Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তুষারের ব্যাটে রেকর্ড আর ইতিহাস

| প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : এবারের বিসিএল যেন নতুন করে চেনালো তুষার ইমরানকে। এমনতিইে সেঞ্চুরির ফুলঝুরি ছুটতো তার ব্যাটে, এবার যেন সেটি ছাড়িয়ে যাচ্ছে কল্পনাকেও। শিরোপা নির্ধারণী ৬ষ্ঠ রাউন্ডের দুই দিন শেষ। এখনও শেষ হয়নি দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংস। উইকেটকিপার নুরুল হাসানসহ পূর্বাঞ্চলের হয়ে হাত ঘুরিয়েছেন ১০ জন। থামানো যায়নি দক্ষিণাঞ্চলের রানের ¯্রােত। গড়েছে রানের এভারেস্ট!
আগের দিনই সেঞ্চুরি করেছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও তুষার ইমরান। তুষার তার সেঞ্চুরিকে রূপ দিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। দুইশর কাছাকাছি গিয়ে দিন শেষ করেছেন শাহরিয়ার নাফীস। বিসিএলে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়েছে দক্ষিণাঞ্চল। বিকেএসপিতে দ্বিতীয় দিন শেষে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৭০১ রান তুলেছে দক্ষিণাঞ্চল। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি এই প্রথম দেখল ৭০০ রানের স্কোর। এবার এই রান হজম করল যারা, সেই মধ্যাঞ্চলের ছিল আগের রেকর্ড। ২০১৩ সালে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে বগুড়ায় তারা করেছিল ৭ উইকেটে ৬৫৫।
২ উইকেটে ৩২৫ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল দক্ষিণাঞ্চল। দিনের শুরুতেই মোহাম্মদ মিঠুনকে ফেরান মোহাম্মদ শরীফ। আগের দিনের ১২৭ রানের সঙ্গে আর ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। তুষারের সঙ্গে মিঠুনের ২৩০ রানের জুটি ভাঙলেও স্বস্তি পায়নি পূর্বাঞ্চল। শাহরিয়ার নাফীসের সঙ্গে আরেকটি দুইশ রানের জুটি গড়েন তুষার! ৩১২ বলে তুষার স্পর্শ করেন ডাবল সেঞ্চুরি। এবারের বিসিএলে তিন ম্যাচের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারে তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে ছুঁয়েছেন অলক কাপালী ও মোসাদ্দেক হোসেনের রেকর্ড।
তুষারের ম্যারাথন ইনিংস শেষ পর্যন্ত শেষ হয়েছে অনিয়মিত বোলারের বলে। চা-বিরতির ঠিক আগে আউট হয়েছেন মার্শাল আইয়ুবের বলে। সাড়ে সাত ঘণ্টায় ২১ চারে ৩৪০ বলে ২১৭! এই ইনিংসের পর চলতি মৌসুমে তুষারের রান ১ হাজার ২২১। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মৌসুমে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড লিটন কুমার দাসের ১ হাজার ২৩২। এই জুটি ভাঙার পর সেভাবে আর কোনো বড় জুটি গড়ে ওঠেনি। তবে চালিয়ে গেছেন শাহরিয়ার। দিন শেষে ত্রয়োদশ সেঞ্চুরিতে অপরাজিত ১৭০ রানে। ২৩৮ রানের ইনিংসে ১৪ টি চারের পাশে ছক্কা ৫টি।
বিকেএসপিতে যখন ব্যাটসম্যানদের আধিপত্য, ঠিত তার উল্টো চিত্র ফতুল্লায়। খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে রাজত্ব করে বেড়াচ্ছেন বোলাররা।
শ্রীলঙ্কা সফরের দলে জায়গা পাননি ফিটনেস নিয়ে সংশয়ে। সেই খেদ থেকেই কিনা, গল টেস্ট শুরুর আগের দিন শফিউল ইসলাম জ্বলে উঠলেন বল হাতে। উত্তরাঞ্চলের হয়ে বিসিএলে নিলেন ৫ উইকেট। জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়া পেসারের পাশাপাশি এদিন ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল ছিলেন পূর্বাঞ্চলের তরুণ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। দিনের শুরুতে ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৭৪ রানে আটকে রাখেন উত্তরাঞ্চলকে। পরে ব্যাটিংয়ে ধুঁকতে থাকা দলের সর্বোচ্চ রানও তার। ৫ উইকেটে ৩০৫ রান নিয়ে দিন শুরু করে উত্তরাঞ্চল। নাজমুল হোসেন শান্ত ও ধিমান ঘোষ দলকে নিয়ে যান সাড়ে তিনশর ওপারে। এরপরই হঠাৎ ধস।
শান্তকে ফিরিয়ে ধসের শুরু করে সাইফুদ্দিন। ৪৭ রান করা ধিমানকে ফেরান আবুল হাসান। আলাউদ্দিন বাবুকে ফিরিয়ে ইনিংসের ইতিও টানেন সাইফুদ্দিন। ১৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় উত্তরাঞ্চল।
ব্যাটিংয়ে প্রত্যাশিত রান না এলেও শিরোপা প্রত্যাশী উত্তরাঞ্চলকে পথে রাখে শফিউলের বোলিং। দুর্দান্ত প্রথম স্পেলেই নেন ৩ উইকেট। পরে ফিরে ছোবল দেন মিডল অর্ডারে। ৪৩ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো নেন ৫ উইকেট।
১২৮ রানেই প্রথম ৭ ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছিল পূর্বাঞ্চল। বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতেও ত্রাণকর্তা সাইফুদ্দিন। রাহাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে তার ৬৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিনটা পার করে দেয় দল। আজ দলকে এগিয়ে নেয়ার লড়াই শুরু করবেন সাইফুদ্দিন ৩৫ রান নিয়ে।
দক্ষিণাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১৮০ ওভারে ৭০১/৮ (মিঠুন ১৩১, তুষার ২১৭, শাহরিয়ার ১৭০*, আল আমিন ৩৪, জিয়াউর ০, নাহিদুল ৯, রাজ্জাক ১০, নাজমুল ২৫*; শরিফ ১/৫৩, আবু হায়দার ০/১০০, শুভাগত ৩/২০২, মোশাররফ ১/১৩৮, তাইবুর ০/১০১, তানবির ২/৬৫, সাইফ ০/৭, মার্শাল ১/১১, নুরুল ০/৭, রনি ০/৬)।
উত্তরাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১১১.৩ ওভারে ৩৭৪ (আগের দিন ৩০৫/৫) (শান্ত ৪৩, ধিমান ৪৭, আলাউদ্দিন ৭, ফরহাদ ০, সানজামুল ১, শফিউল ০*; আবু জায়েদ ০/৭৯, সাইফুদ্দিন ৪/৫৫, আবুল হাসান ৩/৮৫, অলক ১/১৯, নাঈম ০/৫৮, আফিফ ১/২৩, রাহাতুল ১/৩৪, তাসামুল ০/১২)।
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৬১ ওভারে ১৯২/৭ (আফিফ ২, জাকির ১১, তাসামুল ১৭, ইরফান ৪, অলক ৩২, ইয়াসির ১১, আবুল হাসান ২৫, সাইফুদ্দিন ৩৫*, রাহাতুল ২৩*; শফিউল ৫/৫৬, আলাউদ্দিন ১/২৬, ফরহাদ রেজা ১/৩০, নাসির ০/১৩, সানজামুল ০/২৮, নাঈম ০/১১)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ