মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আমাদের সমস্যাগুলোর দিকে তাকালে চীনকে উপরের দিকেই দেখা যাবে : যুক্তরাষ্ট্র
ইনকিলাব ডেস্ক : চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার দেশের বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। আমরা কোনো বাণিজ্যযুদ্ধ দেখতে চাই না। চীনা পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশন শেষে গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লি কেকিয়াং এ কথা বলেন। বেইজিংয়ের গ্রেট হল দ্য পিপলে গত বুধবারের এ সংবাদ সম্মেলনে প্রায় এক হাজার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এদের বিরাট অংশ ছিলেন বিদেশী সাংবাদিক। আইনে স্নাতকোত্তর ও অর্থনীতিতে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী লি কেকিয়াং তাদের উদ্দেশে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির চালিকাশক্তি চীনের সামনে বহির্গত কিছু রয়েছে। ২০১৭ সালে আমরা ৬ দশমিক ৫ শতাংশ অথবা তার বেশি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। অর্থনীতির ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রসার শ্লথ কিছু নয়। এটা খুব সহজে অর্জনযোগ্য কিছু নয়। এর আগে মার্কিন বাণিজ্যদূত পদে মনোনীত রবার্ট লাইথিজার বলেছেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সংকট তালিকার উপরের দিকে অবস্থান করছে। রবার্ট লাইথিজার বাণিজ্যদূত পদে তার মনোনয়ন নিশ্চিত করতে সিনেটের শুনানিতে বক্তব্য রাখছিলেন। সিনেট ফিন্যান্স কমিটির সদস্যদের তিনি বলেন, আমাদের সমস্যাগুলোর দিকে তাকালে চীনকে উপরের দিকেই দেখা যাবে। আমার বিচারে চীন অতীতে বড় ধরনের মুদ্রা কারসাজিকারক ছিল। তবে দেশটি এখন মুদ্রার মানে হস্তক্ষেপ করছে কিনা, তা অর্থ মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। রবার্ট লাইথিজার এ বক্তব্যের মাধ্যমে কার্যত মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চীন বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেন। মন্ত্রণালয় গত বছর চীনকে মুদ্রা কারসাজি ইস্যুতে নজরদারি তালিকায় রেখেছিল। বিভিন্ন দেশের মুদ্রানীতি সম্পর্কে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্ধবার্ষিক পর্যালোচনা প্রতিবেদন আগামী মাসে প্রকাশ হবে। রবার্ট লাইথিজার ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডবিøউটিও) চীনের অন্তর্ভুক্তিতে সমর্থন দেয়ায় মার্কিন কর্মকর্তাদের কঠোর সমালোচনা করেন। তার মতে, কর্মকর্তাদের ওই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকে দুর্বল করেছে বলেও তিনি মতপ্রকাশ করেন। মার্কিন সিনেটরদের রবার্ট লাইথিজার বলেন, চীনের শিল্পনীতির বিষয়ে কার্যকর সমাধান দেয়া ডবিøউটিওর পক্ষে সম্ভব নয়। বাণিজ্য-বিষয়ক মামলা নিষ্পত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন সৃজনশীল সমাধান। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক ক‚টনীতিতে বাণিজ্যদূত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। রবার্ট লাইথিজার এর আগে রোনাল্ড রিগ্যান প্রশাসনে সহকারী মার্কিন বাণিজ্যদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাণিজ্য-বিষয়ক পেশাদার আইনজীবী রবার্ট লাইথিজারের নিয়োগ বিলম্বিত হয়েছে তার পেশাদারি রেকর্ডের কারণে। বহু বছর আগে তিনি ব্রাজিল ও চীনের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আইনে বাণিজ্য আলোচনা অথবা বিরোধে বিদেশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থাপন ও সহায়তা করলে অথবা পরামর্শ দিলে এমন ব্যক্তিকে মার্কিন বাণিজ্যদূত নিয়োগের ব্যাপারে প্রেসিডেন্টকে নিষেধ করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে প্রণীত মার্কিন বাণিজ্য আইনে এজন্য ১৯৯৫ সালে একটি সংশোধনী জুড়ে দেয়া হয়েছে। তবে মঙ্গলবারের শুনানি শেষে সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান ওরিন হ্যাচ বলেছেন, রবার্ট লাইথিজারের নিয়োগ দ্রæত নিশ্চিত না করার কোনো কারণ নেই। মার্কিন বাণিজ্যদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের তার যোগ্যতা সম্পর্কে কারো মতান্তর নেই। মঙ্গলবারের শুনানিতে রবার্ট লাইথিজার চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক করারোপের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। চীনের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম খাতের অতিসক্ষমতাকে সমস্যাজনক আখ্যায়িত করে রবার্ট লাইথিজার বলেন, অতিসক্ষমতা হ্রাসে চীনকে উৎসাহিত করার ফোরাম রয়েছে। সেখানে কিছুটা অগ্রগতি হতে পারে। তবে বাণিজ্য-আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে, যাতে চীনা প্রস্তুতকারকদের আরো বেগ পেতে হয়।
এদিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেছেন, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা ও নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন অনেক স্বার্থ রয়েছে। এজন্য পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষের আলোচনা অব্যাহত রাখা চাই। বিশেষত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক চীন নীতিকে সমর্থন দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। লি কেকিয়াং চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন শেষে প্রথামাফিক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা কোনো বাণিজ্যযুদ্ধ দেখতে চাই না। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রকে অনেক লাভবান করেছে। চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, চীন মুক্তবাণিজ্য ও বিশ্বায়নের পক্ষে দ্বিধাহীন অবস্থান নিয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিক নিষ্পত্তি ও শাসন ব্যবস্থা উন্নয়নে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছি। বøুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।