মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস পূর্তিতে ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন সংগঠন ও গ্রæপ পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। নিউইয়র্কসহ ৪৬ শহরে একযোগে বিক্ষোভ করেছে আমেরিকানরা। রাজপথের এ বিক্ষোভে অংশ নেয় লাখো মার্কিনি। নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে প্রধান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী অনেকের হাতেই ছিল ট্রাম্পকে অভিশংসনের পোস্টার। অর্থাৎ দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক এক মাসের মাথায়ই এই প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীরা। খবরে বলা হয়, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, মিয়ামি বিচ, শিকাগো, সল্টলেক সিটি, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে অল্প সময়ের জন্য আটক করা হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ট্রাম্প মার্কিন চেতনা আর মূল্যবোধের পরিপন্থী কর্মকাÐ করছেন। নট মাই প্রেসিডেন্ট, রেসিস্ট ট্রাম্প লেখা ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানান। গত সোমবার ছিল প্রেসিডেন্ট’স ডে। গত মাসের ২০ তারিখে শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও অনাস্থা জানাতে এই দিনটিকেই বেছে নেন বিক্ষোভকারীরা। নট মাই প্রেসিডেন্ট’স ডে শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য সামাজিক, মানবাধিকার সংগঠন এবং অভিবাসী অধিকার রক্ষা আন্দোলনে যুক্ত কর্মীরা। বিভিন্ন শহরে রাস্তায় তাদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। নিউ ইয়র্কে নট মাই প্রেসিডেন্ট শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিউ ইয়র্ক সিটির প্রধান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয় ম্যানহটনে ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে। স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীও যোগ দেয় বিক্ষোভে। নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট বলে উল্লেখ করেন বিক্ষোভকারীরা। ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সামনেও বিক্ষোভকারীরা শ্লোগান দেন। এর আগে নিউ ইয়র্ক সিটির টাইমস স্কোয়ারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে টু-ডে আই অ্যাম মুসলিম টু ব্যানারে আরেকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানে বিক্ষোভকারীরা শ্লোগান দেন, এভরি ডে আই অ্যাম মুসলিম, টুডে উই আর অল মুসলিমস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষিত এ কর্মসূচিতে সব ধর্ম-বর্ণ আর জাতিগোষ্ঠীর মার্কিনিরা জড়ো হয়ে মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। শিকাগো, সল্টলেক সিটি, আটলান্টা, টেক্সাস, ওয়াশিংটন ডিসি, ফিলাডেলফিয়াতেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। অনেক জায়গায় ঘোষণা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদ-সমাবেশ। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তারা ট্রাম্পকে ইসলাম-বিদ্বেষী বলে উল্লেখ করে তার অভিসংশন দাবি করেন।
ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে ছুটি কাটিয়ে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে মিয়ামি বিমানবন্দরের কাছে কয়েকশ’ মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ট্রাম্প। অনেক শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হলেও অরেগন অঙ্গরাজ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। ট্রাম্পবিরোধী শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে অরেগনের পোর্টল্যান্ড শহর। সেখানকার ফেডারেল ভবনের সামনে মিছিলের অনুমোদন না পেলেও তা উপেক্ষা করে ভিড় জমাতে থাকে একদল বিক্ষোভকারী। এক পর্যায়ে পুলিশ মারমুখী হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে এক পর্যায়ে শুরু হয় পুলিশের লাঠিপেটা। সংঘর্ষে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। ৩৫ জনকে আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি ছিল না। এর আগে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র বিল ডি বøাসিয়ো বলেন, এই শহরের পুলিশ বিভাগে ৯০০ মুসলিম অফিসার রয়েছেন, তারা সবাই অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন সব অধিবাসীর নিরাপত্তায়। অর্থাৎ আমাদের সবার নিরাপত্তায় তারা কাজ করছেন সততা আর আন্তরিকতার সঙ্গে। তাছাড়া এই দেশটি গড়ে উঠেছে নিজ দেশে বহুবিধ দমন-পীড়নে অতিষ্ঠ লোকজনের মাধ্যমে, ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে প্রাণনাশের আশঙ্কায় পালিয়ে আসা মানুষজনের আন্তরিক আগ্রহে। আমাদের এই দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সব মানুষকে শ্রদ্ধা জানানোর অভিপ্রায়ে এবং সেই নীতি ও আদর্শকে সুরক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা প্রতিটি জেনারেশনেই গণতন্ত্র সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর ছিলাম, এখনো আছি। এক্ষণে একটি কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, যদি ধর্ম বা জাতীয়তা অথবা বর্ণের কারণে কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে ধরে নিতে হবে যে, আমরা সবাই আক্রান্ত হয়েছি এবং এই বার্তা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে নাগরিক অধিকার হরণকারীদের বিরুদ্ধে শিকাগো ট্রিবিউন, ওয়াশিংটন পোস্ট, এএফপি, এপি, নিউইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।