Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

৩ বছরেই পিয়ন হলো ধনপতি

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : নরসিংদী জেলা পরিষদের অভ্যন্তরে সীমাহীন দুর্নীতির আরো একটি খন্ড চিত্র প্রকাশ হয়েছে। বয়স গোপন করে অষ্টম শ্রেণীর ভুয়া সনদপত্র দিয়ে চাকরি নিয়ে ৩ বছরেই জায়গা জমি কিনে ধনপতি হয়ে গেছে বকুল মিয়া নামে এক এমএলএসএস (পিয়ন)। সে শিবপুরের কারাচর ও সদরের হাজীপুর এলাকায় লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় করেছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের মালিক হয়ে গেছে পিয়ন বকুল।
জানা গেছে, তার গ্রামের বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগরে। এক সময় নরসিংদী শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। কোন এক সময় সে একটি ক্লাবে অর্ডারলী হিসেবে রাতের বেলায় কাজ করতো। সেখান থেকে সুযোগ পেয়ে নরসিংদী জেলা পরিষদে চাকরির জন্য আবেদন করে। তবে চাকরিক্ষেত্রে ঠিকানা দিয়েছে নরসিংদী শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া। তার পিতার নাম আব্দুল মইদর আলী, মায়ের নাম জগনা খাতুন। ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল সে নরসিংদী জেলা পরিষদের এমএলএসএস পদে নিয়োগ পায়। তার প্রকৃত জন্ম হচ্ছে ১৯৭২ সালের ৩ এপ্রিল। কিন্তু সে তার আবেদনপত্রে তথ্য দিয়েছে জন্ম ১৯৮৫ সালে। অর্থাৎ তার জন্ম বছর থেকে ১৩ বছর কম দেখিয়ে সে এমএলএসএস পদে চাকরি নিয়েছে। আর এ জন্য খোরশেদ আলম নামে একজন ইউডির মাধ্যমে এক কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। চাকরির দরখাস্তের সাথে জাতীয় পরিচপত্রের ফটোকপি জমা দেয়ার বিধান থাকলেও ইউডি খোরশেদ আলমের সহযোগিতায় সে তা গোপন করেছে।
স¤প্রতি তার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকাশ হয়ে পড়লে চাকরি ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। তার ভোটার আইডি নং-৬৮২৬০১৪৬৬৭৫৮০-তে তার জন্ম তারিখ হচ্ছে ৩ এপ্রিল ১৯৭২। এছাড়া সে একেবারেই লেখাপড়া জানে না। সে কোন স্কুলে লেখাপড়া করেনি। সে একটি কাগজ পড়তেও পারে না। অথচ একটি স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণীর ভুয়া সনদপত্র এনে দরখাস্তের সাথে জমা দিয়ে চাকরি নিয়েছে। জেলা পরিষদের এমএলএসএস হলেও চাকরি ক্ষেত্রে তার কদর অনেক বেশি। জেলা পরিষদের কর্মকর্তার রহস্যজনক কারণে উন্নয়ন প্রকল্পের তদারককারী হিসেবে অফিস আদেশ দিয়ে তাকে তদারক কমিটির সদস্য করেছে। আর এই সুযোগেই সে ঠিকাদারদের কাছ থেকে পার্সেন্টেজ নিয়ে কর্মকর্তাদের দেয় পাশাপাশি নিজেও ভোগ করে। এভাবে গত ৩ বছরে সে শিবপুরের দক্ষিণ কারারচরে এবং নরসিংদী সদরের হাজীপুরে কমবেশী পৌনে ১৪ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেছে। যার মূল্য হবে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা। এছাড়াও একটি ব্যাংকে তার বিপুল পরিমান নগদ টাকা মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পরিষদের একটি সূত্র। এসব বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করলে আরো দুর্নীতির খবর বেরিয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধনপতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ