রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, সখিপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : সখিপুরের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আবার সচল হয়ে উঠছে সেই অবৈধ করাতকলগুলো। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স গত বছর মার্চে দু’দফায় অভিযান চালিয়ে বনাঞ্চলে অবৈধভাবে স্থাপিত ১৩টি করাতকল উচ্ছেদ করা হয়। খবর পেয়ে বাকি করাতকল মালিকরা নিজেরাই তাদের করাত কলগুলো সরিয়ে নেয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি/১৬ইং তারিখে টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে হতেয়া বিটের গিয়াস উদ্দিনের (সাবেক চেয়ারম্যান), ওয়াজেদ মার্কেট নঈম উদ্দিনের, জিনিয়ার মজনুর, বংশি নগর বিটে মুচির পুকুর পাড় আলাউদ্দিনের করাতকলসহ ৫টি করাতকল উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের সময় অন্যান্য করাতকল বন্ধ করে রাখা হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে পুনরায় অবৈধ করাতকলগুলো চালু করা হয়েছে। পুরাতন করাতকল ছাড়াও আরো কয়েকটি নতুন করাতকল স্থাপন করে দিনরাত বনাঞ্চলের কাঠ অবাধে চেরাই করা হচ্ছে। ফলে অবৈধ করাতকলের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সংরক্ষিত বনের কাঠ। উজাড় হচ্ছে সংরক্ষিত বন। বন আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপনের কোনো বিধান না থাকলেও বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় স্থানীয় ক্ষমতাসীন আ’লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা মিলেমিশে এসব করাতকলগুলো চালাচ্ছেন বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে। টাঙ্গাইল বন বিভাগের চারটি রেঞ্জের উপজেলার ১৪টি বিটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে স্থাপিত অবৈধ ৫৫টি করাতকল উচ্ছেদে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গত বছর ১ ও ১৫ মার্চ অভিযান চালানো হয়। ওই সময় হাতিয়া রেঞ্জে পাঁচটি ও বহেড়াতৈল রেঞ্জে আটটিসহ ১৩টি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করে অবৈধ মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি/১৬ইং টাস্কফোর্স ৫টি করাতকল উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানের সময় বনাঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া ৫০টি করাতকল ইতিমধ্যে চালু করা হয়েছে। সচল হওয়া ওইসব অবৈধ করাতকলগুলো হচ্ছে-বহেড়াতলী রেঞ্জের নাকশালা দুইটি, আইলসার বাজারে দুইটি, দাড়িয়াপুর আবাদীবাজার রউফের একটি, আকন্দপাড়া বাজার কাদেরের একটি, লুৎফরের একটি, দাড়িয়াপুর জিনের হাটখোলা গোলাপের একটি, ডাবাইল গ্রামে দুইটি, গোহাইলবাড়ি গ্রামে দুইটি, কাঁকড়াজানে দুইটি, মরিচা দুইটি, তৈলধারা দুইটি, গড়বাড়িতে দুইটি, সাপিয়াচালায় অজিতের একটি, কামরুলের একটি, ওসমানের একটি, জাফরের একটি, বাঘের বাড়ি একটি, মহান্দপুর একটি, গড়বাড়ি দুইটি, ইন্দ্রজানি দুইটি, হারিঙ্গাচালা দুইটি, বড়চওনায় দুইটি ও হাতিয়া রেঞ্জের বহুরিয়া রোডে তিনটি, দেওদিঘী বাজারে পলানের একটি, কালিদাস পুকুরপাড় মকবুলের একটি,ওয়াজেদ মার্কেট নঈম উদ্দিনের একটি, হতেয়া বাজারের চারপাশে সাতটি, পাথারপুরে চতলবাইদে দুইটি এবং বাঁশতৈল রেঞ্জের হলদে চালা একটি, পাথরঘাটা দুইটি, কাশেম বাজার মালেকের একটি, জসীম মার্কেট মন্টুর একটি, তক্তারচালা নতুন বাজার আলমের একটি, তক্তারচালা মাদ্রাসার আশে পাশে চারটি, বংশীনগর এলাকায় দুইটি করাতকল। সরেজমিন ঘুরে বনাঞ্চলে অবৈধভাবে স্থাপিত কলগুলো দিনরাত অবাধে বনের গাছ চেরানোর সচিত্র প্রমাণ পাওয়া য়ায়। গত কয়েকদিন যাবৎ অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করা হবে এ তথ্য ফাঁস হবার পর থেকে করাতকল মালিকগণ একবার বন্ধ করছে আবার চালু করছে। চালু হওয়া একাধিক করাতকল মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও বনবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেই কলগুলো চালু করা হয়েছে। হতেয়া গ্রামে স্থাপিত অবৈধ করাতকল মালিক চান মিয়া জানান, ‘উচ্ছেদের আগে বন কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে টাকা দিয়ে চালাতাম। এখন সবাই চালু করেছে বলে আমারটাও চালু করেছি।’ অবৈধ করাত কল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন,বনবিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ম্যানেজ করেই আমরা অবৈধ করাতকল চালিয়ে যাচ্ছি। টাঙ্গাইল বনবিভাগের হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমেন খান অস্বীকার করে বলেন, ‘অবৈধ করাতকল মালিকদের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।’ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ আ’লীগে বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার জানামতে, এ অ-কাজের সঙ্গে আমাদের দলের কোনো নেতা-কর্মীই জড়িত নয়। কেউ থেকে থাকলে তার দায় আ’লীগ নিবে না।’ সখিপুর ইউএনও ও উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসব অবৈধ করাতকলো উচ্ছেদে শিগগিরই আবার অভিযান চালানো হবে।’ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা টাঙ্গাইল(ডিএফও) মো. মাসুদ রানা বলেন, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে-যেকোন মুহূর্তে অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।