Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মঙ্গলের চাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে বাঁচল নাসার স্যাটেলাইট

প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ৬ মার্চ, ২০১৭

ইনকিলাব ডেস্ক : আরেকটা গাইসাল হয়ে যেতে পারতো লাল গ্রহের অচেনা মুলুকে! বড়সড় অ্যাক্সিডেন্ট ঘটতে যাচ্ছিল মঙ্গলে! হতে পারত বড়সড় রক্তপাত! কেঁপে উঠতে চলেছিল গোটা মঙ্গল-এলাকায়। ঘোর অমঙ্গল ঘটতে চলেছিল এই ব্রহ্মান্ডে আমাদের পড়শি গ্রহ মঙ্গলের চাঁদ ফোবস-এর! ভেঙে যেতে পারতো নাসার মহাকাশযান মাভেন! হঠাৎ করে মঙ্গলের চত্বরে ঢুকে পড়া এক অজানা, অচেনা গ্রহাণুর আচমকা আঘাত থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেল পৃথিবীও।
১০ ফুট লম্বা ওই গ্রহাণুটি সম্পর্কে এখনও তেমন কিছুই জানা নেই বিজ্ঞানীদের। শুক্রবার গভীর রাতের ঘটনা, মহাকাশের মঙ্গল-এলাকায়। নাসা জানিয়েছে, মাত্র ৭ সেকেন্ডের এদিক ওদিক হলেই মঙ্গলের কক্ষপথে ঘূর্ণয়মান নাসার মহাকাশযান মাভেন-এর সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগত মঙ্গলের চাঁদ ফোবস-এর। তাতে নাসার মহাকাশযানটি ভেঙে যেত। আর তার টুকরাগুলো মহাকাশে ভেসে বেড়াত কোটি কোটি বছর ধরে। আর যে কারণে পাখির ধাক্কায় বিমানের ক্ষতি হয় বেশি, সেই একই কারণে অনেক অনেক বেশি ক্ষতি হত মঙ্গলের চাঁদ ফোবস-এর। মঙ্গলের দিকে চোখ রেখে লাল গ্রহকে পাক মারার সময় আগে থেকে কেউ কাউকে দেখতে পায়নি। মঙ্গলকে পাক মারতে মারতে যে-রুটে আসার কথা তার চাঁদের, সেই রুটেই আসছিল ফোবস। তার আবর্তনের গতিতেও ঘটেনি কোনও রদবদল। কিন্তু লাল গ্রহকে পাক মারতে মারতে অঙ্কের হিসাবে একটু ভুলচুক হয়ে গিয়েছিল নাসার মহাকাশযান মাভেন-এর কম্পিউটার আর পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের অভ্যন্তরীণ ও রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমে। ভাগ্যিস, মহাকাশে সময় আমাদের থেকে এগিয়ে থাকে অনেক। তাই ৬ মার্চ, অর্থাৎ আজ সোমবার যে বড় ধরনের মহাকাশ-দুর্ঘটনাটি ঘটতে চলেছিল মঙ্গলের রাজ্যে, তার হাত থেকে রেহাই পেল নাসার মহাকাশযান মাভেন আর মঙ্গলের চাঁদ ফোবস।
শুক্রবার ৩ মার্চ পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞানীরা হিসেব করে দেখেন, মঙ্গলে গÐগোল। ভয়ঙ্কর মহাকাশ-দুর্ঘটনার মুখে পড়তে চলেছে মাভেন আর ফোবস। একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগতে চলেছে পার্থিব প্রতিনিধির সঙ্গে মহাজাগতিক বস্তুর। তাতে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যেত ৬৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচে বানানো নাসার মহাকাশযানটির। নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়, রুট বদলাতে হবে। গতি বাড়িয়ে দিতে হবে মাভেন-এর। তাই সঙ্গে সঙ্গে মাভেন-এর গতিবেগ বাড়িয়ে দেয়া হয় সেকেন্ডে প্রায় আধ মিটার। ওই গতিবেগ বাড়ানোর ফলে সোমবার মঙ্গলের চাঁদ ফোবস-এর থেকে মাত্র আড়াই মিনিটের (মহাকাশ দূরত্ব) দূরত্বে থাকবে নাসার মহাকাশযান মাভেন। মহাকাশযানের গতিবেগ না বাড়ানো হলে দুটির মধ্যে দূরত্ব থাকতো সাকুল্যে ৭ সেকেন্ডের। ফলে ফোবস-এর জোরালো অভিকর্য বলের টান হুশ করে তার দিকে টেনে নিতে পারত মাভেন-কে। আর তাকে আছড়ে ফেলতে পারতো মঙ্গলের চাঁদের মাটিতে। এই মুহূর্তে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার মিলিয়ে নাসা, ইসরো ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মোট ৬টি মহাকাশযান রয়েছে মঙ্গলের পাড়ায়। সূত্র : আনন্দবাজার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ