Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন

| প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:৪১ এএম, ২৪ মার্চ, ২০১৭

বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে লাগা আগুন ১ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০তলা ভবনের ১৪ তলায় (লিফটের ১৩) বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিকান্ড ঘটেছে। রাত সোয়া ৯টা ২০মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাÐের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট প্রচেষ্টা চালিয়ে রাত ১০টার পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, তাদের ১২টি টিম প্রচেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, আগুন লাগার কক্ষগুলো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এদিকে আগুনের কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমদ। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আগুণ লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, শট সার্কিট থেকে ৩০ তলা ভবনের ১৪ তলায় আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। নাশকতার কোনও বিষয় জড়িত রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, এটা নাশকতা কিনা তা তদন্ত কমিটি বলতে পারবে। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগুনের স্থানে ইউপিএস দেখেছি। আগুনের সঙ্গে ইলেক্ট্রনিক্সের সংযোগ থাকতে পারে। সেখানে আমরা কোনো সার্ভারে আগুন দেখতে পাইনি। সেখানে টেবিল চেয়ার ও কাগজপত্র ছিল। বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের জিএমের কক্ষের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আলী আহমদ বলেন, ৯টা ২৮ মিনিটে আমরা আগুনের সংবাদ পাই।
১২টি ইউনিটে ৭০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করে ১০টার পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরো এলাকা কর্ডন করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার ও গভর্নর অবস্থান করছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল কি-না জানতে চাইলে ফায়ার ডিজি বলেন, নিজস্ব ফায়ার হাইডেন ছিল। সেটা কাজ করেছে আমরা দেখেছি।
আগুনের খবর পেয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, গভর্নর ফজলে কবীর, ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আগুন লাগার সম্ভাব্য কারণ, ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্য পরিমাণ ইত্যাদি প্রসঙ্গ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা ত্যাগ করেন।
জানা গেছে, ৩০তলা ভবনের ১৪তলায় বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের জিএম মাসুদ বিশ্বাসের রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আর এর ঠিক উপরের তলাতেই রয়েছে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মনিটরিং দফতর। এর নিচের তলাতে ব্যাংকিং রেগুলেশন এন্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক শফিউল ইসলাম জানান, ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে আগুন লাগে। রাত সোয়া ৯টার দিকে আগুনের খবর পেয়ে তিনি ১৩তলায় যান। সেখানে প্রচুর ধোঁয়া দেখে সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) আবুল কালাম আজাদও বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগুন লাগা মাত্রই ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। সাড়ে ৯টার দিকেই ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের পেছনের দিকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের ১৪তলায় আগুন লাগে। আমাদের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দশটার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সাড়ে দশটার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে ফেলতে সমর্থ হয় তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনার সময় ভবনের ভেতর কেউ ছিল না। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে কিছু সংস্কার কাজ চলছে। তবে রাত আটটার দিকে কাজ শেষে সংস্কার কাজে যুক্ত লোকজন বের হয়ে যান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। এ ছাড়া আগুনে হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লাগার খবর পেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। ভবনের প্রধান ফটকের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। এসময় জনতার ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বেগ পেতে হয়। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে তিন দিনের ছুটির প্রথম দিনেই আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে অনেককে সন্দেহমূলক বিভিন্ন মন্তব্য করতেও শোনা যায়।



 

Show all comments
  • ajrail ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১০:৫১ এএম says : 0
    Remitens jaliater alamot dhongser sarojonto hote pare.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ