Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তামীম-সাকিবে বড় জয়ে শুরু সিরিজ

প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪৩ এএম, ২৬ মার্চ, ২০১৭

বাংলাদেশ : ৩২৪/৫(৫০.০ ওভার)
শ্রীলংকা : ২৩৪/১০( ৪৫.১ ওভার)
ফল : বাংলাদেশ ৯০ রানে জয়ী।
বিশেষ সংবাদদাতা ঃ  সাঙ্গাকারা, মাহেলা, মালিঙ্গা, দিলশান নেই, নেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজ। সুতরাং ভয়ের কি আছে ? ২ বছর পর শ্রীলংকার মুখোমুখি হয়ে বরং ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিকদের পিছিয়ে রেখে বাংলাদেশকে ফেভারিট হিসেবে দেখেছে মিডিয়া। ডাম্বুলায় শ্রীলংকা একাদশের সবার ওয়ানডে ম্যাচের সমষ্টি যেখানে ৬২৩, সেখানে মাশরাফি একাদশের ১০২৯! পরিসংখ্যানগত এই তথ্য দিয়ে নয়,  দু’দলের প্রকৃত  ব্যবধান নির্নীত করতে ব্যাটসম্যানদের যেভাবে মেলে ধরার কথা ছিল, সে প্রত্যাশা শতভাগ মিটিয়েছে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে ক্রিকেটে তামীমের ৮ম সেঞ্চুরি ( ১২৭),সাকিবের ৩৩তম ফিফটি (৭২), ৪র্থ জুটিতে দু’বন্ধুর রেকর্ড ১৪৪ রানের পার্টনারশিপের পাশে সাব্বিরের দ্রুতগতির ফিফটি। শেষ পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ১০৯ রানে অন্য এক ব্যাটিং বিনোদনে শ্রীলংকার বিপক্ষে স্কোরটা যখন টেনে নিয়েছে ৩২৪/৫ পর্যন্ত-শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ এই স্কোরেই বাংলাদেশ পেয়েছে ডাম্বুলায় জয়ের আবহ।
ব্যাটসম্যানদের দেয়া এই বিশাল পুঁজিই বোলারদের দিয়েছে বিশেষ টনিক! ইনিংসের তৃতীয় বলে গুনাতিলাকাকে ফিরিয়ে দেয়া মাশরাফির প্রথম স্পেল (৫-২-১২-১) ব্যাকফুটে নামিয়ে দিয়েছে শ্রীলংকাকে। শ্রীলংকার বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য তুরুপের তাস হিসেবে বিবেচনা করে ঢাকা থেকে উড়িয়ে নেয়া অফ স্পিনার মিরাজও ওয়ানডে অভিষেকে দিয়েছেন টীম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান। তার প্রথম স্পেলেই (৮-০-৩৫-২) ম্যাচটা একপেশে হয়ে গেছে। ৯০ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। ইতোঃপূর্বে শ্রীলংকার বিপক্ষে  ৪টি জয়ের ৪টি ছিল উইকেটের ব্যবধানে, ২০০৯ এবং ২০১২ সালে ঢাকায় ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ, ২০০৫ এ বগুড়ায় ৫ উইকেটে এবং ২০১৩ সালে পাল্লেকেলেতে জয়টা ছিল ৩ উইকেটে। রানের ব্যবধানে গতকাল ৯০ রানের জয়টি শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ।  
অতীতের দু:সহ স্মৃতির ভেন্যুতে সুখস্মৃতির ভেন্যুতে রূপ দিতে পেরেছে বাংলাদেশ টেস্টে, পি সারা ওভালে। আগের তিনটি ম্যাচে শ্রীলংকার এই ভেন্যুতে টেস্টে  যেখানে ইনিংস হারকে নিয়তি বলে মেনে নিয়েছে, সেই ভেন্যুতে ৪ উইকেটে জিতে অতীত দিয়েছে মুছে বাংলাদেশ। ডাম্বুলায় আগের তিনটি  ওয়ানডে ম্যাচে  যেখানে হারের ব্যবধান ছিল ৬ উইকেট,১২৬ রান এবং ১৩৯ রান, দুঃসহ স্মৃতি মুছে সেই ডাম্বুলাকে সুখস্মৃতির ভেন্যুতে পরিনত করতে পেরেছে বাংলাদেশ গতকাল।
একসঙ্গে তিন ডিপার্টমেন্টের সব ক’টিতে জ্বলে উঠলে কতোটা ভয়ংকর রূপ ছড়াতে পারে, তার জানানটাও যে দিয়েছে বাংলাদেশ এদিন। ফিল্ডিং নিয়ে ছিল প্রশ্ন। সে প্রশ্নের উত্তরটা দিয়েছেন গতকাল শুভাগতহোম, সৌম্য, মোসাদ্দেক। যে ভেন্যুতে অতীতে এবারই মাত্র ২’শ প্লাসের রেকর্ড আছে (পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৪৬/৫) ২০১০ সালে, সেই ভেন্যুতে গর্জে উঠেছে বাংলাদেশ (৩২৪/৫)। যে বৈশিষ্ট্যের উইকেট পেলে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে ভয়ংকর, সেই চেনা-জানা উইকেট উপহারই যেনো পেয়েছে বাংলাদেশ। এমন উইকেটে টসে জিতে শ্রীলংকা অধিনায়ক থেরাঙ্গার ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তই করেছে বাংলাদেশ দলকে উদ্বুদ্ধ। ইতোঃপূর্বে শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ২৬৫/৯, ২০০৬ সালে আইসিসি চ্যাাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, মোহালীতে।  ওয়ানডেতে ৩’শ স্কোরে এটি বাংলাদেশের ১০ম।  ২০১৫ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩২৯/৬ এবং একই ভেন্যুতে ২০১৪ সালে ৩২৬/৩’র পর তৃতীয় স্কোর এটি। বিদেশের মাটিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।
ডাম্বুলায় ওয়ানডে ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২৪ রানের ইনিংস ছিল এতোদিন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদির। ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন আফ্রিদি ওই ইনিংস। আফ্রিদিকে টপকে এদিন তামীম এই ভেন্যুতে করেছেন রেকর্ড ইনিংস ( ১২৭)।ওভারপ্রতি ৬.৪৮ রান তাড়া করে জয় সহজ কথা নয়। স্কোরশিটে যখন শ্রীলংকার চেহারা ১২১/৫, তখনই ম্যাচ জয়ের আশা ছেেেড় দিয়ে সম্মানজন হারের পথ খুঁজেছে শ্রীলংকা। মিডল অর্ডার চান্দিমালের ৫৯ রানের পাশে তিসারা পেরেরার ২৮ বলে ফিফটি ( ৫৫)  পাথিরানার ৩১,  হারের ব্যবধান কমিয়েছে শুধু। তবে আরো বড় ব্যবধানে জিততে পারতো বাংলাদেশ। তবে ¯øগে বাংলাদেশ বোলারদের ক্লান্তির সুযোগ নিয়েছে শ্রীলংকার টেল এন্ডাররা। মিরাজের ওয়ানডে অভিষেকের দিনে মুস্তাফিজ শিকার করেছেন ৩ উইকেট (৩/৫৬)। মাশরাফির বোলিংও (২/৩৫) বড় ব্যবধানে জয়ের উপলক্ষ এনে দিয়েছে।   
 ৫ দিন আগে বাংলাদেশকে শততম টেস্ট জিতিয়ে পরদিন মুম্বাইয়ে স্ত্রী,পুত্রকে নিয়ে তামীম উদযাপন করেছেন ২৮তম জন্মদিন। পি সারা ওভালে বাংলাদেশকে টেস্ট জিতিয়ে, টেস্টে সেরা অল রাউন্ডারের মুকুট ফিরে পেয়ে ডাম্বুলায় চেনা সাকিব হাজির।  ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগের দিন ৩০তম জন্মদিন উদযাপনটা যেনো ম্যাচের জন্যই রেখে দিয়েছিলেন সাকিব। গতকাল সেই জন্মদিন উদযাপনের উপলক্ষই এনে দিলেন সাকিব। 



 

Show all comments
  • তুষার ২৬ মার্চ, ২০১৭, ১১:২৮ এএম says : 0
    খেলার এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ