Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭৫ বছরের ইতিহাস ভেঙ্গে ইউরোপে উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থান আতঙ্ক

প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৯:৫১ পিএম, ১ মার্চ, ২০১৭

ইনকিলাব ডেস্ক: গত ৭৫ বছর ধরে পশ্চিমা দেশগুলো সহযোগিতা ও আন্তঃসম্পর্কের ভিত্তিতে পথ চলে আসছে। প্রতিটি দেশ একে অপরের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো ভাগ করে নিয়েছে। এই ইতিহাস ও সময়কে বিশ্বায়ন বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি রাজনৈতিক হাওয়ার দিক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন এই যুগে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে উগ্র জাতীয়তাবাদ। যাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ইউরোপের নিরাপত্তা ও একাত্মতার হুমকি বলে মনে করছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ বার্তা বহন করেছেন। আরো বেশি জাতীয়তাবাদি, সংরক্ষণবাদীও ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ ¯েøাগান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার ক্যাম্পেইনে মুসলিম এবং মেক্সিকানদের সমালোচনা করা ছাড়াও অভিবাসন এবং মুক্ত বাণিজ্যের বিরোধিতা করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্সিতে জাতীয়তাবাদ মূলত নৃ-জাতীয়তাবাদে পরিণত হয়েছে। ট্রাম্পের বিস্ময়কর নির্বাচনের পর ইউরোপ আরো কয়েকটি নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। যেখানে আছেন সব উগ্র-জাতীয়তাবাদের ধারকগণ। নেদারল্যান্ডে মার্চে, ফ্রান্সে এপ্রিল এবং মে’তে এবং জার্মানিতে সেপ্টেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উগ্র-জাতীয়তাবাদের ধারকগণ এই নির্বাচনগুলোতে জয়ের তীব্র প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের জয় তাদের কাছে এক নতুন আশার আলো। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদপ্রার্থী ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টির নেতা মেরিনি লি পেন বিশ্বায়ন ও অভিবাসনবিরোধী নীতিকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। লি পেন এবং তার বাবা জেন মেইরি টুইটারে ট্রাম্পের জয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে নেদারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, এবং গ্রীসের ন্যাশনালির্স্ট পার্টির নেতারাও ট্রাম্পের জয়কে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন। মেরিনি ফ্রান্সকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। মেরিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ব্রেক্সিটের পর ফ্রেক্সিটের হাওয়া বইতে শুরু করবে। মেরিনি ইতোমধ্যে পুলে এগিয়ে আছেন এবং তার বিরোধীদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে। জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করা হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্মের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বার্ট বোনিকোস্কি বলেন, ট্রাম্পের নির্বাচন এবং ইইউ থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়া জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠিগুলোকে উৎসাহিত করেছে। ডানপন্থী জাতিয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো এত বছর ধরে যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই দুইটি ঘটনা তাদের জন্য সবচাইতে বড় জয়। তারা এটি দেখিয়েছেন যে বেশিরভাগ মানুষ যা অসম্ভব বলে মনে করে তা আসলে সম্ভব হয়।’ তিনি আরো বলেন, ডান-পন্থীদের জয় নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স এবং জার্মানির সীমান্তে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এত বছর ধরে গণতান্ত্রিক নীতি, বিশ্বাস ভাগাভাগি করে আসা ঐতিহ্যের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হবে। বোনিকোস্কি বলেন, এটি ভৌগোলিক চিন্তাভাবনারও পরিবর্তন ঘটাবে। যা আগে ঘটেনি সেই সব ঝুঁকির কারণ হবে এই নির্বাচনগুলোর ফলাফল। এরজন্য প্রতিটি দেশে উগ্র-জাতীয়তাবাদী ধারণার প্রেসিডেন্টের প্রয়োজন নেই। দুইজনই যথেষ্ট, এমনকি ক্ষমতাশালী একজন নেতাও এই ঝুুঁকি ডেকে আনতে পারেন। সিইএসের প্রফেসর গ্রেজজরর্গ ইকরেইত বলেন, জার্মানিতে অ্যাঙ্গোলা মার্কেল জিতলে হয়তো বিশ্বায়নের ধারণার নেতারা একসঙ্গে লড়বেন কিন্তু যদি তিনি হেরে যান তাহলে ইইউ আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। ইউরোপ এখন টার্নিং জোনে অবস্থান করছে। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক, রাশিয়া, চীন ও তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্ক দোলদোলায়মান। পূর্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শক্তিশালী ছিল তাই তারা ইইউভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের যে কোন স্থানে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারত কিন্তু এখন এটি নিজের অস্তিত্ব রক্ষার সম্মুখীন। হার্ভাড গেজেট।



 

Show all comments
  • মামুন খান ২ মার্চ, ২০১৭, ১২:১৮ পিএম says : 0
    এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ