নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শ্রীলংকা ১ম ইনিংস ঃ ৪৯৪/১০ (১২৯.১ ওভার)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ঃ ১৩৩/৩ (৪৬.০ ওভার)
(২য় দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলংকা) থেকে : প্রথম দিনে আফসোসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শুভাশিষের নো বল। দ্বিতীয় দিনে মতিভ্রম হয়ে তামীমের রান আউট জন্ম দিয়েছে আর একটি আফসোসের! প্রথম দিন শেষে স্বাগতিক দলের স্কোরে (৩২১/৪) যেখানে রান পাহাড়ে চাপা পড়ার শংকা ছিল তীব্র, সেখানে প্রথম দেড় দিনের ফ্লাট উইকেটে ৫’শর নিচে শ্রীলংকাকে বেঁধে ফেলা কম কিসের? দ্বিতীয় দিনের শেষ ৪০ মিনিটের ঝাঁকুনি বাদ দিলে দিনটি তো আরো ভাল হতে পারতো বাংলাদেশের। তারপরও ৪ বছর আগের সেই টেস্টের আবহই যেনো ফিরে পেয়েছে গল। প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকার ৫৭০’র জবাব দিয়ে সেই ম্যাচের দ্বিতীয় দিনটা শেষ করেছিল বাংলাদেশ ১৩৫/২ স্কোরে, চলমান টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সেখানে শ্রীলংকার ৪৯৪’র জবাবে বাংলাদেশের স্কোর ১৩৩/২! প্রতিপক্ষের বড় স্কোরের জবাব বড় স্কোরে দেয়ার স্বপ্নই যে দেখছে বাংলাদেশ।
সেট পার্টনারশিপের ২ ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিজ, ডিকভেলাকে ফিরিয়ে দিতে পারলেই পাল্টে যাবে দৃশ্যপট, প্রথম দিনের খেলা শেষে এমনটাই বিশ্বাস ছিল মিরাজের। দুই সেট ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে রেখেছেন কথা এই তরুণ অফ স্পিনার। মিরাজের এই একটি ব্রেক থ্রু-ই ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশকে। প্রথম দিনে অবিচ্ছিন্ন ১৬৬ তে নিজের প্রথম ডাবলের স্বপ্ন দেখা কুশল মেন্ডিজের ডাবল সেঞ্চুরি অবধারিত বলে ধরেই নিয়েছিলেন সবাই। কিন্তু তাকে সে স্বপ্ন পূরণ হতে দেননি মিরাজ। মেন্ডিজকে ১৯৪ এ ফিরিয়ে দিয়েছেন। গতকাল ৩ ঘণ্টা স্থায়িত্ব পাওয়া শ্রীলংকার অবশিষ্ট ইনিংসে যোগ হয়েছে ১৭৩ রান, শেষ ৬ উইকেটের পতন ঘটেছে সেখানে ৯৬ রানে! তা সম্ভব হয়েছে মিরাজের ২টি স্পেলে (৮-১-৩৮-২ ও ১-০-১-১)।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত টেস্ট অভিষেক সিরিজে ১৯ উইকেটে ইতিহাস রচনা করা মিরাজ বিদেশের মাটিতে দ্যুতি ছড়াতে শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছেন গল কে ই (৪/১১৩)। টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে শ্রীলংকার মাটিতে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং এতোদিন ছিল শুধু এনামুল জুনিয়র এবং সৈয়দ রাসেলের। ২০০২ সালে পি সারায় বাঁ হাতি স্পিনার এনামুল জুনিয়র (৪/১৪৪), ২০০৫ সালে একই ভেন্যুতে সৈয়দ রাসেলের (৪/১২৯) পাশে চলমান গল টেস্টে মিরাজের ও শিকার ৪ উইকেট (৪/১১৩)। শুধু তা ই নয়, মিরাজের বোলিংয়ে শ্রীলংকার মাটিতে স্বাগতিক দলকে এই নিয়ে তৃতীয়বার অল আউট করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০০২ সালে এসএসসিতে ৩৭৩ এবং ২০১৩ সালে প্রেমাদাসায় ৩৪৬’র পর গল এ ৪৯৪এ শ্রীলংকাকে অল আউট করলো বাংলাদেশ।
হয়ে যাওয়া ৯৮ টেস্টে বাংলাদেশের ওপেনিং পার্টনারশিপ খুব একটা বাহাবা পায়নি। গল এ ৯৯তম টেস্টে অবতীর্ণ হওয়ার আগে প্রথম ইনিংসে ওপেনিং জুটিতে ১০০ পেরুতে পেরেছে বাংলাদেশ মাত্র ২ বার। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামীম-ইমরুলের ২২৪ রানের পাশে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে ১১৮। ওপেনিং পার্টনারশিপে সেঞ্চুরির সংখ্যাটি গল টেস্টে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন এ। তামীম-সৌম্য’র পার্টনারশিপে এসেছে ১১৮ রান। জীবন পেয়ে ইনিংস কিভাবে বড় করতে হয়, কুশল মেন্ডিজের শিখিয়ে দেয়া সেই দীক্ষাটা নিয়ে ভালই এগুচ্ছিল তামীম-সৌম্য’র পার্টনারশিপ। ৪ রানের মাথায় গালিতে ক্যাচ দিয়ে সৌম্য বেঁচে দিনটি পার করেছেন ৬৬ তে। ২৮ রানের মাথায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২১তম ফিফটি উদযাপনকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন তামীম। যেভাবে খেলেছেন এই দুই বাঁ হাতি ওপেনার, তাতে প্রত্যাশা ছিল নির্বিঘেœ দ্বিতীয় দিন পার। আর মাত্র ১০ ওভার কাটাতে পারলেই জুটিটি অবিচ্ছিন্ন থেকে পারতো দিন শেষ করতে। তবে ২৮ রানে বেঁচে যাওয়া তামীম ২১তম ফিফটি উদযাপনেই হারালেন মনোসংযোগ।
বাঁ হাতি স্পিনার সান্দাকানের ডাউন দ্য লেগ পিচিং ডেলিভারিতে উইকেট কিপার ডিকভেলা কট বিহাইন্ডের আপীল করেছেন, ওই আপীলটাই বিগড়ে দিয়েছে তামীমকে। শ্রীলংকা উইকেট কিপারের গøাভসে বল দেখে নন স্ট্রাইক ব্যাটসম্যান সৌম্য পর্যন্ত দেননি কল, অথচ তামীম অকারণে রান নিতে যেয়ে পড়েছেন রান আউটে কাঁটা (৫৭)। গল থেকে শুরু যার টেস্ট ক্যারিয়ার, অভিষেকে ফিফটিতে আদর্শ টেস্ট ব্যাটসম্যানের সার্টিফিকেট পাওয়া সেই মুমিনুলের আউটটাও মনো:পুত হয়নি কারো। পেরেরার অফ স্পিন স্ট্যাম্পের উপর জোড়া পায়ে খেলতে যেয়ে এলবিডাবøুতে পড়েছেন কাঁটা (৭)। দ্বিতীয় দিনের শেষ ৪০ মিনিটের এই ধাক্কা সামাল দিয়ে স্কোর ৫’শ টেনে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশ কোচ। তবে ৩৬১ রানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশের সামনে ফলো অন এড়ানোর চ্যালেঞ্জও থাকছে। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে উইকেটে যেভাবে ধরেছে স্পিন, তাতে আজ বিপদসংকুল পথই যে দিতে হবে পাড়ি বাংলাদেশ দলকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।