Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপিপন্থীদের নিরঙ্কুশ জয়

৮ পদে বিএনপি আর ৬ পদে আওয়ামী লীগ : টানা পঞ্চম দফা সম্পাদক হলেন খোকন

| প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মালেক মল্লিক : সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা। এক বছর পর সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়শের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হয়েছে তারা। এবারের (২০১৭-১৮) নির্বাচনে কার্যনির্বাহী পরিষদের ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৮টি পদে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেল বিজয়ী হয়েছে। একটি সহ-সভাপতিসহ ৬টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ (সাদা) প্যানেল। তফসিল ঘোষণার পর থেকে আইনজীবীদের মাঝে গুঞ্জুন ছিল এবছর সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে নির্বাচনে সভাপতি এবং সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে কেউ যেনো কারো চেয়ে কম নয়; উভয় জোটের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। নির্বাচনের ফলাফলে তাদের গুঞ্জন সত্যি হয়েছে। অল্প ভোটের ব্যবধান ছিল পরাজিত ও বিজয়ীদের মধ্যে।
সরকার দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ের নেপথ্যে দেশের রিবাজমান রাজনৈতিক অবস্থায়কেই দায়ী করেছেন সাধারণ আইনজীবীরা। তারা আরো বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তারা সবাই যোগ্য ছিল। আইনজীবীরা অনেক সচেতন, তারা সুশাসন ও গণতন্ত্র নিয়ে ভাবেন। যার প্রভাব তাদের ভোটেও পড়েছে।
বিজয়ী সভাপতি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ও তার প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন আওয়ামী লীগ এর আইন বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু। তারা দু’জন সাধারণ আইনজীবীদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় ছিল।
সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রাথী রবিউল আলম বুদু প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। তারা দুজনেও সাধারণ আইনজীবীদের প্রিয় ব্যক্তি। রবিউল আলম বুদু অত্যন্ত নম্ব ও ভদ্র মানুষ, আর মাহবুব উদ্দিন খোকন একজন সদালাপি ব্যক্তি হিসেবে আদালত অঙ্গনে পরিচিত। তবে সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন ব্যরিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এক টানা পঞ্চম বারের মতো বিজয়ী হলেন তিনি ।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালের নির্বাচনে সভাপতি, সম্পাদকসহ অধিকাংশ পদে জিতে নিয়ে সমিতিতে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিলেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। ২০১৬ সালের সভাপতি ও সহ-সভাপতিসহ ৮টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা বিজয়ী হয়। এটা বিএনপিদের ঘর দখলের মতো ছিল। কারণ ২০০৯ সালের পর নির্বাচনে শীর্ষ দুটি পদ হারায় বিএনপি। এবার তাদের হারানো ঘর পুনরুদ্ধার হলো।
টানা দু’দিন ভোটের পর গতকাল শুক্রবার সকালে নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির প্রধান এ ওয়াই মশিহুজ্জামানকে এ ফল ঘোষণা করেন। এবার ভোট পড়েছে ৭৭ শতাংশের বেশি। মোট ৫ হাজার ৮১ ভোটারের মধ্যে ৩ হাজার ৯২৮ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সাতটি সম্পাদকীয় ও সাতটি নির্বাহী সদস্য পদে এবারের এই নির্বাচনে এবার মোট ৩১ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জয়নুল আবেদীন ১ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী আবদুল মতিন খসরু ১ হাজার ৮৯৫ ভোট। ৩৩ ভোট বেশি পেয়ে সভাপতি বিজয়ী হয়েছে। সম্পাদক পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিজয়ী হয়েছেন, তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৬ ভোট। তার প্রতিদ্ব›দ্বী মো. রবিউল আলম বুদু ১ হাজার ৮৪৬ ভোট। ৭০ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী।
সহ-সভাপতি দুইটি পদে সাদা প্যানেল থেকে মো. ওয়াজি উল্লাহ ২৩৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নীল প্যানেলে উম্মে কুলসুম বেগম পেয়েছেন ১৬২২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
নীল প্যানেলের বিজয়ীরা হলেন: সহ-সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শামিমা সুলতানা দিপ্তী নির্বাচিত। আর সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, আয়েশা আক্তার, মৌসুমি আক্তার, মুহাম্মদ হাসিবুর রহমান ও শেখ তাহসিন আলী।
সাদা প্যানেলে বিজয়ীরা হলেন: কোষাধ্যক্ষ পদে জয়ী হয়েছেন রফিকুল ইসলাম হিরু জয়ী হয়েছেন। সহসম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম জয়ী হয়েছেন। এছাড়া সদস্য পদে এ বি এম নূরে আলম উজ্জ্বল, কুমার দেবুল দে ও মো. হাবিবুর রহমান হাবিব।
সমিতির (২০১৭-১৮) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় সম্পন্ন হয়। এ নির্বাচনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল রাত ১১টা থেকে গণনা শুরু হয়। গত বছর ব্যতীত টানা অর্ধ যুগ ধরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচিত হয়ে আসছে। সভাপতি পদে বিএনপি সমর্থক প্যানেলে খন্দকার মাহবুব হোসেন ৪ বার নির্বাচিত হন। এ প্যানেলে এজে মোহাম্মদ আলী একবার ও জয়নুল আবেদীন এবারসহ ২বার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সম্পাদক পদে মাহবুব উদ্দিন খোকন একটানা ৫ বার নির্বাচিত হলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ