গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নাছিম উল আলম : অর্থ সংকটে বরিশাল মহানগরীর রাস্তা-ঘাটে নিভে যাওয়া বাতি পুনঃ প্রজ্বলন করতে পারছে না সিটি করপোরেশন। তহবিল সংকটে প্রতিমাসে বাতি কেনা দূরের কথা, বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা প্রায় ২৭ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় যেকোন সময়ই এ মহানগরীতে পানি সরবরাহসহ রাস্তা-ঘাটের বিজলী বাতিসমূহ বন্ধ হয়ে যাবার আশংকা ক্রমশ প্রবল হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে ২০১৩ সালের নির্বাচনে সরকারী দলের মেয়র প্রার্থী পরাজিত হবার পর থেকেই এ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানটির সরকারী বরাদ্দ প্রায় শূন্যের কোঠায়। উপরন্তু সাবেক নগর প্রশাসনের ১৫৪ কোটি টাকার বকেয়া ও দায়-দেনা বহন করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম এখন বিপর্যয়ের কবলে। অর্থের অভাবে প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দৈনিক মজুরীভিত্তিক পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বেতন-ভাতাও পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরিশাল সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয় দ্বারা বছরের ছয়মাসও প্রশাসনিক খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
বিদ্যুতের অভাবে সরকারী তহবিলে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বসানো আড়াই শতাধিক সিসি ক্যামেরা গত ছয় মাসেও চালু করা সম্ভব হয়নি। পশ্চিম জোন বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানী-ওজোপাডিকো’র পক্ষ থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন-বিসিসি’কে নতুন কোন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। উপরন্তু প্রতিষ্ঠানটি বিসিসি’র পাওনা ২৭ কোটি টাকা আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয় ভাবছে বলেও জানা গেছে। জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এতদিন বিষয়টি মানবিক কারণে বিবেচনা করা হলেও এখন আর তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ওজোপাডিকো। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে চূড়ান্ত নোটিসও প্রদান করা হয়েছে নগর ভবনকে। যার মেয়াদ আজ (বুধবার) শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে সিটি করপোরেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা ভাবছে ওজোপাডিকো। এমনকি চলতি অর্থ বছরের ৮ মাসে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে ১ টাকার বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করা হয়নি। অথচ প্রতিমাসে রাস্তার বাতি, পানির পাম্প, অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনায় বিসিসি প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল মহল।
বরিশাল মহানগরীর শতাধিক কিলোমিটার রাস্তা ছাড়াও বিভিন্ন পার্ক ও স্থাপনায় প্রায় ১৬ হাজার বিজলীবাতি জ্বলছে। প্রতিমাসে এর ১০-১৫% বিনষ্ট হচ্ছে। কিন্তু অর্থের অভাবে গত প্রায় ৩ মাস ধরে নগর ভবন কোন বিজলীবাতিও কিনতে পারেনি। এমনকি গত ডিসেম্বরের পরে বাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কোন বকেয়া পরিশোধ করাও সম্ভব হয়নি। আগের দু’মাসের বকেয়া বাবদ দু’টি চেক প্রদান করা হলেও ব্যাংক তহবিলে অর্থের সংস্থান না হওয়ায় সে চেক নগদায়ন হয়নি গত প্রায় ৩ মাসে। ফলে সরবরাহকারী নতুন করে কোন বাতি সরবরাহ করছে না গত দু’মাসেরও বেশী সময় ধরে। দায়িত্বশীল মহলের মতে, নগরীর রাস্তাঘাট ও পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনায় যে প্রায় ১৬ হাজার বিজলীবাতি রয়েছে, তার অন্তত ৩ হাজার ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বাল্ব সংকটে তা পুনঃপ্রজ্বলন করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু প্রতিদিনই কিছু না কিছু বাতি নতুন করে বিকল হচ্ছে।
প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকার সরকারী তহবিলে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৫৯টি সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে মাস ছয়েক আগে। ঐসব ক্যামেরার ছবি ধারণসহ পর্যবেক্ষণের জন্য ৩২টি বুথও স্থাপন করা হয়েছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সিসি ক্যামেরাসহ বুথগুলো চালু করে সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করতে পারছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিসিসি’র নামে আর কোন বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। ফলে নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল, তাই এখন নিরাপত্তাহীন ও অরক্ষিত। এসব সিসি ক্যামেরা দীর্ঘদিন ধরে অচল পড়ে থাকায় তা চুরিসহ বিনষ্ট হবার আশংকাও বাড়ছে। বুথগুলোতেও কোন নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়নি। উপরন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় তা চালু করাও সম্ভব হচ্ছে না। সোলার পদ্ধতিসহ অন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থায় এসব সিসি ক্যামেরাসহ বুথগুলো চালু করার মত তহবিলও নগর ভবনের নেই। ফলে বরিশাল মহানগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারী প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকার সিসি ক্যামেরা প্রকল্পটির মত এ নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও সংকটের কবলে পড়তে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে গতকাল বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে তার বিল পরিশোধ করতেই হবে। আমরা জনস্বার্থেই কাজ করছি। কিন্তু তহবিল সংকটে বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা দিতে পারছি না। তবে বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে সেখান থেকে তহবিলের সংস্থান করে সরাসরি বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।