছিলেন পুরোটা সময়।’
সেই দুঃসহ ও ভয়ার্ত স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে শিরিন আক্তার তার স্কুল পড়ুয়া শিশুকন্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানিয়েছেন, বাবা-মাকে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে থাকতে দেখে তাদের শিশুকন্যা তাকে প্রশ্ন করেন, ‘মা আমার তো পরিচয়পত্র নাই, আমার কি হবে? আমাকে কি মেরে ফেলবে?’ শিরিন জানান, মেয়ের এই প্রশ্নের পর তিনি সম্পূর্ণভাবে অসহায় বোধ করতে শুরু করেন। এই দম্পতি আরো জানিয়েছেন, ভবনটি ঘিরে ফেলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যখন মাইকে মর্জিনা বেগমকে বের হয়ে আসতে বলছিলেন, তখন তারা বুঝতে পারছিলেন না কাকে ডাকা হচ্ছে। কারণ, ওই ভবনের সব বাসিন্দাকে ভালোভাবে চিনেন না তারা।
শিরিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলেও আর কখনো আতিয়া মহলে ফিরতে চান না তিনি বা তার পরিবার। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর শঙ্কায় ৩০ ঘণ্টা কাটিয়ে আসার পর ঐ বাড়িতে আর দৈনন্দিন জীবন-যাপন করা সম্ভব নয়। একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন ওই ভবনের পঞ্চম তলার বাসিন্দা আনিসুর রহমান।
তিনি জানিয়েছেন, আটকে থাকার পুরো সময়টাতে ফ্ল্যাটের মেঝেতে লেপ আর তোষক ফেলে শুয়েছিলেন তিনি ও তার স্ত্রী। ভেবেছিলেন, অভিযানে জঙ্গিদের সাথে তারাও মারা পড়বেন। আনিসুর রহমান বলেছেন ‘শুক্রবার রাতে প্রতি মুহূর্তের গোলাগুলির শব্দে ভেবেছি মৃত্যু আমার দরজায় কড়া নাড়ছে। মৃত্যু আসন্ন জেনে প্রায় সব আত্মীয়কে ফোন করে কথা বলে নিয়েছিলাম।’
শনিবার সকাল ১০ থেকে ১১টার দিকে, যখন তার দরজায় টোকা পড়ে, উঁকি দিয়ে দেখেন দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন সেনা সদস্যরা। ইশারায় চুপ থাকতে বলে একে একে তাদের বের করে নিয়ে আসে সেনা সদস্যরা। সেনা বাহিনীর তৎপরতায় সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও আতংক কাটেনি আনিসুর রহমানের। স্ত্রীকে নিয়ে চলে গেছেন সিলেট শহরে। তিনি জানিয়েছেন, আর কখনো ফিরতে চান না আতিয়া মহলে। সব স্বাভাবিক হয়ে গেলেও না। সূত্র: বিবিসি বাংলা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।