মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো এশিয়া সফর করে গেলেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ এ ক‚টনীতিক সিউল, টোকিও এবং বেইজিং সফর করেছেন। গত রোববার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে টিলারসনের আনুষ্ঠানিক সফর। টিলারসন এ সফরে এসেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করতে এবং ট্রাম্প-জিনপিং ফোনালাপে যে অগ্রগতি হয়েছে সেই অবস্থাকে আরও এগিয়ে নিতে। সফরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল, উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক ও পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মিত্রদেশগুলোকে সহযোগিতার ক্ষেত্র নির্ধারণ করা। তবে সফর শেষ হওয়ার টিলারসনের এ সফরকে প্রতিশ্রুতিময় ছাড়া এতে খুব বেশি কিছু অর্জন দৃশ্যমান হচ্ছে না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যে এশিয়ায় টিলারসনকে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন তা পুরোপুরি সফল করতে পারেননি তিনি। সফরের শুরুতেই ট্রাম্প ঘনিষ্ট মাত্র একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে সঙ্গে এনে সংশ্লিষ্টদের ভ্রæ কুঁচকে দেন টিলারসন। টোকিওতে এ অঞ্চলে প্রথম সফরে এসেই উত্তর কোরিয়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাকে। তিনি নতুন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। যদিও নতুন পদক্ষেপের বিস্তারিত কিছুই জানাননি। অবশ্য তিনি স্বীকার করেন, ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরিয়া হুমকি মোকাবেলায় সামরিক ব্যবস্থাসহ সবকিছুই বিবেচনা করছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা নতুন কিছু নয়। সাবেক বুশ এবং ওবামা প্রশাসনও উত্তর কোরিয়া সমস্যা মোকাবেলায় এমনটাই ঘোষণা দিয়েছিলেন। এছাড়া ফেব্রæয়ারিতেই ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরিয়া নীতি পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়েছিল। এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন প্রধান জিম ম্যাটিস জাপান সফরে এসে যে নিরাপত্তায় সহযোগিতায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, টিলারসনও সেই একই প্রতিশ্রæতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবেলায় জাপানের পাশে সব সময় থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে টিলারসন তাও সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কোরিয়ান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ক্লান্তিজনিত কারণে টিলারসন দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ুন বাইয়ুং-সে এর সঙ্গে বৈঠক সংক্ষিপ্ত করেছেন। যা উত্তর কোরিয়ার হুমকির মুখে থাকা এবং সদ্য দেশটির প্রেসিডেন্ট অভিসংশিত হওয়ায় অস্থিতিশীল দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ছিল না। এ কারণে টিলারসনের ক‚টনৈতিক অনভিজ্ঞতা ও অপ্রস্তুতি নিয়েও বেশ সমালোচনা হয়। যদিও টিলারসন পরে জানিয়েছেন, ক্লান্তির বিষয়টি দক্ষিণ কোরিয়ান সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা। তিনি ক্লান্ত ছিলেন না। ততক্ষণে অবশ্য বেশ দেরি হয়ে গেছে। কারণ যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গেছে।
সফরের শেষ দিকে প্রতিদ্ব›দ্বী বেইজিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের সামনে পড়েন। এরমধ্যে রয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি এবং উত্তর কোরিয়া বিষয়ে চীনের সহযোগিতা লাভ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়ার হুমকি নিয়ে সুর বেশ চড়া করেছে চীন। এর ধারাবাহিকতায় বেইজিং গুরুত্ব দিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় ছয় দেশীয় আলোচনার ওপর এবং মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক মহড়া বন্ধের ওপর। বিপরীতে চীন উত্তর কোরিয়া বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করতে রাজি- এমনই জানানো হয়েছে টিলারসনকে।
জাপানে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিলেও চীনে এসে সুর নরম করেন টিলারসন। তিনি জানান, আলোচনার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া ইস্যু মোকাবেলায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে। চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে রবিবার সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন জানান, বিবাদপূর্ণ ইস্যুগুলোকে একপাশে রেখে দুই দেশই উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে উভয় দেশের সমঝোতার কথা জানিয়েছেন। সফরে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের মধ্যেকার বিবাদপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে কোনও সুরাহা হয়েছে বলে কেউ দাবি করেনি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ওই বৈঠকে দুইদেশের বিবাদপূর্ণ ইস্যুগুলো এড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। অন্তত সাংবাদিকদের সামনে এ ইস্যুগুলো তোলা হয়নি। বরং শি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের নতুন যুগপর্ব যেন মসৃণ হয় তার জন্য টিলারসন বেশ চেষ্টা করেছেন। শি বলেন, আপনি বলেছেন চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অনিবার্যভাবেই বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা। আমি আপনার অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছি। অবশ্য চীনে টিলারসনের কাজ আরও কঠিন করে তোলেন ট্রাম্প। টুইটারে ট্রাম্প জানান, উত্তর কোরিয়া ইস্যু মোকাবেলায় চীন খুব সামান্যই সহযোগিতা করছে। টিলারসনও স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের টুইটের বিষয়ে তিনি জানতেন না। এ সফরে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীন ট্রাম্প প্রশাসনে বৈদেশিক নীতিতে টিলারসনের প্রভাব কেমন হবে সে সম্পর্কে ধারণা পেতে চেয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর টিলারসনের বিভিন্ন বক্তব্য ইঙ্গিত দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসনের বৈদেশিক নীতির ওবামা আমলের অনেক ভিন্ন হবে। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।