পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আবু তাহের আনসারী, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) : দেশের সর্বউত্তরের স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় নেই দূর-পাল্লার পরিবহন ব্যবস্থা নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। ফলে সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দরটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে পড়তে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তিতে। প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্য অনেকেই প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন ও মোবাইল নেটওয়ার্কের অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পর্যটকদের। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের জন্য রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি নাইট ও ডে কোচ নাই এছাড়া রংপুর বিভাগীয় শহর সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ না থাকায় পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর জিরোপয়েন্ট থেকে বাংলাবান্ধা বাসটার্মিনালের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার, বাস টার্মিনাল থেকে তেঁতুলিয়া সদরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড় শহরের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থলবন্দরের সঙ্গে পঞ্চগড় জেলা শহরসহ দিনাজপুর-রংপুরের দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের জন্য পর্যটকদের সড়ক পথে কোন বাস যোগাযোগ নাই। অন্যদিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্ক সংযোগ না পেয়ে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না আগত পর্যটক ও ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় জনসাধারণ। অনেক পর্যটক তার নিদিষ্ট ঠিকানায় যোগাযোগ রক্ষা করতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়েন।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুঁড়ির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার, নেপালের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার ও ভুটানের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চালুর পর ইতোমধ্যে চার দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হয়েছে। এই স্থলবন্দর থেকে চীনের দুরুত্ব মাত্র ২শ’ কিলোমিটার। এছাড়াও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ঘোষিত চার দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অন্যান্য বাণিজ্যিক সীমান্তপথের স্থলবন্দরগুলোর মধ্যে বাংলাবান্ধা অন্যতম।
বাংলাবান্ধা বন্দর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে ভারতের শিলিগুঁড়ি শহর। সেখান থেকে রেল, আকাশ ও সড়কপথে ভারতের যে কোনো প্রান্তে অনায়াসে যাতায়াত সম্ভব। ব্যবসায়িক, পর্যটনসহ সকল সুবিধা শিলিগুঁড়ি শহরে বিদ্যমান। আর ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত রাজ্যগুলোতে প্রবেশের একমাত্র করিডোর হচ্ছে শিলিগুঁড়ি শহর। এজন্য পর্যটকদের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে এই স্থলবন্দর। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সাথে এই স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১১ সালের জানুয়ারীতে শুরু হয় ভারতের সাথে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে ভুটানের সাথে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম।
গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় পূর্ণাঙ্গ ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। ফলে চতুর্দেশীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বপ্নের দুয়ার খুলে যায়। এর মধ্যে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক যাত্রী এই ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ব্যবহার করেছেন। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে ৩৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা ৪৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বন্দর দিয়ে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর প্রথম শ্রেণির স্থলবন্দর হিসাবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম পুরোদমে চালু হলে রাজস্ব আয় কোটি টাকা ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি, চেম্বার্স অব কমার্সের পরিচালক রেজাউল করিম শাহিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের এ বন্দরে দূর-পাল্লার পরিবহন ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছে। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি অতি দ্রæত এ সমস্যা সমাধানের জন্য।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা কানন সরকার জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক আর দূর-পাল্লার পরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায় এই স্থলবন্দরে যাত্রীরা এসে বিরম্বনায় পড়েন, অথচ এই বন্দরের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।