পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : সিলেটে জঙ্গি হামলায় নিহত ৬ জনের মধ্যে নোয়াখালী ও সুনামগঞ্জে ২ জনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় জঙ্গি আস্তানার কাছে বোমা বিস্ফোরণে নিহত পুলিশ ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলামের বাড়ি নোয়াখালী সদরের এওজবালিয়া ইউনিয়নের মন্নান নগর এলাকায় শোকের মাতম চলছে। স্বামীর মৃত্যু সংবাদ শুনে তার স্ত্রী পারভিন আক্তার ও মা আমেনা খাতুন মূর্ছা যান। মনিরুল ইসলাম ২০১০ সালে বিয়ে করেন। তার ১৭ মাস বয়সী একমাত্র পুত্র সন্তান রয়েছে। উল্লেখ্য, মন্নান নগরের বাসিন্দা মৃত নুরুল ইসলামের দ্বিতীয় পুত্র মনিরুল ইসলাম ২০০৩ সালে পুলিশ বাহিনীতে এএসআই পদে যোগদান করেন। পরে পদোন্নতি লাভ করে সিলেটের সিটি এসবি শাখায় বদলি হন।
নিহতের বড় ভাই সোহাগ জানান, গত শুক্রবার ছোট ভাই সাইফুল ইসলামের বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে আসে মনিরুল ইসলাম। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার ভোরে সিলেট রওয়ানা হন এবং বিকাল তিনটায় কর্মস্থলে যোগদান করেন। সিলেট পৌঁছে মা ও স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে বলেন, “তোমরা আমার জন্য দোয়া করো”। পরিবারের সাথে এটাই তার শেষ কথা হয়। কর্মজীবনে আমেরিকায় এক বছরের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হন ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম। জানা গেছে, রবিবার সিলেটে মরহুমের জানাজা শেষে তার লাশ নোয়াখালীর এওজবালিয়া মন্নান নগরের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জনান, সিলেটের জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলের’ প্রায় দুইশ’ গজ দূরে গোটাটিকর দাখিল মাদরাসার পাশে পুলিশের চেক পোস্টে শনিবার সন্ধ্যায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৬ জনের মধ্যে দুইজন ছাতকের বাসিন্দা। এদের মধ্যে ছাতকের ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়নের ছৈলা নিবাসী সিলেটের আদালত পরিদর্শক (সিএসআই) আবু কয়ছর চৌধুরী দীপু (৪০) ও দোলারবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আজিম শাহ ডেকোরেটার্সের মালিক কল্যাণপুর নিবাসী খাদিম শাহ (২৫) মারা যান। আবু কয়ছর চৌধুরী দীপু ছৈলা চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পিতা সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবী মরহুম এডভোকেট আসদ্দর আলীর কর্মস্থল সুনামগঞ্জের জামাইপাড়াস্থ নিজ বাসভবনে বসবাস শুরু করেন। এসময় সুনামগঞ্জ জুবিলী হাইস্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করে চাকুরি গ্রহণের পরকপর্যায়ে এখন সিলেটে আদালত পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তবে আবু কয়ছর চৌধুরীর ছৈলা গ্রামে জন্ম স্থান হলেও দীর্ঘদিন এখানে বসবাস না করায় আর কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। রোববার (২৬ মার্চ) বাদ জোহর সিলেট পুলিশ লাইন মাঠে আবু কয়ছর চৌধুরীর জানাজার নামাজ সম্পন্নের পর লাশ সেখানেই দাফন করা হয়। এদিকে দোলারবাজারের ব্যবসায়ী খাদিম শাহ কল্যাণপুর গ্রামের ইসমাইল আলীর পুত্র। সামান্য লেখাড়ার পর ছোটবেলা থেকেই অভাবী সংসারে পিতার সাথে সে ডেকোরেটার্স ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। ৮ ভাই ও এক বোনের মধ্যে খাদিম শাহ ছিল ২য়। তার বড় ভাই আজিম শাহ, খাদিম শাহ ও তাদের পিতার অক্লান্ত পরিশ্রমে এখন তাদের ব্যবসায়িক অবস্থান কিছুটা সুদৃঢ় হলেও অবশেষে সিলেটের জঙ্গি হামলায় অবিবাহিত অবস্থায়ই খাদিম শাহ মারা যায়। তার পিতা দোলারবাজারে, বড় ভাই স্থানীয় পীরপুরবাজারে ও খাদিম শাহ জয়েন্ট পার্টনার হয়ে সিলেটে এখন ডেকোরেটার্স ব্যবসা করছে। দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় তার একটি বিয়ে অনুষ্ঠানের সাইড থেকে ফেরার পথে পুলিশ তাকে বহনকারী মোটর সাইকেল আটক করে। এসময় পুলিশের চেক পোষ্ট লক্ষ্য করে জঙ্গিদের বোমা বিস্ফোরণে পুলিশসহ খাদিম শাহ মারা যায়। তার মাতা শাহানারা বেগম এখন পুত্র শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন। রোববার বিকেলে দোলারবাজারে নামাজে যানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে দোলারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান শায়েস্তা মিয়া জানান, খাদিম শাহ কখনও সমাজ বিরোধী কোনো কাজে জড়িত ছিল না। তার স্বভাব-চরিত্র ছিল অত্যন্ত ভালো। এদিকে ঘটনার রাতেই ছাতক থানার এসআই সোহেল রানা কল্যাণপুরস্থ খাদিম শাহের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এদিকে পুলিশ অফিসার আবু কয়ছর চৌধুরী দীপু ও ব্যবসায়ী খাদিম শাহের মৃত্যুতে ছাতক উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।