Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রথম ঘণ্টায় শেষ বাংলাদেশ

| প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলংকা) থেকে :
শ্রীলংকা : ৪৯৪ ও ২৭৬/৬ ডি.
বাংলাদেশ : ৩১২ ও ১৯৭
ফল : বাংলাদেশ ২৫৯ রানে পরাজিত
চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে তামীম-সৌম্য’র ৬৭ রানের পার্টনারশিপ দেখিয়েছে বাংলাদেশকে স্বপ্ন। উইকেট অস্বাভাবিক আচরণ না করায় শেষ দিনে ৯৮ ওভার পাড়ি দেয়া অসম্ভব মনে করেননি সাকিব আল হাসানও। গল এ চতুর্থ ইনিংসে ৯৯’র বেশি চেজ করে জয়ের অতীত নেই কারো। এই অতীতের সঙ্গে শ্রীলংকার বাঁ-হাতি স্পিনার হেরাথের সাম্প্রতিক ফর্ম রাঙাচ্ছে চোখ, এটা বোধ হয় ভুলেই গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। নিজেরাই যেখানে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারতে জানেন, টেস্ট ব্যাকরণ ভুলে শটস খেলতে প্রলুব্ধ হন- সেখানে উইকেট যতই স্বাভাবিক আচরণ করুন, খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা যে দায়। শ্রীলংকার বর্তমান দলটির চেয়ে নিজেদেরকে অভিজ্ঞ ভেবে- সাঙ্গাকারা, মাহেলা, দিলশান, ম্যাথুউজহীন দলের বিপক্ষে নিজেদেরকে ফেভারিট ধরে নিয়ে আত্মতুষ্টিই হয়ে দাঁড়ালো কাল! ৫ম দিনের প্রথম সেশনে ৪৬ রানে ৫ উইকেট, আর লাঞ্চের পরের ঘণ্টায় ৪০ রানে শেষ ৫ উইকেট! তাতেই শেষ বাংলাদেশ! ড্র’র স্বপ্ন দেখানো ম্যাচ ২৫৯ রানে হেরে নিজেদের অসহিষ্ণু ব্যাটিং চিত্রই আর একবার প্রদর্শন করেছে বাংলাদেশ।
দিনের প্রথম বলেই করেছিলেন ভুল সৌম্য। গুনারত্মের প্রথম বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পরও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। পরের বলে অফ স্ট্যাম্পের উপরের বেলস দিয়েছেন ফেলে গুনারত্মে! দিনের দ্বিতীয় বলে সৌম্য’র এই অপরিণামদর্শী আউট দেখেও সাবধানী হননি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। পেরেরাকে মুমিনুল পুল করতে যেয়ে এলবিডাব্লতে হচকিত(৫), বিলম্বিত ডিআরএস’র সিদ্ধান্ত নিয়ে আরো বিস্মিত করেছেন ক্রিকেট বোদ্ধাদের। সেই গুনারত্মের বাউন্সি ডেলিভারিতে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে তামীম দিয়েছেন ¯িøপে ক্যাচ ( ১৯)। হেরাথের এক ওভারে পর পর ২ বলে সাকিব (৮) লেগ ¯িøপে এবং মাহামুদুল্লাহ (০) এলবিডাবøুতে কাঁটা পড়লে দিন পার করার লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ৩৭ রানে ৫ উইকেটের পতনেই স্বপ্ন ভঙ্গের আগাম বেদনায় কাতর হতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে।
৬ষ্ঠ জুটিতে মুশফিক-লিটনের ৫৪ রান কিছুক্ষণের জন্য স্বপ্ন দেখালেও লাঞ্চের পরেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। আবারো নুতন সেশনের দ্বিতীয় বলে ব্যাটসম্যান হারানোর মধ্য দিয়ে শুরু বিপর্যয়। লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে চায়নাম্যান সান্দাকানের পিচিং ডেলিভারি বেরিয়ে যাচ্ছে দেখেও ফাইন দিয়ে খেলার চেস্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত, ফিরে গেছেন মুশফিক ৩৪-এ। বাংলাদেশ ইনিংসে অবশিষ্ঠ ধাক্কাটা দিয়েছেন হেরাথ। তার এক স্পেলেই ( ৭.২-২-১০-৪) শেষ বাংলাদেশ।  লিটনকে ( ৩৫) প্রলুব্ধ করে কভারে তাকে শিকারে পরিণত করে টপকে গেছেন ভেট্টরীকে।  মিড অফে মিরাজ ( ২৮) ক্যাচ  দেয়ায়  বাঁ-হাতি স্পিনার হেরাথের শিকার সংখ্যা মাত্র ৭৯ ম্যাচে উন্নীত হলো ৩৬৬ তে। নিউজিল্যান্ডের ভেট্টরীকে (৩৬২) ছাড়িয়ে বাঁ-হাতি স্পিনারদের মধ্যে উইকেট শিকারের এভারেস্টে দিয়েছেন পা হেরাথ।  চার বছর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই গল এ হতে হয়েছে তাকে হতাশ ( ২ উইকেটে খরচা ১৭৬ রান)। সেই গল এ বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে পেলেন হেরাথ ১৩১ রানে ৯ উইকেট! অধিনায়ক হেরাথের পারফরমেন্সে একক কোন দলের বিপক্ষে সর্বাধিক জয়টিও শ্রীলংকা অর্জন করেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে ( ১৭ ম্যাচে ১৫তম জয়)। ২০১৫ সালে ভারতের কাছে ২-১ এ টেস্ট সিরিজ হেরে যাওয়ার পর হোমে দুর্বার শ্রীলংকা ৬ ম্যাচের ৬টিতে জিতে চোখ রাখছে ২০০১-২ সালে হোমে টানা ১০ জয়ের রেকর্ডের দিকে।



 

Show all comments
  • সাগর ১২ মার্চ, ২০১৭, ৩:০১ এএম says : 0
    মাঝে মাঝে বাংলাদেশ খেই হারিয়ে ফেলে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ