Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত : মৌমাছির গুঞ্জরনে মুখর একই বাড়িতে ৪২ মৌচাক

প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নজরুল ইসলাম, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে : রাজবাড়ী জেলা সদরের রামকান্তপুর ইউনিয়নের বাল্লাহরিয়া গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখে পরে মাঠের পর মাঠ শরিষার ক্ষেত। আর এ ক্ষেতগুলোকে ঘিরে ওই গ্রামের বসতবাড়ির নারিকেল, আম, সজিনা, মেহগনী, ঝাউগাছ, ঘরের কার্ণিসসহ যেখানে-সেখানে বসেছে মৌ চাক। সব চেয়ে অধিক পরিমাণে মৌ চাক বসেছে স্থানীয় জমশের মোল্লার বাড়িতে। এ বাড়িতে প্রবেশ করলেই যে কোন মানুষের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। ওই বাড়ির প্রায় সকল ধরনের গাছেই বসেছে মৌ চাক। পরিবারটির দাবি তাদের বাড়িতে এখন রয়েছে ৪২টি মৌচাক। ১০/১২ বছর ধরে এ গ্রামে মৌ মাছির আনাগোনা বেড়েছে। প্রতিবছরের শীত মৌসুমে মৌ মাছিরা কোথা থেকে যেন এসে গ্রামের বিভিন্ন বসত বাড়ি ও জঙ্গলের গাছগুলোতে মৌ চাক তৈরি করে। এতে করে এ গ্রামের মাঠের পর মাঠে থাকা শরিষা ক্ষেতের ফলন ভাল হয়। সেই সাথে গ্রামবাসী বিনা টাকায় পাচ্ছেন পরিচ্ছন্ন মধু। কোন কারণ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে মৌ মাছিগুলো এলাকার বাড়িতে বাড়িতে চাক তৈরি করেছে। ফলে এলাকাবাসী হচ্ছেন লাভবান। দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর পরই তারা পাচ্ছেন ভেজালমুক্ত স্বচ্ছ পুষ্টিকর মধু। এতে এলাকাবাসী তাদের পারিবারিক ও আত্মীয় -স্বজনের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি কিছু মধু বিক্রিও করতে পারছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করা হয়। তবে এ গ্রামটি অন্য এলাকার মত নয়। এখানকার বাসিন্দাদের মৌ বাক্স স্থাপন করতে হয় না। এখানে প্রাকৃতিকভাবেই আসে মৌ মাছি। বর্তমানে এ গ্রামে দেড় শতাধিক মৌ চাক রয়েছে। মৌ মাছিগুলো শীত মৌসুমে এ গ্রামে আসে। শরিষা, তিল ও আম মুকুল থেকে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। তারা চাকগুলো থেকে মধু সংগ্রহের পর তা বাড়ির মালিককে কখনো অর্ধেক আবার কখনো তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে থাকেন। তবে তাতেও মধুর পরিমাণ কম হয় না। বিগত বছর বাড়ির মালিকদের দেয়ার পরও এ গ্রাম থেকে কমপক্ষে ৩০ মণ মধু (১ হাজার ২শত কেজি) তারা সংগ্রহ করেছে। এ মধু প্রতি কেজি চার শত টাকা দরে বিক্রি করা হয়। সে হিসেবে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মধু বিগত বছর বিক্রি করা হয়েছিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ মধু স্থানীয়ভাবেই বিক্রি হয়ে যায়। কোন কোন সময় পূর্বে অর্ডার দেয়া ব্যক্তির কাছে তা বিক্রি করা হয়। প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে এ বছর বিগত বছরের চাইতে বেশি মধু এ গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুন কুমার সরকার জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চাষিদের মৌচাষে আগ্রহী করা হচ্ছে। প্রাকৃতিকভাবে ছাড়াও রাজবাড়ী জেলায় ১৪২টি মৌ বাক্সে মৌ চাষ করা হচ্ছে। এ থেকে প্রতিবছর ৩০ মণের অধিক মধু উৎপাদিত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত : মৌমাছির গুঞ্জরনে মুখর একই বাড়িতে ৪২ মৌচাক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ