Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিল্লীর সা’দ সাহেব তাবলীগের আমির নন

| প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ^ তাবলীগের নীতি নিয়ম ও অতীত হজরতজীদের নির্দেশনা ভঙ্গ করে দিল্লীর মাওলানা সা’দ সাহেব দাওয়াত ও তাবলীগের যে সর্বনাশ ডেকে এনেছেন তা এখন তার স্বৈর মনোভাবের নির্লজ্জ রূপ ধারন করেছে। সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন মসজিদে তাবলীগ জামাত প্রকাশ্যে দুই গ্রæপে বিভক্ত হয়ে মারাত্মক দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েছে। বোম্বের এক মসজিদে সা’দ সাহেবের লোকেরা তাকে আমির না মানার অজুহাতে জামাতের সাথীদের পিটিয়ে আহত ও রক্তাক্ত করেছে। এর আগে দিল্লীর এক মসজিদ থেকে বিদেশী জামাতের সাথীদের সা’দ সাহেবের লোকেরা অপহরণের চেষ্টা চালায়। গতকাল এক বিবৃতিতে তাবলীগ সুরক্ষা কমিটির সেক্রেটারী মুফতি আনিসুল হক এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, তাবলীগের এই জনপ্রিয় কাজকে নিয়ে বিশ^ব্যাপী যে অস্থিরতা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে এর জন্য মাওলানা সা’দ সাহেবকে অবৈধভাবে একক আমির বা জিম্মাদার বানানোর চেষ্টাই দায়ী। কেননা তাবলীগ এর এই মেহনত একটি শূরার ভিত্তিতে প্রায় দুই যুগ ধরে চলে আসছিল। বিশ^ তাবলীগের মুরুব্বীরা বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং কাজের হেফাজতের স্বার্থেই এই পদ্বতি অনুসরণ করে আসছেন। বর্তমানে নতুনভাবে গঠিত শূরাকে অকার্যকর করে এবং আমির নিয়োগের শরীয়ত সম্মত ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করে মাওলানা সা’দ সাহেবকে একক আমির বা একক ফয়সল বা একক জিম্মাদার বানানোর চেষ্টা কিংবা ঘোষণাই তাবলীগ জামাতকে দ্বি-খÐিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
গুটিকতক অপরিণামদর্শী ও স্বার্থপর লোক তাকে আমির বানানোর নানা চেষ্টা ক’রে আসছে। এমনকি তারা  ভয়ভীতি, হামলা-মামলা ও মিথ্যা প্রচারণার আশ্রয় নিচ্ছে। তাবলীগের নীতিবিরোধী হওয়া সত্তে¡ও তারা এইসব বিষয়ে মিডিয়ায় বিবৃতি ও সংবাদ প্রচার করছে। নানা বাহানায় সা’দ সাহেবকে জিম্মাদার, আমির বা হজরতজী নামে জাহির করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও বহু মতামত চিন্তাধারা নীতি ও বিশ^াসের ক্ষেত্রে তাবলীগের অতীত মুরুব্বীদের সাথে সা’দ সাহেবের ব্যাপক বৈপরীত্ব রয়েছে। যে সব বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশে^র সব হাক্কানী আলেম-ওলামা তাকে সংশোধনের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। মাওলানা সা’দ সাহেব অনেক ক্ষেত্রে ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে সতর্ক হয়ে চলার ওয়াদা দিলেও তার অন্ধ সমর্থকদের অতি বাড়াবাড়ি গোটা বিষয়টিকে সঠিক পর্যায়ে ফিরিয়ে নেয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য যে, হাক্কানী উলামায়ে-কেরাম তাবলীগ জামাতের বিরোধী নন। তারা নিজামুদ্দিন মার্কাজকে ও গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু নিজামুদ্দীন শুধুমাত্র মাওলানা সা’দ সাহেব নন। বিরোধের কারণে মার্কাজ থেকে চলে যাওয়া তাবলীগের আকাবির মুরুব্বীগণ ও নিজামুদ্দীন। এছাড়া মাওলানা সা’দ সাহেবের সাথে কারো কোনো ব্যক্তিগত শত্রæতা নেই। সা’দ সাহেবের কিছু বিতর্কিত চিন্তাধারা ও নীতি এবং অগ্রহণযোগ্য কিছু কথার কারণে ওনার বিরোধিতা করে আসছেন ওলামায়ে-কেরাম, ওনার মুরুব্বী ও ওস্তাদগণ। ওলামায়ে কেরাম শুধু দাওয়াতের এই মোবারক কাজটি অতীত মুরুব্বীদের পদ্ধতির উপর নিষ্ঠার সাথে চলুকÑ এটাই চান। তারা চান মাওলানা সা’দ সাহেব সত্যিকার অর্থেই তার ওস্তাদ, মুরুব্বী ও বুজুর্গ আলেমদের মতামতকে গ্রাহ্য করুন, শূরাকে মেনে নিন। বিরোধ, রক্তারক্তি, অপপ্রচার যেন বন্ধ হয়। ভারতব্যাপী মসজিদে মসজিদে দলাদলি, মারামারি, ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আলাদা জোড়, মসজিদে মসজিদে দ্বিমুখি জামাত, নিজামুদ্দীনকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক বহু মার্কাজ, মার্কাজের শূরার ভেতর গ্রæপিং ইত্যাদির অবসান জরুরী। দাওয়াত তাবলীগের কাজকে ব্যক্তিগত স্বার্থ চিন্তায় কেউ যেন ধ্বংসের পথে ঠেলে না দেন।



 

Show all comments
  • হা:মাওলানা মাহমুদুল হাসান বাশারী ১৩ মার্চ, ২০১৭, ১১:৩৬ এএম says : 0
    ৯২%মুসলমানের বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সামনে মুরতি বরদাস্ত করা হবেনা হবেনা হবেনা!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ