Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ট্রাম্পের পদত্যাগ আসন্ন

| প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : খুব শিগগিরই পদত্যাগে বাধ্য হবেন নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের প্রভাবশালী সদস্য ডিয়ানে ফিনস্টেইন। সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির সদস্য ডেমোক্র্যাট দলীয় ডিয়ানে আরো বলেন, তিনি এব্যাপারে অনেক কিছুই জানেন তবে তা এখনই বলতে পারছেন না। গত মঙ্গলবার (মার্চ ২১) লস এঞ্জেলেস নগরীতে ট্রাম্পবিরোধী এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এক বিক্ষোভকারীর প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। ওই বিক্ষোভকারী ডিয়ানে ফিনস্টেইনকে লক্ষ্য করে বলেন, ট্রাম্পকে ঠেকাতে সিনেট আরো কার্যকরী ভ‚মিকা নিল না কেন? এর জবাবে ডিয়ানে বলেন, খুব শিগগিরই তাকে পদত্যাগ করতে হবে এ সম্ভাবনা প্রবল। ডিয়ানে বলেন, তার রাশিয়ার সঙ্গে গোপন লেনদেন রয়েছে। তিনি অনেক কিছুই করছেন যা অসাংবিধানিক। আমরা অনেকেই বিষয়টিতে নজর রাখছি। আমি মনে করি, তিনি নিজেই পদত্যাগে বাধ্য হবেন। আমি এব্যাপারে অনেক কিছুই জানি। কিন্তু তা এখনই বলতে পারছি না। এদিকে, প্রথম দিন থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাচার করে আসছেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর অভিষেকে উপস্থিত দর্শকের সংখ্যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক। খুব সামান্য ব্যবধানে জয়ী হলেও তাঁর দাবি ছিল, তিনি রেকর্ড পরিমাণ ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। হিলারির পক্ষে ৩০ লাখ জাল ভোট পড়েছে, এমন দাবিও তুলেছিলেন। এসব মিথ্যা বলে পার পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ওবামা ট্রাম্প টাওয়ারে তাঁর টেলিফোনে আড়ি পাতার ব্যবস্থা করেছিলেন, কোনো প্রমাণ ছাড়া এই অভিযোগ তুলে শেষমেশ ফেঁসে গেলেন ট্রাম্প। গত সোমবার কংগ্রেসে বক্তব্য পেশের সময় এফবিআই-প্রধান জেমস কোমি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, না, এমন কোনো আড়িপাতার ঘটনা ঘটেনি। শুধু এফবিআই নয়, সরকারের বিচার বিভাগেরও একই সিদ্ধান্ত তাঁদের কারো কাছে ট্রাম্পের উত্থাপিত অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ওবামা যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগকে ট্রাম্প টাওয়ারে আড়ি পাতার অনুরোধ করেছিলেন। সোমবার ওই শুনানিতে উপস্থিত জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির প্রধান মাইক রজারও সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেন, এমন কোনো ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই। তা ছাড়া ব্রিটিশদের কাছে এমন কোনো অনুরোধ পাঠানোর প্রশ্নই ওঠে না। গত সোমবারের শুনানিতে অবশ্য তার চেয়েও বড় বোমা ফোটানোর ঘটনা ছিল মস্কোর সঙ্গে গোপন আঁতাত বিষয়ে এফবিআইয়ের তদন্ত। এদিন কোমি জানান, মস্কোর সঙ্গে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের গোপন আঁতাত ছিল, তাঁরা এই অভিযোগ তলিয়ে দেখছেন। কোমির এই বক্তব্যের অর্থ, অপরাধমূলক কিছু ঘটেছে সেই আলামত পাওয়ার পরই এফবিআই তা নিয়ে তদন্ত করছে। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পর এই প্রথম একজন প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সহকর্মীরা বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত, এমন অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে মার্কিন বিচার বিভাগ। ওয়াশিংটনের ‘ওয়াটারগেট’ নামের এক ভবনে, যেখানে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদর দফতর ছিল, প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নির্দেশে সেখানে তালা ভেঙে ঢোকা ও পরে সে তথ্য ধামাচাপা দিতে মিথ্যাচারের অভিযোগে ১৯৭৪ সালে নিক্সনকে চাকরি খোয়াতে হয়েছিল। বিখ্যাত মার্কিন ঐতিহাসিক ডগলাস ব্রিংকলি মন্তব্য করেছেন, ‘জেমস কোমির কথা থেকে বাতাসে আমরা রাষ্ট্রদ্রোহের গন্ধ পাচ্ছি।’ এই ঘটনা ওয়াটারগেটের চেয়ে কম মারাত্মক নয়। প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির প্রধান, রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ডেভিড নুনেস সেই কথাটা কিছুটা ঘুরিয়ে বলেন, কোমির এই বক্তব্যের ফলে হোয়াইট হাউসের ওপর ঘন কালো এক মেঘ এসে স্থির হয়েছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহের সেই কালো মেঘ দূর হবে না। তিনি যত দ্রæত সম্ভব এই তদন্ত শেষ করার তাগিদ দেন, কিন্তু কবে নাগাদ তা শেষ হবে, সে কথা জানাতে কোমি অস্বীকার করেন। কোমি জানান, এই তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে মস্কো আবার মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থায় নাক গলাতে পারে। তিনি বলেন, ‘তারা ২০২০ সালে ফিরে আসবে। তারও আগে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের সময় ২০১৮ সালে তারা ফিরে আসতে পারে। তারা হয়তো ভাবছে, একবার যখন সফল হয়েছে, পরবর্তী সময়েও মার্কিন নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে তারা সক্ষম হবে।’ কোমি মনে করিয়ে দেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নির্বাচনেও নাক গলাতে চেষ্টা করেছে মস্কো। রাশিয়ার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ফ্লিন পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। একই অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের আরও অন্তত পাঁচ সদস্যের ব্যাপারে। এঁদের অন্যতম হলেন ট্রাম্পের সাবেক ক্যাম্পেইন ম্যানেজার পল ম্যানাফোর্ট। কোমির বক্তব্যের পর ট্রাম্পের মুখপাত্র দাবি করেন, নির্বাচন প্রচারণার সময় ম্যানাফোর্ট খুব সামান্য দায়িত্ব পালন করেন, তাও খুব অল্পসময়ের জন্য। তাঁর সে কথায় সবাই মুখ টিপে হেসেছে, কারণ ট্রাম্প নিজে ক্যাম্পেইন ম্যানেজার হিসেবে ম্যানাফোর্টকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে একাধিকবার বর্ণনা করেছেন। ট্রাম্পের ব্যাপারে কোমি যে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন, তাতে অনেকে বিস্মিত হয়েছে। গত বছর নির্বাচনের মাত্র ১০ দিন আগে কোমি জানিয়েছিলেন, এফবিআই হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল-সংক্রান্ত অভিযোগ নতুন করে তদন্ত করে দেখছে। ডেমোক্র্যাটদের ধারণা, এফবিআই-প্রধানের সে ঘোষণার কারণেই নির্বাচনে হিলারি অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প কোমিকে এই পদে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান। অনেকের ধারণা, কোমির সে ভ‚মিকার জন্য কৃতজ্ঞতা হিসেবেই তাঁকে এই পদটি দিতে সম্মত হয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এখন সম্ভবত তিনি নিজের হাত কামড়াচ্ছেন। গত সপ্তাহে বস্টনে এক সেমিনারে বক্তব্য দেয়ার সময় কোমি নিজেই কিঞ্চিৎ পরিহাসের সঙ্গে বলেন, আগামী ছয় বছর তাঁকে সহ্য করা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রদান করলেও তাঁর চাকরি শাসনতান্ত্রিকভাবে নিশ্চিত। এফবিআই ও বিচার বিভাগের ঘোষণা সত্তে¡ও ট্রাম্প নিজে অবশ্য এখনো ওবামার বিরুদ্ধে টেলিফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তুলে নিতে প্রস্তুত নন। বিবিসি, রয়টার্স ও ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • Mahbubur Rahman ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৪ এএম says : 1
    ............র পদত্যাগ হওয়ার দরকার অাছে
    Total Reply(0) Reply
  • Ismail Mohammad ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৫ এএম says : 0
    Good.news
    Total Reply(0) Reply
  • Neaz Ahmed Neaz ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৫ এএম says : 0
    Yes
    Total Reply(0) Reply
  • Fazlul Haq ২৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৫ এএম says : 0
    Right
    Total Reply(0) Reply
  • ruhul ২৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:৪৩ পিএম says : 0
    tramp ka amerikay dorkar. odar dhongshar jonna
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ