পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক দাবিদার বিএনপির ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস সম্পর্কে রাজনৈতিক অবস্থান জনগণ জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক বলে নিজেদের দাবি করে আমি সেই ঘোষক দাবিদার দলকে জিজ্ঞেস করতে চাই, ২৫ মার্চের এই গণহত্যা দিবসে আপনাদের কর্মসূচি কি? আমি জানতে চাই আপনারা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের দিনে নীরব কেন? আমি জানতে চাই আজকের এই দিনে গণহত্যার ব্যাপারে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান কি? বাংলাদেশের জনগণ জানতে চায়। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর লালবাগের আজাদ অফিস মাঠে ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠে ‘২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ মন্তব্য ও বিএনপিকে প্রশ্ন করেন। ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের এ সমাবেশে জাতীয় গণহত্যা দিবসে বিএনপি ও দলটির প্রধান নেতা খালেদা জিয়া নিশ্চুপ কেন তাও জানতে চান আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা জাতীয় গণহত্যা দিবস বিষয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করারও আহ্বান জানান। তারা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানেই মেরুকরণ হয়ে যাবে। এখানেই মেরুকরণ হচ্ছে কারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মদদ দেয়, আলবদর শত্রুদের সঙ্গে মিত্রতা করে। তারা মুক্তিযুদ্ধকে মানে না। বিএনপি নীরব কেন? বিএনপির কোনো কর্মসূচি আজ নেই কেন? আজকের এই নৃশংসতম, বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের দিনে দল হিসেবে বিএনপির অবস্থান কি? তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে? না ৪৭-এর পাকিস্তানের ধ্যান-ধারণা লালন করে?
জাতীয় গণহত্যা দিবসে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের জনসভায় বিপুল নেতাকর্মী জড়ো হয়। দুপুরের পর থেকে মহানগর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর রাস্তায় শত শত নেতাকর্মীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন গণহত্যার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭১ এর গণহত্যা যে কোন গণহত্যার চেয়ে ভয়াবহ ছিল। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে বিএনপি-খালেদা জিয়া রহস্যজনকভাবে নীরব কেন, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এই গণহত্যা দিবস সম্পর্কে বিএনপি, খালেদা জিয়ার পরিষ্কার অবস্থান জানতে চাই। তারা কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না বিপক্ষে স্পষ্ট করুক।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সা¤প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করব।
বক্তব্যে দলীয় নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খাঁটি কর্মী ভেতরে ভেতরে কাউয়া আছে। কাউয়া পঁচাত্তরেও ছিলো, একাত্তরেও ছিলো কাউয়া। কাউয়া এখনও আছে। এরা ক্ষমতার স্রোতে ঢুকে যায়। আর কিছু কিছু নেতা দল ভারি করার জন্য কাউয়াদেরকেও লিস্টে নাম লেখায়। আমাদের কাউয়ার দরকার নেই।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, অপারেশন সার্চ লাইট নামে ২৫ মার্চ তারা গণহত্যা শুরু করেছিলো। দীর্ঘ নয় মাস তারা গণহত্যা চালিয়েছে।
গণহত্যা বিষয়ে বিএনপির কাছে জবাব চাওয়ার কিছু নাই উল্লেখ করে আমু বলেন, খালেদা জিয়া জামায়াত নেতা নিজামী-মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের সঙ্গে জোট করে তার জবাব দিয়ে দিয়েছে, তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে, শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে জবাব দিয়েছে তারা কোন পক্ষের।
বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ৭১-এর গণহত্যাকে সেদিন সারা বিশ্বের বিবেক নাড়া দিয়েছিলো। তারা বলেছিলো স্টপ জেনোসাইড। আজ আবার বিশ্ব নেতাদের সেই সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে এ দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাই।
৭১-এর গণহত্যা এবং পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাদের নীতি ছিলো মানুষ চাই না। মাটি চাই। খালেদা জিয়া কীভাবে ৭১-এর গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জানতে চান মতিয়া চৌধুরী।
জাতীয় গণহত্যা দিবসে বিএনপি নিশ্চুপ কেন, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বিএনপি, খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব জবাব চাই।
খালেদা জিয়া, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের কথা উল্লেখ করে যারা ৭১-এর শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সবার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, এদের ঘৃণা করি।
পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগীদের বিচারের পাশাপাশি তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিতরণ করার দাবি করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ফারুক খান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে ছিলো। এজন্য পরবর্তীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যায় সে অন্যতম নায়ক ছিলো। তিনি বলেন, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনো কটাক্ষ করলে বাংলার মানুষ তার দাঁত ভাঙা জবাব দিবে।
লালবাগের জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, মোজাফফর হোসেন পল্টু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র সাঈদ খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠের জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য আখতারুজ্জামান, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, আসলামুল হক, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।