ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
দোস্ত পরের বাসে আই... এই বাসে জায়গা নাই...! এমনি কিছু পরিচিত শব্দ প্রতিদিন ভেসে আসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনের ভেতর থেকে রাস্তায় বাসের জন্য অপেক্ষারত ক্যাম্পাসগামী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে। কেউ বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাস দেখে, কেউ বাসের ভিতর যাওয়ার জন্য বাসের দরজা থেকে ঠেলাঠেলি শুরু করে, কেউ কেউ বাসের গেটে ঝুলে থাকে, কেউবা আবার ঘণ্টা খানেকের জন্য তার লজ্জাকে বিসর্জন দিয়ে উঠেন বাসের ছাদে। লক্ষ্য সবার একটাই কারো ক্লাস, কারো পরীক্ষা, কারো আবার ভাইবা। প্রতিদিনের নিত্য এই যুদ্ধ এখন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেন নৈমিত্তিক রুটিন।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সঙ্কটে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন দাঁড়িয়ে অথবা বাদুর ঝোলা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে থাকে। এতে করে যে কোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনার আশংকা করছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
২০০৬ সালে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল পৌর শহরের নামাপাড়ায় কবির স্মৃতিবিজড়িত বটতলার কাছে ২০ একর জমিতে যাত্রা করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজার কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত হল বা আবাসিক সুবিধা না থাকায় এসব শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই অবস্থান করে ময়মনসিংহ শহর ও আশপাশের এলাকায়। ময়মনসিংহ শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার হওয়ায় প্রতিদিন বাসে করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যাওয়া আসা করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বাস রয়েছে মাত্র ৮টি। এর মধ্যে ৪টি ভাড়া করা আর ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম রিয়াদ এবং হাসনাত জানান, প্রতিদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব বিভাগের ক্লাস থাকায় শিক্ষার্থীদের একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হয়। কোনো কোনো দিন পরীক্ষা থাকায় দাঁড়িয়ে বা বাসের ছাদে উঠে অথবা বাদুর ঝোলা হয়ে ক্লাসে বা পরীক্ষায় হাজির হতে হয়। তাই আমাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষার্থীদের এ দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন প্রশাসন রেজুয়ান আহমেদ (শুভ্র) জানান, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বাস বাড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং শিক্ষার্থীদের বাস বাড়ানোর জন্য একটি মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু পরিবহন প্রশাসন বাস নিয়ে গুরুত্ব দিলেও তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে আমাদের উপাচার্য মহোদয় খুবই আন্তরিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দুই জন ব্যক্তি জানান, অর্থ-হিসাব দপ্তর থেকে জানতে পারি অর্থ সঙ্কটের কারণেই শিক্ষার্থীদের বাস দেয়া যাচ্ছে না।
এদিকে নতুন শিক্ষাবর্ষে আরো ৮২৫ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ায় বাস সঙ্কট আরো প্রকট হয়েছে। অতি শীঘ্রই বাসের সংখ্যা না বাড়ালে পরিবহন সমস্যা আরো তীব্র আকার ধারণ করবে এমনটাই জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাই পরিবহনের জন্য বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জোর দাবি শিক্ষার্থীদের।
ষ মো. ওয়াহিদুল ইসলাম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।