Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাণিজ্যযুদ্ধে লাভ-ক্ষতি নিয়ে হিসাব-নিকাশ শুরু

| প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধে কারা লাভবান অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এরই মধ্যে সে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। এ তালিকায় নাইকি, জিএম ও ফোর্ডের মতো বহুজাতিক মার্কিন প্রতিষ্ঠান যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে চীনের লেনোভোসহ কিছু প্রযুক্তি কোম্পানি। তবে বাণিজ্যযুদ্ধে চীনের চেয়ে মার্কিন ইকুইটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন মার্কিন বহুজাতিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মরগান স্ট্যানলির হংকংয়ের স্ট্র্যাটেজিস্ট জোনাথন মরগান গারনার। তিনি বলেন, এমএসসিআই যুক্তরাষ্ট্র সূচকের প্রায় ১০ শতাংশ কোম্পানির এক-দশমাংশ পণ্য বিক্রি হয় চীনে। অন্যদিকে ২ শতাংশের কম চীনা কোম্পানির ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পরস্পরকে বর্জন না করলে চীনের জ্বালানি, বিনোদন, প্রযুক্তি ও পর্যটন কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। অন্যদিকে মার্কিন টেলিকমিউনিকেশনস ও সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসা সুবিধা পাবে বলে গার্নার জানিয়েছেন।
সুইস বহুজাতিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট সুইস গ্রæপের মতে, সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীন ব্যাপক হারে মার্কিন পণ্য বর্জন শুরু করলে বেশকিছু বিশ্বখ্যাত কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন বহুজাতিক জুতা, পোশাক প্রস্তুত ও পরিবেশক কোম্পানি নাইকি, গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেনারেল মোটরস, ফোর্ড মোটর এবং মার্কিন বিলাসবহুল গহনা বিক্রেতা টিফানি অ্যান্ড কো.। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চীনা ইলেকট্রনিকস রফতানিকারকদের সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে ফেলবে। এর মধ্যে রয়েছে চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি লেনোভো গ্রæপ লিমিটেড ও টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি জেডটিই করপোরেশন। তবে স্থানীয় প্রতিযোগীগুলোর এ থেকে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। হংকংভিত্তিক বোকম ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিংসের বিশ্লেষক হাও হংয়ের মতে, দুই শীর্ষ অর্থনীতির সম্ভাব্য বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব শুধু দেশ দুটির ব্যবসায়িক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর প্রভাব আরো বিস্তৃত হবে। গার্নার আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে ওপরের ওপর ৪৫ শতাংশ শুল্কারোপ করলে এমএসসিআই চীনা সূচক বর্তমান স্তর থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। চলতি বছর সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ৪ হাজার ৪০০ পর্যন্ত উঠতে পারে বলে জানিয়েছিলেন গার্নার। ২০ জানুয়ারি সূচক দাঁড়ায় ৩ হাজার ১২৩। পুরোদস্তুর বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হলে সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স বর্তমান স্তর থেকে ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দ্রæত ২ হাজার ৮০০-এর নিচে যাবে বলে মনে করছেন বোকমের বিশ্লেষক হং। ক্রেডিট সুইসের গেøাবাল ইকুইটি রিসার্চের প্রধান রেটো হেসের মতে, বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তাপে চীনের দিক থেকে ভোক্তা ইলেকট্রনিকস, পোশাক ও গৃহস্থালি সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হবে। মরগান স্ট্যানলির হিসাবে, ওয়্যারলেস প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গোয়েরটেক ও পোশাক প্রস্তুতকারক রেজিনা মিরাকেল ইন্টান্যাশনাল হোল্ডিংস লিমিটেডসহ এমএসসিআই ও হংকং সূচকের অধিকাংশ কোম্পানির ৭০ শতাংশের বেশি রাজস্ব অর্জিত হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন্যদিকে এমএসসিআই যুক্তরাষ্ট্র সূচকের সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক এমবারেলা ইনকরপোরেশন ও টেক্সাস ইনস্টুমেন্টস ইনকরপোরেশনের সবচেয়ে বেশি আয় হয় চীন থেকে। চীনা ভোক্তারা মার্কিন ব্র্যান্ড বর্জন করলে গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডি ও ক্রীড়া পোশাক প্রস্তুতকারক আন্তা স্পোর্টস প্রডাক্টস লিমিটেডের মতো স্থানীয় উৎপাদকরা লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন রেটো হেস। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নয় এমন বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো তৃতীয় বিকল্প হিসেবে বাজার অংশীদারিত্ব অর্জন করতে পারে। হেস বলেন, চীনা ভোক্তারা মার্কিন গাড়ির পরিবর্তে জার্মান গাড়ি কিনতে পারে অথবা নাইকির বদলে হয়তো এডিডাসের শার্ট কিনবে। বøুমবার্গ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ